রিকশাচালককে জুতাপেটা করা কর্মকর্তা বরখাস্ত

প্রকাশিতঃ 2:22 pm | March 04, 2025

রাজশাহী প্রতিবেদক, কালের আলো:

রিকশাচালককে জুতাপেটা করা রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমাজসেবা অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান।

তিনি জানান, সোমবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-৫ (প্রশাসন ও শৃঙ্খলা) শাখার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ওই প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন সচিব ড. মো. মহিউদ্দিন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রিকশাচালককে নির্দয়ভাবে প্রহার করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ধরনের আচরণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী হিসেবে তার এ ধরনের আচরণ অশোভনীয়, অসংগত, চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। জাহিদ হাসান বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

ঘটনাটি গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরের হলেও গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এর একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কোয়ার্টারের সামনে জাহিদ হাসান এক রিকশাচালককে পায়ের জুতা খুলে পেটাচ্ছেন। এরপর প্রাইভেটকারের ব্যাক ডালা থেকে লাঠি বের করে চালকের শরীরে ও রিকশায় আঘাত করছেন। এ সময় অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতেও শোনা যায় তাকে।

ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শনিবার (১ মার্চ) রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এক চিঠিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

সেই সঙ্গে পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। আর তদন্ত শুরু হওয়ার তিনদিনের মধ্যেই জাহিদ হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করল মন্ত্রণালয়।

এদিকে রিকশাচালককে জুতাপেটা করায় সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হলে সোমবার (৩ মার্চ) পর্যন্ত দুই দিন ছুটি নেন জাহিদ হাসান রাসেল। এর মধ্যে রোববার (২ মার্চ) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন তিনি।

সেখানে এ ঘটনার জন্য তিনি অনুতপ্ত বলে উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে এর জন্য নিঃশর্ত ক্ষমাও প্রার্থনা করেন এই কর্মকর্তা। তিনি লেখেন,‘এমন ঘটনা কি আর কারও জীবনে ঘটেনি? আমি অন্যায় করেছি। কিন্তু এত বড় শাস্তি কী আমার পাওনা ছিল?’

কালের আলো/এমডিএইচ