দখল-দূষণকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য করতে আরপিও সংশোধন চায় এইচআরপিবি

প্রকাশিতঃ 4:31 pm | March 05, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:

নদী দূষণ ও দখলকারীদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য করতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এইচআরপিবি সভাপতির এই দাবির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনও একমত বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (৫ মার্চ) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন পুরো কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের যত নদ-নদী রয়েছে এবং পরিবেশ রক্ষার্থে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই করছি। এ আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আপিল বিভাগ একটি নির্দেশনা দিয়েছে যে নদী দখল ও দূষণকারী যারা থাকবে তারা নির্বাচনে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে, কিন্তু সেটা আইনে নেই।

তিনি বলেন, সামনে যেহেতু জাতীয় সংসদ নির্বাচন রয়েছে, আমাদের গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে যদি কোনো বিধান যুক্ত না থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশন সেখানে কাউকে অযোগ্য করতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করে একটি বিধান এখানে সংযোজন করা উচিত, যাতে দূষণ ও দখলকারী যারা হবে তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য হন। এখানে কমিশনও আমাদের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন।

এইচআরপিবির প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য থেকে আরও জানা যায়, আমরা আদালতের মাধ্যমে অনেক নির্দেশনা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। তা সত্ত্বেও পরিবেশদূষণ ও নদী দখলকারীদের কর্মকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে এইচআরপিবির পক্ষ থেকে ১৩৯৮৯/২০১৬ রিট পিটিশন দায়ের করার পর শুনানি শেষে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ নিম্নোক্ত রায় দেন।

১৫, যেহেতু পরিবেশ, জলবায়ু, জলাভূমি, তথা সমুদ্র, সমুদ্র সৈকত, নদ-নদী, নদ-নদীর পাড়, খাল-বিল, হাওর-বাওর, নালা, ঝিল, ঝিরি এবং সব উন্মুক্ত জলাভূমি, পাহাড়-পর্বত, বন, বন্যপ্রাণী এবং বাতাস যেহেতু পাবলিক ট্রাস্ট সম্পত্তি তথা জনগণের ন্যাস সম্পত্তি তথা জাতীয় সম্পত্তি। সেহেতু উক্ত সম্পত্তি দখলকারী এবং দূষণকারী হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বাংলাদেশের সব ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে আগামী ৬ মাসের মধ্যে অত্র বিভাগকে হলফনামা সম্পাদনের মাধ্যমে অবহিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ প্রদান করা হল।

উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হলে মহামান্য আপিল বিভাগ নিম্নোক্ত রায় দেন।  উক্ত সম্পত্তি দখলকারী এবং দূষণকারী হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বাংলাদেশের সকল ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে আগামী ৬ মাসের মধ্যে অত্র বিভাগকে হলফনামা সম্পাদনের মাধ্যমে অবহিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ প্রদান করা হল।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, যেহেতু প্রভাবশালী ও বিত্তশালীরা বর্তমানে বিভিন্ন স্তরে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, সুতরাং নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যদি পরিবেশ দূষণ ও নদী দখলকারীদের অযোগ্য ঘোষণা করার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, তবে আমরা মনে করি পরিবেশ সংরক্ষণ সহজতর হবে। আপিল বিভাগের পরামর্শ/মতামত অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পরামর্শ/মতামতের আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করে পরিবেশ দূষণ ও নদী দখলকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার আইনি বিধান সংযোজন করার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

কালের আলো/এসএকে