ছিনতাইকারী-চাঁদাবাজের দৌরাত্ম্য কমানো বড় চ্যালেঞ্জ: সিএমপি কমিশনার

প্রকাশিতঃ 4:25 pm | March 09, 2025

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক, কালের আলো: 

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন শপিং মল ও বাজারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। এ সময় তিনি জানিয়েছেন, ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য কমানোই পুলিশের বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে।

রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে নগরীর নিউমার্কেটের বিপণিবিতান, তামাকুমন্ডী লেইন, জহুর হকার্স ও টেরিবাজারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন তিনি।

এ সময় তিনি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও দোকান মালিকদের সঙ্গে বাজারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। ব্যবসায়ীদের কাউকে চাঁদা দিতে হচ্ছে কি না সে বিষয়েও জানতে চান।

পরিদর্শন শেষে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ রোজার পর থেকে মার্কেটগুলো আরও সরগরম হবে বলে আমি আশাবাদী। সাধারণ মানুষ যেন উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা রমজানের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি। আমি আজ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, দোকান মালিক সবার সঙ্গে কথা বলেছি। ঘুরে ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছি।’

‘সবাই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সন্তুষ্ট। কিন্তু এখানে আমাদের একটি উদ্বেগ আছে। সেটা হচ্ছে ছিনতাইকারী। ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য কমানো ও নির্মূল করার জন্য আমাদের পুলিশ কর্মকর্তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমাদের প্রত্যেক থানার ওসিরা সেহেরির পরে রাস্তায় থাকেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত দেখেছি ৫০–৬০ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। আরও হবে। ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য কমানোই এখন আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জটি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত। ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। যারা গ্রেপ্তার হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা ছয়মাস বা একবছর আগে জামিন পেয়ে বের হতে না পারে।’

মার্কেটের শৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মার্কেটের শৃঙ্খলা ভালো। তবে দোকানের মালিকরা সাধারণত হকারদের দৌরাত্ম্যের কথা বলে থাকেন। হকারদের উপস্থিতিও তো একটি বাস্তবতা। নিম্ন-মধ্যবিত মানুষের কাছে তাদের চাহিদা আছে। আমরা হকারদের বলেছি যাতে বড় বড় মার্কেটের যে এক্সেস রোড তারা যাতে সেখানে না বসে। এক্সেস রোড যাতে ক্লিয়ার রাখে।’

ঈদ সন্নিকটে আসলেই মার্কেটগুলোতে ভীড় বেশি হয়। এতে মার্কেটের আশেপাশে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে পুলিশের কোনো প্ল্যান আছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমরা জানি, ১৫ রোজার পরে প্রত্যেক শপিং কমপ্লেক্সে জনসমাগম অনেক বৃদ্ধি পাবে। আমরা চাইও সেটা। মানুষ নিরাপদ বোধ করলে আনন্দ উদযাপন করে। যখন মার্কেটে ভীড় বাড়বে তখন আমরা বুঝবো মানুষ নিরাপদ বোধ করছে।’

‘আবার জনসমাগম যখন বেড়ে যাবে তখন অপরাধীরাও সুযোগ খুঁজবে। ছিনতাইকারী, পকেটমার বেড়ে যাবে। ট্রাফিকেরও একটি সমস্যা হবে। সে লক্ষ্যে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পুলিশের ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে। সিএমপি কি এ ধরণের চিন্তা করছে কি না? – এমন প্রশ্নে হাসিব আজিজ বলেন, ‘আমাদের এ ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা আছে বলে মনে করি। তবে একটি কথা পরিষ্কার, কমিউনিটি ইনভ্লভমেন্ট ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেয়া প্রায় অসম্ভব। সে লক্ষ্যে আমি যোগ দেয়ার পরেই এখানে সিটিজেন ফোরাম গঠন করেছি। আমাদের প্রত্যেক থানায় সিটিজেন ফোরামের থানা কমিটি আছে। মহানগর কমিটি আছে। তাদের বলেছি, ভলিন্টিয়ার বাহিনী করতে। যেসব জায়গায় অপরাধ বেশি হয়, ছিনতাই-চাঁদাবাজি বেশি সেসব জায়গায় ভলিন্টিয়ার ফোর্স করার কথা বলেছি। সব থানায় সেগুলো হয়েছে।’

এ সময় সিএমপির দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা ও কোতো‍য়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এমডিএইচ