ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্ত করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রকাশিতঃ 4:29 pm | March 09, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী৷ তিনি বলেন, যেসব অপরাধের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যাবে, সেগুলো সংগ্রহ করে ফ্যাক্ট চেকিং করে অপরাধীদের শনাক্তকরণ করা হবে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ রোববার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রমজানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রায় শতাধিক তল্লাশিচৌকি বা চেকপোস্ট বসানো হয়েছে ও অপরাধপ্রবণ এলাকায় টহল সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও বিজিবি’র সমন্বয়ে যৌথবাহিনী টার্গেট এলাকাসমূহে জোরদার অপারেশন পরিচালনা করছে। এসব চেকপোস্ট এবং টহল দলের রাত্রিকালীন কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরকে নিয়মিত দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রমজানে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই প্রতিরোধ এবং বিভিন্ন বিপণী বিতানে যাতায়াতকারী ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। রমজান ও আসন্ন ঈদে সাধারণ জনগণের বাড়িযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে মহাসড়কসমূহে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীর৷ আপনারা দেখেছেন, গত শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সদস্যরা বায়তুল মোকাররম এলাকায় একটি মিছিল বের করে। পরে পুলিশের বাধার মুখে সেটি পণ্ড হয়ে যায় ও তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সরকার এ বিষয়েও ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। কোনোভাবেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনকে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ধর্ষকদের কোনো স্থান হবে না। মাগুরার ঘটনায় যারা অভিযুক্ত, তাদের সবাইকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করবে সরকার। একইভাবে যদি দেশের কোথাও নারীর প্রতি কোনো সহিংসতা বা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে, তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধর্ষণসহ সব ধরনের নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এ যাবৎ নারীর প্রতি যত সহিংসতা হয়েছে, সেগুলোর তালিকা করে দ্রুত তদন্ত সম্পন্নপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছি। সম্প্রতি ঘটে যাওযা ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে এবং কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। নারীরা নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ঘরে-বাইরে দায়িত্ব পালন করবেন। এতে যারা তাদের বাধা দিতে আসবে, সহিংসতা করতে আসবে, তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এক এসআইকে কিছু স্থানীয় মাদকসেবী, দুষ্কৃতিকারী ও ছিনতাইকারীরা মব সৃষ্টি করে মারধর করেছে, যাদেরকে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ-বিষয়ে ছাত্র-জনতাসহ সবাইকে অনুরোধ জানাই, আপনারা কেউ আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিবেন না। কোনো ঘটনা ঘটলে নিকটস্থ থানা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে অবহিত করুন। তারা আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ গ্রহণ করবে।
কালের আলো/এসএকে