সিরিয়ায় সহিংসতায় সহস্রাধিক নিহত, ঐক্য চান প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিতঃ 1:29 am | March 10, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

উপকূলীয় অঞ্চলে সহিংসতায় আলাউই সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ নিহত হওয়ার পর সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে যে তারা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ঐক্য চায়।

যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (এসওএইচআর) এর তথ্য অনুসারে, সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী, মিত্র বাহিনী এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সমর্থকদের মধ্যে দুই দিনের সংঘর্ষে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। সিরিয়ার ১৪ বছর ধরে চলমান সংঘাতের সবচেয়ে ভয়াবহ পর্বগুলোর একটি এটি।

এসওএইচআর জানিয়েছে, দেশটির লাতাকিয়া, তারতুস এবং হামা গভর্নরেটের ২০ টিরও বেশি স্থানে সহিংসতায় মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। নিহত ৭৪৫ জন বেসামরিক নাগরিকের বেশিরভাগই খুব কাছ থেকে করা গুলিতে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়া সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ জন সদস্য এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে যুক্ত ১৪৮ জন জঙ্গিও নিহত হয়েছেন।

কয়েক দশকের পারিবারিক শাসনের পর গত ডিসেম্বরে আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন। এর মাধ্যমে দেশটিতে চলা ব্যাপক দমন-পীড়ন এবং ধ্বংসাত্মক গৃহযুদ্ধের অবসান হবে বলে আশা করা হচ্ছিল।

অবজারভেটরি উল্লেখ করেছে, নিহত বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক দেশটির ধর্মীয় সংখ্যালঘু আলাউই সম্প্রদায়ের। আসাদ নিজেও এই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

অবজারভেটরির এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, নারী ও শিশুসহ বেসামরিক আলাউই নাগরিকদের কার্যত ‘মৃত্যুদণ্ড’ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং তাদের ‘ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি লুণ্ঠন করা হয়েছে’।

সিরিয়ার সরকারি বার্তাসংস্থা সানা জানিয়েছে, লাতাকিয়া, জাবলেহ এবং বানিয়াসে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হাসান আব্দুল গনি বলেছেন, আসাদের অনুগতদের দ্বারা আক্রমণের শিকার এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী ‘পুনরায় নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠা করেছে। কোনো বাড়ির কাছে যাওয়া বা তাদের বাড়ির ভিতরে কাউকে আক্রমণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

লাতাকিয়া প্রদেশের নিরাপত্তা পরিচালক মুস্তাফা কেনিফতি বলেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহ বা সিরিয়ার জনগণের কোনো অংশকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার অনুমতি দেওয়া হবে না। বার্তাসংস্থা সানাকে তিনি বলেন, আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই প্রতিশোধমূলক কোনো কাজ সহ্য করবো না।

সেনা মোতায়েনের পর এই অঞ্চলে ‘তুলনামূলক শান্তি ফিরে এসেছে’ বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি।

শান্তি ও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা রোববার জাতীয় ঐক্য ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। দামেস্কের মাজ্জাহ শহরে তার শৈশবের পাড়ায় অবস্থিত একটি মসজিদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় শারা বলেন, সিরিয়ায় বর্তমানে যা ঘটছে তা (আমাদের) প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যতটা সম্ভব জাতীয় ঐক্য এবং নাগরিক শান্তি রক্ষা করতে হবে। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমরা এই দেশে একসঙ্গে বসবাস করতে সক্ষম হব। যতক্ষণ মসজিদগুলো তাদের সন্তানদের নৈতিকতা এবং জনগণকে ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার শেখাবে, ততক্ষণ সিরিয়ার জন্য কোনো ভয় নেই।

কালের আলো/এসএকে