নিজেদের মধ্যে দলাদলি ভালো কিছু বয়ে আনবে না
প্রকাশিতঃ 8:25 am | March 11, 2025

টাঙ্গাইল প্রতিবেদক, কালের আলো:
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু বলেছেন, যতদিন বেঁচে থাকব সাধারণ মানুষের পাশে থাকব, মানুষের সেবা করব। আমার জন্য আপনারা দোয়া করেছেন, এ জন্য আল্লাহর রহমতে মুক্তি পেয়েছি। কোনোদিন অন্যায় করিনি আর অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি। আপনারা অন্যায়ভাবে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করবেন না। সততার সঙ্গে ব্যবসা করবেন। অন্যায় বা দুর্নীতি করা যাবে না। নিজেদের মধ্যে দলাদলি ভালো না। ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
তিনি বলেন, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমি একটা মৃত মানুষ, জীবিত অবস্থায় ফিরে এসেছি। আমার জীবন তো শেষ হয়ে যেত। এখন শেখ হাসিনা থাকলে আমি আর কথা বলতে পারতাম না। যেহেতু মুক্ত হয়েছি জালিমের কারাগার থেকে সেই জালিমের কারাগারে রিমান্ডের নামে অত্যাচার, জুলম, নির্যাতন যেভাবে আমি ভোগ করেছি সেইভাবে আপনারাও বাইরে থেকে অনেকে ভোগ করেছেন।
সোমবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, সে সময় এ দেশে কথা বলার অধিকার ছিল না, নামাজ পড়ারও অধিকার অনেকের ছিল না। মানুষ তার বিপদের কথাটাও মানুষের কাছে বলতে পারতো না। একটা ভয়াবহ অস্থিরতার মধ্যে দেশ চলছিল। এই দেশকে হাসিনার হাত মুক্ত করেছে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা। তবুও ষড়যন্ত্র থেমে থাকে না। যেদিন স্বাধীন হয়েছে স্বাধীন হওয়ার পরের দিন থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী দেশ গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নত করা, সঙ্গে সঙ্গে বেকার সমস্যা সমাধান ও এর পাশাপাশি শিল্প বিপ্লবের ডাক দিলেন। একদিকে কৃষি উৎপাদন, আরেক দিকে শিল্প বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে শক্তিশালী অর্থনীতিতে দাঁড় করানোর জন্য চেষ্টা করলেন।
পিন্টু বলেন, এই দেশ যখন উন্নতি হবে, সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, বিশ্বের বুকে একটি নেতৃত্ব স্থানীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সময় চক্রান্তের পর চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রের পর ষড়যন্ত্র করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার পর এই দেশে কি হয়েছিল আপনারা জানেন। জিয়াউর রহমান এই দেশে গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন, সবাইকে নির্বাচন করার কথা বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে বিদেশ থেকে ফেরত এনেছিলেন।
টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, দীর্ঘ ১৭টি বছর এ দেশের মানুষ আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে। যার কারণে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সমস্ত সম্পদ লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের সম্পদ দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশকে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়েছে। আমি অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি। ভারতের দালালি করিনি। ভারতের কাছে বাংলাদেশকে বিক্রি করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের জালে লিপ্ত হয়নি। বর্তমানে চক্রান্ত হচ্ছে, ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
এ নেতা আরও বলেন, এ দেশে শুধু ছাত্ররা জীবন দেয়নি। রিকশাওয়ালা, শ্রমিক, এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ প্রাণ দিয়েছে। যারা প্রাণ দিয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। যারা প্রাণ দিয়েছে কী কারণে দিয়েছে? এ দেশের মানুষের ভোটাধিকারের জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ দিয়েছে।
এ সময় নিকরাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মণ্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলু, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান গিয়াসসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এর আগে উপজেলা ও আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা ইফতারে অংশ নেন।
কালের আলো/এসএকে