যমুনা অভিমুখে রওনা হওয়া শিক্ষকদের মিছিলে পুলিশের বাধা
প্রকাশিতঃ 3:44 pm | March 11, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবন যমুনার উদ্দেশ্য রওনা হওয়া নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বাধা দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে বাঁধা দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও লাঠিচার্জ করা হয়নি এবং কেউ আহত হননি।
সরেজমিনে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেশ কিছুদিন যাবৎ তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সকাল ১১টার মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা ছিল পুলিশের। কিন্তু সেই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেন এবং শিক্ষকরা মিলে যমুনার দিকে অগ্রসর হন।
আরও দেখা যায়, আগে থেকে কদম ফোয়ারা মোড়ে পুলিশের একটি জলকামান রাখা ছিল। প্রেসক্লাব থেকে কদম ফোয়ারার দিকে যেতে আগে থেকে অবস্থা নিয়েছিল পুলিশ। শিক্ষকরা কদম ফোয়ারার কাছাকাছি গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ মানববর্মণ তৈরি করে এবং বাঁশি বাজিয়ে তাদেরকে পিছু হটতে বাধ্য করে। পরে শিক্ষকরা আবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে অবস্থান নেন।
হোসনে আরা বেগম নামে একজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষকরা এখানে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন। সচিবালয়ের কিছু দুর্নীতিবাজ সচিবের কারণে আমাদের দাবি পূরণ হচ্ছে না। আগের শিক্ষা উপদেষ্টাকে সচিবরা ভুলভাল বুঝিয়েছে। এতে করে উপদেষ্টা কোনো কাজ করেননি। আমরা শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে অনেকবার দেখা করতে চেয়েছি। পরে উপদেষ্টার সহকারী সচিব আমাদের কথা শুনলেও, একমাস হয়ে গেছে কিন্তু কোনও কাজ করেননি।
তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে আমরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। প্রধান উপদেষ্টাকে পাঠানো স্মারকলিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের সচিবরা সেটি গোপন করেছেন। আমাদের স্মারকলিপি শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দেননি। পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমাদের স্মারকলিপির কথা শিক্ষা উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে। এরপরে শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের স্মারকলিপি দেখেছেন এবং আমাদের কাজ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। পরে আর কোনোদিন শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদেরকে ডাকেননি।
নন-এমপিও এই শিক্ষক বলেন, গতকালকে আমাদের শিক্ষকরা সচিবালয়ে যেতে চাইলে পুলিশ সেখানে বাঁধা দেয়। ওই সময় পুলিশ বলেছে, আজকে সকাল ১০-১১টার মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টাদের সঙ্গে আমাদের কথা বলিয়ে দেবেন। কিন্তু, এরকম কোনো কিছু করা হয়নি। সেজন্য আমরা র্যালি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যেতে চাইলে, কদম ফোয়ারার সামনে পুলিশ আমাদেরকে বাঁধা দেয়। এরপরে আমরা আবার প্রেসক্লাবের সামনে চলে আসি।
সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. দবিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি বছর এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত চার বছর কোনও আবেদন নেওয়া হয়নি। ২০২৫ সালে যদি আবেদন না নেওয়া হয় তাহলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে বিনা বেতনে কেউ চাকরি করতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের সামাজিক মর্যাদা ও সীমাহীন কষ্টের কথা চিন্তা করা দরকার। সেজন্য, এমপিও নীতিমালা ২০২১-এর সব শর্ত বাতিল করে সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দুঃখ দুর্দশার অবসান করতে হবে৷
কালের আলো/এসএকে