বসন্ত-ভ্রমণে পথিকের দৃষ্টি কাড়ে ভাঁটফুল
প্রকাশিতঃ 3:50 pm | March 11, 2025

ট্রাভেল ডেস্ক, কালের আলো:
প্রকৃতিতে এখন বসন্তকাল। রাস্তার ধারে, পথে-ঘাটে, বনে-বাদাড়ে অযত্ন-অবহেলায় জন্ম নিয়েছে একটি ফুল। যার নাম ভাঁটফুল। এই ফুলকে কেউ ভাঁটিফুল, ঘেটু ফুল বা বনজুঁই হিসেবে চেনেন। পথিকের বসন্তকে রঙিন এবং সুরভিত করতে যে ফুলের জুড়ি মেলা ভার; সেটি ফুল হলো ভাঁটফুল।
ভাঁটফুল ভারবিনাসিয়া পরিবারের অন্তর্গত গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ। বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার অঞ্চলে এ ফুলের আদি নিবাস। বৈজ্ঞানিক নাম হলো Clerondendron viscosum।
এ ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, ‘ভাঁট আঁশ শ্যাওড়ার বন/ বাতাসে কী কথা কয় বুঝি নাকো/ বুঝি নাকো চিল কেন কাঁদে/ পৃথিবীর কোনো পথে দেখি নাই আমি/ হায়, এমন বিজন।’ শুধু তা-ই নয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অনেকবার অনেক ভাবে এসেছে ভাঁটফুলের কথা।
বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে এ বুনোফুল ফোটে। তবে শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ই নয়, চৈত্র থেকে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত প্রায় সারাদেশেই ভাঁটফুলের সুবাস ও সৌন্দর্য আমাদের মাতিয়ে রাখে। বরং এটি একটি গ্রামবাংলার অতি পরিচিত ফুলের মাঝে একটি। ভ্রমণক্লান্ত পথিকের মনকে প্রফুল্ল করে তোলে।
শুধু যে এ ফুল সৌন্দর্য আর সুরভিত করে, তা কিন্তু নয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভাঁটফুল দিয়ে ভাঁটি পূজার আয়োজন করেন। এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। ফ্ল্যাভোনয়েড থাকার জন্য এটি ক্যানসার দমনে সহায়ক। এ ছাড়া কৃমি, চুলকানি, কোলেস্টেরল, ব্লাড সুগার ও উদরাময় প্রভৃতি রোগ নিরাময়ে এটি সাহায্য করে।
উপকারিতা যা-ই থাক, পথ চলতে চলতে পথের কিনারে এই ফুলের সলাজ হাসি মোহময় আবেশ তৈরি করে। গ্রামবাংলার চির চেনা পথে অভ্যর্থনায় নেচে ওঠে ভাঁটফুল। নুয়ে পড়ে পথিকের শুভ কামনায়। তাই কোথাও ঘুরতে গেলে অবশ্যই ফুলটিকে দেখতে ভুল করবেন না।
কালের আলো/এমএএইচএন