তিন ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশিতঃ 10:41 pm | March 12, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বেসরকারি খাতের মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবিসি ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (১২ মার্চ) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এই তথ্য জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক মুখপাত্র জানান, মেঘনা, এনআরবি, এনআরবিসি ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) নতুন বোর্ড গঠন করা হবে।

শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর ঋণে অনিয়ম ও আর্থিক খাতে কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ব্যাংকিং খাতের পুনর্গঠনে নানা উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ লক্ষ্যে গত বছরের আগস্ট থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠনের কাজ শুরু হয়। সেসময় ভেঙে দেওয়া হয় ইসলামি ব্যাংকের পর্ষদ। এরই ধারাবাহিকতায় ভাঙা হয় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), এক্সিম ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (এফএসআইবি) সহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদ।

সেসময় দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম নিয়ন্ত্রণাধীন ইসলামী ব্যাংকসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন বোর্ড গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার দ্বিতীয়বারের মতো অ্যাকশনে গেল আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ভাঙা হলো মেঘনা, এনআরবি, এনআরবিসি ব্যাংকের বোর্ড।

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আর্থিক খাতকে ঢেলে সাজাতে একগুচ্ছ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেন। এর মধ্যে বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের হাত থেকে রাহুমুক্ত করেন ইসলামী, এসআইবিএল, ফার্স্ট সিকিউরিটিসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক।

এ ছাড়া আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, কঠোর নজরদারির মাধ্যমে বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচার রোধ, মূল্যস্ফীতি কমাতে নীতি সুদহার বৃদ্ধিসহ আরও কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গত সাত মাসে। সাহসী পদক্ষেপে ব্যাংক খাত এরই মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে খুব শিগগির আরও ইতিবাচক ফল আসবে বলে আশাবাদী গভর্নর।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, সেটিও পালন করেননি ওই সময়ের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বরং দফায় দফায় তার ভুল নীতির খেসারত দিতে হয়েছে ব্যাংক খাতকে। এতে ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থাহীনতা বাড়ে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর ধরেই নানামুখী সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত। গত দুই বছরে এই সংকট আরো গভীর হয়েছে। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মাধ্যমে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ, ঋণের নামে ব্যাংক লুটপাট আর বিদেশে অর্থপাচার, লাগামহীন খেলাপি ঋণ, ব্যাংকে তীব্র তারল্য সংকট, ডলার ও রিজার্ভ সংকটে ব্যাংক খাতের ক্ষত আরও গভীর হয়েছে।

কালের আলো/এএএন