ধর্ষণ ও নির্যাতনকারীদের জনসম্মুখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি

প্রকাশিতঃ 4:30 pm | March 13, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:

মাগুরায় নির্যাতিত শিশুসহ সারাদেশে অসংখ্য নারী ও শিশু নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে নারী অধিকার আন্দোলন। এসময় নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনকারীদের জনসম্মুখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।

সরকারের প্ল্যানিং কমিশনের সাবেক ডিভিশন চিফ ও নারী অধিকার আন্দোলনের সভানেত্রী মমতাজ মান্নান বলেন, বিচারহীনতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রতা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার কারণে ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজগুলো দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ নারী ও কন্যাশিশুরা নিরাপদ নয়। নারী ও শিশু ধর্ষণের কারণে দেশবাসী মর্মাহত, সেইসাথে আমরাও মর্মাহত।

মমতাজ মান্নান বলেন, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত হয় ও দণ্ড দ্রুত কার্যকর করা হয়—সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আমরা জোরালো দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের নির্যাতনের শিকার না হতে হয়, নির্যাতন কমে আসে এবং নারী ও কন্যাশিশু সুস্থ ও নিরাপদ ভ্রমণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

নারী নেত্রী নাজমুন্নাহার বলেন, বিগত ১৭ বছরে রাস্তায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, গণপরিবহনে, স্কুলে ও কলেজে এবং চাকরিক্ষেত্রে অসংখ্য নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আমরা সেগুলোর বিচার পাইনি। এমনকি বিচার চাইতেও পারিনি।

তিনি বলেন, নতুন স্বাধীনতার পরে বিচার চাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ এই ধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক। জনসম্মুখে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক এবং শাস্তি কার্যকর করা হোক—যাতে আর কোনো ধর্ষণকারী সাহস না পায়। নারী ও শিশুর সম্মান নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নারীদের অধিকার আদায়ে সামাজিক সংগঠন নারী অধিকার আন্দোলন সোচ্চার থাকবে। সেই লক্ষ্যে নারী অধিকার আন্দোলন আজ মানববন্ধন করছে, পথে নেমেছে—যাতে ধর্ষক, নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে নাজমুন্নাহার বলেন, প্রত্যেক নারীর বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। সম্প্রতি ঝিনাইদহে হিজাব আবৃত নারীদের উপর হামলা করা হয়েছে। তাদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।

বিশিষ্ট লেখিকা নুরুন্নাহার খানম বলেন, আগে এসিড ছোড়ার সংস্কৃতি ছিল। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার পরে এসিড নিক্ষেপ যেমন কমেছে, তেমনি আমরা আশা করব, ধর্ষকদের, নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের জনসম্মুখে শাস্তি প্রদান করা হবে। তাহলে তারা আর ধর্ষণ ও নির্যাতন করার সাহস কেউ পাবে না।

মানববন্ধন থেকে নিম্নোক্ত প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়-

১. নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

২. দোষী ব্যক্তিদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে যথা সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে সরকার পদক্ষেপ নেবেন। সেক্ষেত্রে শরীয়াহ আইনে বিচার করা যেতে পারে। কঠোর দণ্ডবিধি প্রয়োগ করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডা. শামসুন্নাহার লাকি, বিশিষ্ট লেখিকা নুরুন্নাহার খানম নীরু, শিক্ষিকা ফারহানা সুমাইয়া মিতু, সৈয়দা শাহীন আকতার, আসিফা সিদ্দিকা, কোহিনূর ইয়াসমিন লিপি, বিশিষ্ট সমাজসেবী মর্জিনা খাতুন ও শ্রমিক নেত্রী কামরুন্নাহার প্রমুখ।

কালের আলো/এএএন