কোরআনের অনুশাসন নেই বলেই ধর্ষণ বাড়ছে : জামায়াত আমির
প্রকাশিতঃ 9:19 pm | March 13, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে কোরআনের অনুশাসন নেই বলেই ধর্ষণ বাড়ছে। মাগুরার শিশুটির মতো প্রতিনিয়ত অনেকরই জীবন দিতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে ৬০ ফিট রাস্তা সংলগ্ন মিরপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে মিরপুর পূর্ব থানা জামায়াত আয়োজিত স্থানীয় সুধীদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাগুরায় নির্যাতনের শিকার হয়ে শিশুর মৃত্যুতে গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন জামায়াত আমির। তিনি মরহুমার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করেন।
জামায়াত আমির বলেন, মানবরচিত মতবাদ দিয়ে দেশ পরিচালনার কারণে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে এতো অশান্তি। ফলে দেশ এখন অপরাধ ও অপরাধীদের রীতিমতো অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী এমন এক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেখানে মানুষ নিজেদের অধিকার নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। দেশে কোনো দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, অপহরণ ও ধর্ষণসহ কোনো অপরাধ থাকবে না। রাষ্ট্রই সব নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল মৌলিক ও মানবীয় অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করবে।
তিনি বলেন, এমন একটি শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের সব ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী কুরআনের আলোকে আলোকিত এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে দেশ ও জাতির কাছে প্রতিশ্রতিবদ্ধ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, রমজান মাস এমন এক মহিমান্বিত মাস, যে মাসের প্রথম দশকে রহমত, মধ্য দশকে মাগফিরাত এবং শেষ দশকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এ মোবারক মাসেই বদর যুদ্ধ বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেয়েছিল। মক্কা বিজয়ও হয়েছে এ মাসেই। এরপর বড় বড় বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম বিশ্বের অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্য ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে কুরআনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
‘কুরআন দিয়ে দেশ পরিচালিত হলে দেশে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন, ধর্ষণ অপহরণ কোনো কিছুই থাকবে না। যাকাতভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত দেশ দারিদ্রমুক্ত হবে। কোনো যুবক বেকার বা কর্মহীন থাকবে না। থাকবে না মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ বা বৈষম্য।’
তিনি বলেন, দেশকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তি কল্যাণ রাষ্ট্রের পরিণত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। তাহলে দেশকে একটি শান্তির নীড়ে পরিণত করা সম্ভব।
ফতার মাহফিলে এর আগে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাহে রমজানের নিয়ামত দান করেছেন যাতে আমরা তাকওয়া অর্জন করে নিজেদের পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে পারি। মূলত, সিয়াম আমাদের সভ্য, সুন্দর ও গতিশীল করে তোলে। তাই মাহে রমজানের শিক্ষা জীবনের সব ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে নিজেদের মধ্যে তাকওয়ার গুণাবলি সৃষ্টি করতে হবে।
থানা আমির শাহ আলম তুহিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ওয়াহিদুল ইসলাম সাদীর পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন— কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য শাহাবুদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক।
কালের আলো/এসএকে