ঈদ টার্গেট করে বিপুল জাল নোট তৈরি, ৪০ লাখ ছাড়ার পর পুলিশের হাতে ধরা
প্রকাশিতঃ 4:22 pm | March 15, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
প্রতি বছরের মতো এবারও রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল টাকা তৈরি ও বাজারজাতকরণ চক্র। সম্প্রতি এমনই একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— সুমন (৩৮), সুলতানা (২৮) ও হানিফ গাজী (৪৮)।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কামরাঙ্গীরচরের মাতবর বাজারের বুড়িগঙ্গা গণপাঠাগার সমাজকল্যাণ সংস্থার সামনে বেড়িবাঁধে চেকপোস্ট পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ৷
পুলিশ বলছে, রমজান ও ঈদকে টার্গেট করে বিপুল জাল নোট তৈরি করেছে চক্রটি, যার ৩০-৪০ লাখ ইতোমধ্যে বাজারে ছেড়েছেও। নিজেদের তৈরিকৃত বি-গ্রেড মানের ১ লাখ টাকার জাল নোট ৯ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে তারা।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. জসিম উদ্দিন। এ সময় লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জুয়েল চাকমা ও ডিএমপির মিডিয়া শাখার সহকারী কমিশনার (এসি) জাহাঙ্গীর কবির উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, “জাল নোটের ব্যবসায়ীদের ধরতে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদবর বাজারের বুড়িগঙ্গা গণপাঠাগার সমাজকল্যাণ সংস্থার সামনে বেড়িবাঁধে চেকপোস্ট বসায় পুলিশ। দুপুর দেড়টার দিকে একটি অটোরিকশায় জাল টাকার ব্যবসায়ীরা সেখানে পৌঁছালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে সুমন, সুলতানা ও হানিফ গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেহ তল্লাশি করে ১০০০ ও ৫০০ টাকার মোট চার লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন বিকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলীর গ্যাস লাইন এলাকায় সুমনের ভাড়া বাসা থেকে ১৬ লাখ টাকার জাল নোট, একপাশে ছাপানো ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জাল নোট, একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, একটি কালার প্রিন্টার, জাল নোট তৈরির ১০টি ডাইস, তিনটি আঠার কৌটা, দুটি ফয়েল পেপার রোল, পাঁচটি কালির কৌটা, একটি রাবার কাটার, দুটি কাগজ ছিদ্র করার ভাইস ও জাল নোট তৈরির কাজে ব্যবহৃত এক বস্তা সাদা কাগজ উদ্ধার করা হয়।
লালবাগ বিভাগের ডিসি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। তাদের চক্রে আরও সদস্য আছে কি না রিমান্ডে জানতে চাওয়া হবে।
যেভাবে জাল টাকা বাজারে ছাড়তো
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ কর্মকর্তা জমিস উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই অভ্যাসগত জাল টাকা প্রস্তুতকারী। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের জাল নোট তৈরি করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কারও নাম না বললেও তারা জানিয়েছে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতো নোটগুলো। তাদের ভাষায় বি-গ্রেড মানের এক লাখ টাকার সমমানের ১ হাজার টাকার বান্ডিল ৯-১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। যেটা হাত দিয়ে ধরলে অনেক বেশি সচেতন না থাকলে বুঝারও উপায় নেই।
কালের আলো/এএএন