হিজাববিহীন নারীদের শনাক্তে ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে ইরানে
প্রকাশিতঃ 5:14 pm | March 15, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, খোলা স্থানে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। যদি কোনো ইরানি নারী হিজাব পরিধান না করে তাহলে তাকে গ্রেপ্তারসহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এরই মধ্যে খবর, নারীরা তাদের পোশাকের এ বিধিবিধান ঠিকঠাকভাবে মেনে চলছে কি না, তা নিশ্চিত করতে কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে ইরানে। দেশটির রাজধানী তেহরান ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ড্রোন উড়ানো হচ্ছে হিজাববিহীন নারীদের শনাক্তে।
শুধু তাই নয়, নারীদের হিজাব পরিধানে বাধ্য করতে ড্রোনের পাশাপাশি ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম ও একটি অ্যাপও ব্যবহার করা হচ্ছে দেশটিতে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাপটির নাম হলো ‘নাজের’। এটি মোবাইলে ব্যবহার করা যায়। যদি কোনো নারী হিজাব না পরেন এবং তাকে কেউ দেখেন, তাহলে এই অ্যাপটির মাধ্যমে তার বিস্তারিত তথ্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে পাঠানো যায়। সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশ যে কেউই এই অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য পাঠাতে পারেন।
অ্যাপটির মাধ্যমে হিজাব না পরা নারীর গাড়ির লাইসেন্স প্লেট, অবস্থান এবং ওই নারী কোন সময়টায় হিজাবহীন অবস্থায় ছিলেন, তার সব জানানো যায়। এরপর অ্যাপটি তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশকে সতর্ক করে দেয়।
এছাড়া লাইসেন্স প্লেটের তথ্য সংগ্রহ করে ওই গাড়ির মালিককে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, আপনার গাড়িতে হিজাব আইন লঙ্ঘন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যদি আপনি সতর্কতা উপেক্ষা করেন, তাহলে গাড়ি জব্দ করা হবে।
‘নাজের’ নামের এ নজরদারি অ্যাপটি মূলত ইরানের পুলিশের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্স, ট্যাক্সি এবং গণপরিবহনে থাকা নারীদের টার্গেট করার জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অ্যাপটির পরিধি বাড়ানো হয়।
প্রতিবেদনটি করার জন্য প্রায় ৩০০ জন ভুক্তভোগী এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাতিসংঘের তদন্তকারীরা। অনুসন্ধানকালে ইরানের বিচার ব্যবস্থার দিকেও গভীরভাবে নজর দিয়েছেন তারা।
এর ভিত্তিতে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলছেন, প্রকৃত স্বাধীনতার অভাব রয়েছে ইরানে। এমনকি বিচারবহির্ভূত নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও দেশটিতে ঘটছে অহরহ।
জাতিসংঘের এ তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১৮ মার্চ মানবাধিকার কাউন্সিলে উপস্থাপন করা হবে জানিয়েছে বিবিসি।
কালের আলো/এসএকে