ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নিয়ে নাটকীয় মোড়, কমিটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল 

প্রকাশিতঃ 9:39 pm | March 17, 2025

ময়মনসিংহ প্রতিবেদক, কালের আলো:

ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যেন থামছেই না। কোন নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ ছাড়াই ক্লাবটির কমিটি গঠনের বিষয়ে চলমান সমালোচনার মধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে একটি পক্ষ। এ নিয়ে নাটকীয় এক মোড় নিয়েছে। ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নির্বাচন-২০২৫ এর ক্রীড়া সম্পাদক ও বিএনপিপন্থী সাংবাদিক প্রার্থী এম এ মোতালেব এই বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের অনির্বাচিত বর্তমান নির্বাহী কমিটিকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচন সাবেক কমিটির মাধ্যমে নতুন করে নির্বাচন করার আদেশ দেওয়া হবে না এই মর্মে রুল নিশি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি মোহাম্মদ আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান গত ৯ মার্চ এই রুল জারি করেছেন।

আদালত সূত্র জানায়, রুলে সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ পদাধিকার বলে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমিত রায়, সাবেক সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন ও ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নির্বাচন-২০২৫ এর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাইফুল ইসলামকে আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ও আব্দুল হাই।

এর আগে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন চলতি বছরের ২ জানুয়ারি রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করেন। অনির্বাচিত এই কমিটির সদস্যরা এরপর গত ৫ জানুয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এ ঘটনায় ময়মনসিংহের গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ-অসন্তোষ ও চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বেশিরভাগ সংবাদকর্মী। কিন্তু ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও প্রেসক্লাব সভাপতি মফিদুল আলম কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় অসন্তোষের মাত্রা চরমে ওঠে। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক নিজেকে পক্ষপাতমুক্ত রাখতে পারেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, বিএনপিপন্থী সাংবাদিক এম এ মোতালেব’র এমন সাহসী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব সংস্কার কমিটির ১৯১ সদস্যের আহবায়ক, দেশের ডান ঘরনার গুরুত্বপূর্ণ দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মো.শামসুল আলম খান। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘সাংবাদিক এম এ মোতালেবের রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের রুল নিশি সময়োপযোগী এক সিদ্ধান্ত। চর দখলের মতোই ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব যেভাবে দখল করা হয়েছে সেটি নিন্দনীয় ও ক্ষমার অযোগ্য এক অপরাধ। ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে পরিবর্তনের আশাবাদ তৈরি হয়েছে। ঠিক সেই সময়ে নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ ছাড়াই ফিল্মি স্টাইলে প্রেসক্লাবের নতুন নেতৃত্ব বাছাই চরম বিতর্কিত ও নতুন বাংলাদেশ গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক একটি সিদ্ধান্ত।’

তিনি বলেন, ‘প্রেস ম্যান ফর প্রেসক্লাব’ এই নীতি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব অনুসরণ করেনি। আমরা ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই প্রেসক্লাব সংস্কার কমিটি গঠন করে গঠনতন্ত্র সংশোধন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, অপেশাদার সাংবাদিকদের সদস্য পদ বাতিল, পেশাদার সাংবাদিকদেরকে সদস্য করে বিগত সময়ের সব আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছি।’

কালের আলো/আরআই/এমএএইচ