ঈদুল ফিতর ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিতঃ 6:33 pm | March 18, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

এবারের ঈদুল ফিতর ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বাসা ফাঁকা রেখে গ্রামে যেতে ভয় পাচ্ছেন নগরবাসী। যদিও অপরাধপ্রবণ এলাকাসহ রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিন্তু তারপরও ছিনতাই, আক্রমণ ও ডাকাতির ঘটনা থামানো যাচ্ছে না। ফলে ঈদের সময় ফাঁকা নগরীতে নিরাপত্তা নিয়ে বেশ আতঙ্কিত রাজধানীবাসী।

জানা যায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও বনশ্রীসহ বেশকিছু এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। আর অন্যান্য এলাকায়ও সুযোগ বুঝে ঘটানো হচ্ছে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা। গণঅভ্যুত্থানের পর পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। ওই সময় কিছু অপরাধীকে আটকও করা হয়। সেই অপরাধীদের খোঁজ নিয়ে দেখা যায় যে, তাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আর বর্তমানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে চুরি-ছিনতাই-ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটনো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।

নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে পল্লবীর বাসিন্দা কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই প্রথম ঈদ। অনেকেই ঈদে গ্রামের বাড়ি যাবে। সে সময়টাতে ছিনতাই-ডাকাতি বেড়ে যাবে কিনা- সেটি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন রয়েছি।’

রাজধানীর বনশ্রী এলাকার জুলহাস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নানান ছব্দবেশে মানুষদের নিরাপত্তাহীন করার চেষ্টা করছে। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি করে ও মানুষ মেরে সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলতে চাইছে। বউ-সন্তান নিয়ে বাড়ি যাব, কিন্তু ভয় কাজ করছে। ঈদে ফাঁকা বাসায় চুরি-ডাকাতি নিয়ে আমি খুবই আতঙ্কিত।’

অপরদিকে ঈদের সময় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার আগে বাসাবাড়ি, দোকানপাটসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিজ দায়িত্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে একটু বাড়তিভাবেই আতঙ্ক কাজ করছে।

সাজ্জাত আলী বলেন, ‘যখন বাড়ি যাবেন, তখন দয়া করে আপনার বাড়ি, ফ্ল্যাট, দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিজ দায়িত্বে করে যাবেন। এমন একটি বড় শহর, এ শহরে নানান পেশার, নানান গোষ্ঠীর এবং প্রচুর ভাসমান লোক বসবাস করে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিনিয়ত লাখো মানুষ আসে, আবার চলেও যায়। এরকম একটি শহরে কিছু ঘটলে আপনারা অবশ্যই আতঙ্কিত হবেন না।’

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পরিপূর্ণভাবে স্বাভাবিক হয়নি। অপরাধীরা নানাভাবে সক্রিয়। ছোট অপরাধীদের ভেতরে বড় অপরাধীরা সুপ্ত অবস্থায় থাকবে। যেহেতু বেশি সংখ্যক মানুষ ঢাকার বাইরে যাবে সেহেতু চুরি, ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবারের পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ। পুলিশের টহল কার্যক্রম এবার বাড়াতে হবে। এটা কাগজে কলমে না, বাস্তবে করতে হবে। কার্যকরভাবে এটা বাড়াতে না পারলে এই সময়টাতে অপরাধ বেড়ে যাবে।’

কালের আলো/আরআই/এমকে