‘জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হবে না’
প্রকাশিতঃ 7:25 pm | March 18, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেই জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল বলেছিল জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমরা জনগণের অধিকার বলতে ভোটের অধিকারকে বুঝি।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া ও স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। দোয়া ও স্মরণসভার আয়োজন করে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আপনারা অতি দ্রুত নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করেন। তাহলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে। জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র এদেশে বাস্তবায়িত হবে না। জনগণের সেই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত ১৬ বছর মানুষ ভোটের অধিকার পায়নি, সেটা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফিরিয়ে দেবে। আজকে নির্বাচনকে বিলম্ব করার চেষ্টা হচ্ছে। যারা স্বৈরাচারী ছিল তারাতো পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আর তালবাহানা নয়, অতি দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তাহলে আপনারা সম্মানের সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিগত ১৬ বছরের শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ যে আন্দোলন করছিল সেটা চূড়ান্ত ফসল হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট। ওই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন ও তার সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে এবং দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাহেব একজন ত্যাগী, জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। তিনি চারবারের মতো চিফ হুইপ ছিলেন। ২০০১ সালে আমরা অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলাম, দেলোয়ার হোসেন সাহেব একজন মন্ত্রী হবেন। কিন্তু তাকে মন্ত্রী করা হয়নি। এতে তিনি সামান্যতম মন খারাপ করেননি। আমরা অনেক ক্লোজলি কাজ করেছি। আমরা কিন্তু বিষয়টা নিয়ে ওনার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তখন উনি উল্টো আমাদের বুঝিয়েছেন, রাজনীতি করি দলের আদর্শের জন্য। রাজনীতি করি বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য। রাজনীতি কোন পদ পদবির জন্য করি না। এই শিক্ষাটা উনি আমাদের দিয়ে গেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাহেব দলের ক্রান্তিকালে অনেক সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। ওয়ান ইলেভেনের পরে যখন আমাদের দলকে স্তব্ধ করার জন্য ১১ বছরের যে মহাসচিব ছিল, তাকে সংস্কারপন্থী বানিয়ে ফেলে। সেই সময় আমরা কারাগারে ছিলাম। এভাবে যদি দল দুইভাগ হয়, তাহলে কীভাবে রক্ষা হবে। মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সাহেব অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে তখন মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আমাদের দলে মহাসচিব অনেক হয়েছে। কিন্তু এই দলের কোন একটি খারাপ সময়ে দলের মহাসচিব এজ এ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে খন্দকার দেলোয়ার হোসেন।
দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে ও ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আকবর হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ। এছাড়া খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের অন্যান্য সন্তানসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এএএন