জনপ্রিয়তার পরীক্ষায় শ্রীলঙ্কা সরকার, মুখোমুখি স্থানীয় নির্বাচনের
প্রকাশিতঃ 6:10 pm | March 20, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
শ্রীলঙ্কার দীর্ঘ বিলম্বিত স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন। দ্বীপ দেশটির নতুন বামপন্থী সরকারের জনপ্রিয়তা পরীক্ষার প্রথম এই নির্বাচন আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশটিতে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের জেরে তৎকালীন প্রশাসন নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছিল। নির্বাচনী ব্যয় মেটানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই জানিয়েছে ওই নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল।
শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের আগস্টে এক রায়ে বলেন, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে অবৈধভাবে কাজ করেছিলেন। আদালত সেই সময় দেশটির সরকারকে প্রথম সুযোগেই নির্বাচন আয়োজনের আদেশ দেন।
দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার ৩৩৯টি স্থানীয় সরকার পরিষদের মধ্যে তিনটি বাদে সবগুলোর নির্বাচন আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া অবশিষ্ট পরিষদের নির্বাচনের সময় পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে।
২০২২ সালে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয় দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কা। ওই সময় দেশটির সরকার ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি ঋণ পরিষদে দেউলিয়া হয়ে যায়। দেশটির স্বাধীনতা লাভের পর প্রথমবারের মতো ভয়াবহ এই অর্থনৈতিক সংকটে জনজীবনে নেমে আসে চরম বিপর্যয়।
কয়েক মাস ধরে ভোক্তা পণ্য ঘাটতির জেরে দেশটির হাজার হাজার মানুষ প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশে নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। টানা আন্দোলনে দেশটিতে ভয়াবহ অচলাবস্থা তৈরি হয়। জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশে।
পরে ২০২৩ সালের মার্চে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেলআউট নিশ্চিত করেন। নাগরিকদের আয়কর দ্বিগুণ, জ্বালানি ভর্তুকি বাতিল ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পর তিনি আইএমএফের কাছে থেকে ওই আর্থিক সহায়তা পান।
গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে ক্ষমতা থেকে বিদায় ঘটে রণিল বিক্রমাসিংহের। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশটির বামপন্থী রাজনীতিক অনুরা কুমারা দেশানায়েকে ভূমিধস বিজয় লাভ করেন।
বিক্রমাসিংহে নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের নেওয়া কঠোর অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়ন করছেন দেশানায়েকে। আইএমএফ বলেছে, দেশটির অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে এবং খারাপ অবস্থা থেকে উন্নতি করছে।
সূত্র: এএফপি।
কালের আলো/এসএকে