আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পক্ষে নই : জি এম কাদের 

প্রকাশিতঃ 8:37 pm | March 21, 2025

রংপুর প্রতিবেদক, কালের আলো:

নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশ আরও সংঘাতময় দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় চলে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

তিনি বলেন, হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমরা দেখেছি। সে জোর করে অর্ধেক লোককে বাদ দিয়ে ইলেকশন করেছে। জোর করে আমাদের নিয়ে এসেছে, আবার কাউকে জোর করে বাদও দিয়েছে। এখন এনারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা) জোর করে আমাদের বাদ দিয়ে ইলেকশন করবে। একটি বিশাল অঙ্কের জনসংখ্যাকে বাইরে রেখে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। এতে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না। সামনের দিনে দেশ আরও সংঘাতময় দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় চলে যাবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে রংপুর নগরীর সেনপাড়ায় তার বাসভবন দ্য স্কাই ভিউতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী জি এম কাদের বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে নই। আওয়ামী লীগ একটি গাড়ি। তার ড্রাইভার খারাপ হতে পারে কিন্তু গাড়িটা তো খারাপ না।

সাবেক এই বিরোধী দলীয় নেতার দাবি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা পারছেন না, অন্য কাউকে দায়িত্ব দেন। এগুলো থেকে উদ্ধার না হলে দেশের মানুষ চরম বিপদগ্রস্ত হতে পারে। এটা বললাম কেন, এটা বলাতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- এটা মনে করেছে তারা। এজন্য আমার এগেইনস্টে দুর্নীতির মামলা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি এর আগে দুটি লুব্রিকেটিভ মন্ত্রণালয় বাণিজ্য ও বিমান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় শেখ হাসিনা আমার পেছনে সমস্ত এজেন্সির লোককে দুর্নীতি বের করতে লাগিয়েছিল। তারা দুর্নীতি বের করতে পারেনি। কিন্তু এখন দুর্নীতি বের করছে কি আমি নমিনেশন, পদ-পদবি দিয়ে দুই হাজার-পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছি- এ হলো আমার দুর্নীতি। আমার মুখ বন্ধ করার জন্য শেখ হাসিনা যেমন ফ্যাসিবাদ করেছে, এখন সেই নব্য ফ্যাসিবাদ শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা যেটা করে আমাদের ঠেকানোর চেষ্টা করেছে- ধমক দিয়ে, ব্ল্যাকমেইল করে। এখন উনারা আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে চাচ্ছে।

ইমেজ নষ্ট করতেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আমাকে দুর্নীতির মামলা দিয়ে সারাদিন-রাত টেলিভিশনে দেখিয়েছে যে বিদেশে বাড়ি আছে, বের করো যাও। এর অর্থ হলো আমিই খারাপ লোক এটা প্রমাণ করে ইমেজ নষ্ট করে যাতে সামনের দিকে মানুষ আমার কথা বিশ্বাস না করে।

দোসর বলা প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, এমনিতেই তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা) আমাদের দোসর বলছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু ঘনিষ্ঠজন এমন কিছু কাজকর্মে উৎসাহিত করছেন যেগুলো রাজনীতির নামে অপকৃতি এবং লুটতরাজ। পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। এটাও উনাদের দায় যেহেতু ঢালাওভাবে সমস্ত পুলিশকে তারা দোসর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগের অপব্যবহার করা হচ্ছে। কতগুলো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে সেগুলো নতুনভাবে সাজানো খুব সহজসাধ্য হবে না।

এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলামসহ পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুরে ঢাকা থেকে বিমানযোগে চার দিনের সফরে সৈয়দপুর বিমানবন্দর দিয়ে রংপুরে আসেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি আগামীকাল শনিবার রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন।

কালের আলো/এমডিএইচ