থানায় অপচিকিৎসার অভিযোগ করায় প্রেসক্লাবে ঢুকে সাংবাদিককে পেটালেন ডাক্তার
প্রকাশিতঃ 3:41 am | March 22, 2025

ময়মনসিংহ প্রতিবেদক, কালের আলো:
ময়মনসিংহে থানায় অপচিকিৎসার অভিযোগ করায় এক সাংবাদিককে প্রেসক্লাবের ভেতরে ফেলে পিটিয়েছে এক চিকিৎসক ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে ওই সাংবাদিকের মাথায় আঘাত লাগায় ডান কানে ৪০ শতাংশ কম শুনছেন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
শুক্রবার (২১ মার্চ) পর্যন্ত ওই সাংবাদিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে ভর্তি আছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন সাংবাদিক।
আহত সাংবাদিক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের চর ঈশ্বরদিয়া খালপাড় এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় দৈনিক ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, দৈনিক রুপালী বাংলাদেশ পত্রিকার ময়মনসিংহ নিজস্ব প্রতিবেদক।
ওই সাংবাদিকের ভাষ্য, তার বাবা মোসলেম উদ্দিন (৭০)। ৭ থেকে ৮ দিন ধরে তার দাঁত ব্যথা করছিল। পরে দাঁত তোলার জন্য হাসপাতালে আনার অনেক চেষ্টা করেও আনা যায়নি। কোন মতেই তিনি হাসপাতালে যাবেন বলে বায়না ধরেন। পরে গত ১২ মার্চ বিকেলে নগরীর শম্ভুগঞ্জ পশ্চিম বাজার এলাকার এ্যাডভান্সড ডেন্টাল সলোশন নামক একটি দন্ত চিকিৎসালয়ে নেয়া হয়। সেখানে নেয়ার পর কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সিমু আক্তার নামে এক ভুয়া চিকিৎসক নাড়াচাড়া করা দাঁত না ফেলে ভাল দাঁত ফেলে কিছু ওষুধ লিখে দেয়। এগুলো নিয়ে মোসলেম বাড়িতে ফিরে আরও বেশি দাঁতের ব্যথায় ভোগতে শুরু করেন। ওষুধ খেয়েও কোন কাজ হচ্ছিল না। পরে রাত ওই দিন রাত ১১ টার দিকে বুঝতে পারেন, তার নাড়াচাড়া করা দাঁত না ফেলে ভাল দাঁত ফেলে দিয়েছেন।
পরদিন ১৩ মার্চ বিকেলে শম্ভুগঞ্জ বাজার মোড়ের গোল চত্বর এলাকার রীচ হেলথ সেন্টার নামক দন্ত চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম নিজেও কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই মোসলেম উদ্দিনকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় বসিয়েই দাঁত ফেলে দিয়ে ওষুধ লিখে দেন। কিন্তু তার ওষুধ খেয়েও দাঁতের ব্যথা কমেনি। এভাবেই তিনি ৩ থেকে ৪ দিন দাঁতের ব্যথায় ভোগেন। এমন অপচিকিৎসার বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে উল্টো সংবাদকর্মীকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন।
এ ঘটনায় গত বুধবার (১৮ মার্চ) বেলা আড়াইটার সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম নিজে বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় ভুয়া চিকিৎসক শিমু আক্তার ও ডা. আমিনুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনার পর শম্ভুগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি পরিচয়ে আনো হোসেন নামে একজন ফোন করে রাতে চা পানের দাওয়াত দেন।
সেখানে গেলে সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম একা একা পেয়ে চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সংবাদকর্মীকে মাথায় বেধড়ক কিল-ঘুষি দেয়া শুরু করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে জানতে রীচ হেলথ সেন্টারের চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম ও এ্যাডভান্সড ডেন্টাল সলোশনের শিমুর নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, মারধরের পর ওই সাংবাদিক নিজেই ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আজ অথবা কাল তিনি অভিযোগ করবেন। অভিযোগ করলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালের আলো/এসএকে