ঈদ উদযাপনে নাড়ির টানে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

প্রকাশিতঃ 3:51 pm | March 23, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ইট-পাথরের কর্মব্যস্ত শহর ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। তাই আগের তুলনায় রেলস্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরে পরিবার নিয়ে থাকা চাকরিজীবীরা আগেভাগেই পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে পাঠাচ্ছেন। কারণ সময় যতই গড়িয়ে আসবে ততই ভোগান্তি বাড়বে ঈদযাত্রায়।

গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ঘরে ফেরা মানুষের জটলা দেখা গেছে।

গতকাল শনিবার কমলাপুর স্টেশনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. বেলাল হোসেন দুই সন্তান ও স্ত্রীকে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে তুলে দিতে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ২৯ তারিখ ঈদের ছুটি শুরু হবে। তখন পরিবার নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে।

কারণ এ সময় ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড় থাকে। তাই আগেভাগেই স্ত্রী-সন্তানকে দিনাজপুরে গ্রামের বাড়িতে পাঠাচ্ছি। যাতে তারা স্বস্তিতে বাড়ি যেতে পারে। আর এ বছর চুরি-ছিনতাই একটু বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই পরিবারের সদস্যদের আগেই বাড়িতে পাঠাচ্ছেন।যাতে পরে একা একা যেতে সমস্যা না হয়।

একই চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে। ঈদে ট্রেনযাত্রা কিছুটা স্বস্তির হলেও বাস যাত্রায় ভোগান্তি দেখা যায়। বিশেষ করে টাঙ্গাইল-রংপুর ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চার লেনের কাজ চলায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঈদ যত ঘনিয়ে আসে ততই এই রুটগুলোতে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে।

ফলে দীর্ঘ সময় বাসে বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। তাই ভোগান্তি এড়াতে  েট্রন যাত্রার মতো বাসেও আগেভাগে বাড়িতে ফিরছে মানুষ।

আজ শনিবার রাজধানীর কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে বাসের জন্য অপেক্ষারত নাসিমা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মা, দুই মেয়েকে নিয়ে আগেই বাড়িতে যাচ্ছি। গত বছর শেষ সময়ে বাড়িতে যাওয়ায় সময় অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তাই ভোগান্তি এড়াতে আগে ভাগেই যাচ্ছি। তবে আমার ছেলে ও স্বামী সরকারি ছুটি হলে বাড়িতে যাবে।’ একই চিত্র দেখা গেছে সদরঘাটেও।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগেভাগে যারা সড়ক-নৌ ও রেলপথে ঢাকা ছাড়ছেন তাদের কোনো ভোগান্তি হচ্ছে না। তবে সরকারি ছুটি শুরু হলে এসব পথে মারাত্মক দুর্ভোগ হতে পারে। নৌপথে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই লঞ্চ, ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় এবং সড়কপথে ফিটনেসবিহীন বাস এবং যানজটের ধকল সামলাতে হবে। তারা বলেন, ঈদযাত্রায় সড়কপথে ১৫৫টি স্পটে তীব্র যানজট হতে পারে। আর চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্যরেও বড় ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি লক্কড়-ঝক্কড় বাস, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়কের পাশের ভাসমান বাজার এবং নসিমন, করিমন, ইজিবাইক চলাচলে দুর্ঘটনার উদ্বেগ থাকছে ঈদযাত্রায়।

এদিকে, এবারের ঈদে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর ঈদযাত্রায় যান চলাচল যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।

কালের আলো/এসএকে