আ.লীগ-জাপা ছাড়া নির্বাচন হলে গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত হবে: এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন
প্রকাশিতঃ 5:35 pm | March 27, 2025

রংপুর প্রতিবেদক, কালের আলো:
ফ্যাসিবাদী শক্তি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি (জাপা) যদি নির্বাচনে না আসতে পারে তার মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রংপুরের মাহিগঞ্জ সাতমাথা এলাকায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় এনসিপির রংপুরের সংগঠক আলমগীর নয়ন, আরিফুলসহ জেলা মহানগর ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন নির্বাচনী গণসংযোগ করতে রংপুরে এসেছেন। তিনি রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) এনসিপি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টিকে বাইরে রেখে নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির যোগসাজোসে বাংলাদেশে পর পর তিন তিনটা ডামি ও প্রসহনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই দুই দলের যোগসাজোসে দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে গণতন্ত্রের আবহ থেকে পরিপূর্ণভাবে বঞ্চিত ছিল। দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে যে ফ্যাসিবাদের যাতাকলে পিষ্ট ছিল। তার পেছনে সব থেকে বড় শক্তি ছিল আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২০২৪ সালে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এই গণহত্যার প্রকাশ মদদদাতা সংগঠন হচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর জাতীয় পার্টি। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালের শাপলা হত্যাকাণ্ড, মোদি বিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই অভ্যুত্থানের যে হত্যাকাণ্ড, প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডেই ব্যক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সরাসরি জড়িত। যারা গণ আঞ্জাম দেয়, যারা দেশের মানুষের ওপরে মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দেয়, গণতন্ত্রকে লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে, সেই শক্তি কোনোভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়।
আখতার হোসেন বলেন, গণতন্ত্রকামী কোনো মানুষ এবং কোনো দেশ কোনোভাবেই কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তিকে তাদের দেশে রাজনীতি করার অধিকার দেয় না। সেই জায়গা থেকে আমরা মনে করি কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ইনক্লুসিভ ইলেকশনের প্রয়োজনীয় উপাদন হতে পারে না। বরং ফ্যাসিবাদী শক্তি যদি নির্বাচনে না আসতে পারে তার মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত হয়। অতএব জাতীয় নাগরিক পার্টি দীর্ঘ সময় ধরে দাবি জানিয়ে আসছে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। অতি দ্রুত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করতে হবে। দল হিসেবে মার্কা ও মতাদর্শ নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারে না।
তিনি বলেন, আমাদের দলের বিভিন্ন সদস্যবৃন্দের কথাবার্তা শুনে মনে হতে পারে সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে, বিষয়টি এ রকম নয়। আমরা দলের যারা শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আছি এবং কেন্দ্রীয় সদস্যবৃন্দ সারাদেশের নেতৃবৃন্দ সকলের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। আমরা সকলে মিলে নতুন যে বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখি। আমরা যে রাজনীতির শপথ নিয়েছি সে রাজনীতির পক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
নির্বাচন ঘিরে প্রস্তুতি ও দল গোছানো প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, দল গঠনের পর আমরা মাসখানেক সময় পেয়েছি। এনসিপিকে মোটা দাগে উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। আমাদের মুখ্য সংগঠক যারা আছেন তারা দেশকে আরও ছোট ছোট কয়েকটি অঞ্চলে বিভক্ত করে সারাদেশে আমাদের কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা সারাদেশের মানুষের কাছ থেকে তাদের পজেটিভ রেসপন্স পাচ্ছি। আমরা আশাবাদী খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নির্বাচনে নিবন্ধিত হওয়ার যে শর্তাবলী পূরণ করতে হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি সে শর্তগুলো পূরণ করতে সক্ষম হবে। আমরা মনে করি অবশ্যই একটি গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা রয়েছে। সেই নির্বাচনে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সক্ষম হয়ে উঠব।
পরে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে কাউনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন আখতার হোসেন। তার সঙ্গে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ছিলেন।
কালের আলো/এমডিএইচ