বাস ভাড়ার সঙ্গে ঈদের বকশিশ
প্রকাশিতঃ 5:52 pm | March 29, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ঈদের ছুটিতে রাজধানী ছাড়ছে অনেক মানুষ। এখনও বিভিন্ন কাজে রাজধানীতে চলাফেরা করছে সাধারণ মানুষ। তবে ঢাকার লোকাল প্রায় সব বাসে ভাড়ার অতিরিক্ত ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত ঈদ বকশিশ হিসেবে আদায় করা হচ্ছে। কিছু বাসে অতিরিক্ত বকশিশ চাওয়ায় বাসস্টাফ ও যাত্রীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও দেখা গেছে।
বাসস্টাফরা জানান, আমরা বাস মালিক পক্ষ থেকে কিছু পাই না। আমাদেরও ঈদের খরচ আছে। তাই ভাড়ার চেয়ে একটু করে বেশি চাচ্ছি। কেউ না দিলে জোর করছি না। তবে যাত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, তারা ঈদের ব্যাপার বোঝেন। কিন্তু অনেকের কাছে ঈদেও টাকা নেই। ভাড়ার সমান বকশিশ চাইলে সেটা পূরণ করা সম্ভব নয়। এসব বিষয়ে মালিক পক্ষ ও সরকারের কিছুটা দেখা উচিত বলে জানান অনেক যাত্রী।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর গাবতলী, মিরপুর, ফার্মগেট, শাহবাগ, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, উত্তরা, বাড্ডাসহ সব এলাকার লোকাল বাসে ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত চাওয়া হচ্ছে। অনেক সময় বাসস্টাফ ও যাত্রীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা দেখা যায়। এছাড়া বকশিশ দিতে না চাইলে অনেকে খারাপ ব্যবহারেরও শিকার হচ্ছেন।
মিরপুর থেকে গুলিস্থানগামী শিকড় ও বিহঙ্গ বাসে অবস্থান করে দেখা যায়। ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ১০ টাকা করে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে। অনেক যাত্রীর কাছ থেকে জোরাজুরি করেও বকশিশ আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া পুরান পল্টন মোড়ে ঈদ বকশিশের টাকার কথা বলে যাত্রী উঠানো হচ্ছে।
গুলিস্তান থেকে মিরপুর-১০ এর ভাড়া ৩০ টাকা কিন্তু এই রুটের বাসে ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এই রুটের যাত্রী আহসান হাবিব। তিনি বলেন, সবার অবস্থা এক না, তাই সবার থেকে একই হারে বকশিশসহ ভাড়া আদায় করলে অসুবিধা। সবাইকে বলার পর যারা দিতে পারবেন দিবেন; আর না দিতে পারলে স্বাভাবিক ভাড়া নেওয়া উচিত। অথবা কেউ কম বকশিশ দিতে চাইলে সেটা গ্রহণ করা উচিত।
গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড থেকে পল্টন মোড়ে এসেছেন আসীম মিয়া। তিনি বলেন, আমি নিয়মিত এখানে আসি ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে। কিন্তু আজ ভাড়া নিয়েছে ৪০ টাকা। ঈদের বকশিশ হিসেবে ২০ টাকা বেশি নিয়েছে। এভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে বকশিশ হিসেবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা ভালো কিছু নয়।
বিহঙ্গ বাসের স্টাফ মোস্তফা আলী বলেন, ঈদের আগে ঢাকার সব বাসই এমন বেশি ভাড়া নেয়। আমাদেরও ঈদে খরচ আছে কিন্তু মালিক পক্ষ থেকে কিছু দেয় না। তাই বাধ্য হয়ে যাত্রীদের থেকে কিছুটা ঈদ বকশিশ নেওয়া হচ্ছে। তবে কারো কাছ থেকে জোর করে আমরা বকশিশের টাকা নিচ্ছি না। কেউ না দিতে চাইলে তার থেকে আসল ভাড়া নিচ্ছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাসের একজন স্টাফ বলেন, ঈদ আসলে মালিক পক্ষ কিছু দেওয়ার চেয়ে তারা আরও জমার টাকা বেশি চান। কিন্তু এখন রাস্তায় যাত্রী নাই। ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। আমরা ঈদ করবো কীভাবে সেটাই জানি না। যাত্রীদের কাছ থেকে যা পাচ্ছি তাই দিয়েই যেভাবে কাটে আরকি। তবে এখন আমরা বাসের জমার টাকাই ঠিকমতো দিতে পারছি না।
কালের আলো/এএএন