৪২ নেতা ঠাঁই পাচ্ছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে

প্রকাশিতঃ 9:42 am | April 20, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

প্রায় এক বছর হতে চললেও নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্বে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

রোববারের (২১ এপ্রিল) মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া নির্দেশের পরেও তাঁরা ঢিমেতালে পথ চলছেন।

ফলে কমিটি গঠনে হাত দিতে হয়েছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডকে।

তাঁরা ইতোমধ্যে শোভন-রাব্বানীর জমা দেওয়া ৪২ জনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। দুই বছর মেয়াদি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ২৭১ থেকে ৩০১ সদস্যের হতে পারে। খবর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রের।

সূত্র জানায়, শোভন-রাব্বানীর নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জ, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার সন্তানরা অন্তর্ভূক্ত হচ্ছেন। এ ৪২ জনের বেশিরভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তবে তাদের পদ-পদবী এখনো ঠিক হয়নি।

নতুন কমিটিতে ইন হচ্ছেন এমন নেতারা হলেন- কুষ্টিয়ার রকিবুল ইসলাম বাঁধন, শরীয়তপুরের ফুয়াদ হোসেন শাহদাত, পিরোজপুরের বরকত হোসেন হাওলাদার, পাবনার আবু সাইদ কনক, রংপুরের হায়দার হোসেন জিতু, নোয়াখালীর খাজা যোয়ের সুজন,

কিশোরগঞ্জের মোবারক হোসেন, বরিশালের খাদিমুল বাশার জয়, বুয়েটের শুভ্র জ্যোতি শিকদার, ময়মনসিংহের মিয়া মোহাম্মদ রুবেল, মাসুদ লিবন, রাজশাহীর শ্রাবণী শায়লা, নাহিদ হাসান শাহিন,

গোপালগঞ্জের মহিউদ্দিন, শরীয়তপুরের শাহাদাত হোসেন, ইসরাত সাদিয়া খান মিলি, মাহমুদুল রহমান মিঠু, তামান্না তাসনিম তমা, আসিকুর রহমান রাজীব, পরশ রহমান, গোপালগঞ্জের সায়েম খান,

কিশোরগঞ্জের ইশাত তাসমিয়া ইরা, টাঙ্গাইলের মেহেদী হাসান রনি, বগুড়ার রাকিব হাসান রাকিব, গাজীপুরের রাকিব আহমেদ রাসেল, বরিশালের আল নাহিয়ান খান জয়, ময়মনসিংহের মো. সোহান খান, গোপালগঞ্জের আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মাগুরার শাওকতুল হাসান সৈকত,

গাইবান্ধার আল মামুন, ফরিদপুরের মো. রনি, নওগাঁর আপেল মাহমুদ, বরিশালের সোলায়মান ইসলাম মুন্না, পিরোজপুরের মামুন বিন সত্তার, ফরিদপুরের বিদ্যুৎ শাহরিয়ার কবির, সুনামগঞ্জের মাহবুব খান,

মুন্সীগঞ্জের সারমিন ইতি, বরগুনার আরিফুজ্জামান ইমরান, ঝালকাঠির ইমরান জমাদ্দার, মাগুরার বেনজীর হোসেন নিশি, বরিশালের শেখ ওয়ালী অসিদ ইনান ও ভোলার ইয়াজ আল রিয়াদ।

দলটির এক নেতা বলছেন, কমিটিতে নাম নির্ধারণ করতে গিয়ে তীব্র মতানৈক্য তৈরি হয়েছে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাঝে। দু’জনই দু’জনের প্রস্তাব করা নামে আপত্তি তুলছেন।

ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি গঠনে বিলম্ব হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আবারো কমিটি ঝুলে যায় কীনা এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সূত্র মতে, ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে না পারার পাশাপাশি চার নেতার ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ।

বিশেষ করে গত শনি ও রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহযোগিতায় দুই দিনব্যাপী বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজনকে ঘিরে মঞ্চ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কানেও গিয়েছে।

ওই ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। এতে চরম ক্ষুব্ধ হন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। এ জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের গণভবনে ডেকে পাঠান তিনি।

গত সোমবার রাতে গণভবনে যান আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা আজম, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও এস এম কামাল হোসেন।

পরে বিগত কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের থেকে তালিকা নিয়ে এবং ক্লিন ইমেজধারী ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে কমিটি ঘোষণার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

এসব বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী’র সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

কালের আলো/এসআর/ওএইচ