দক্ষিণ সুদানকে সামরিক ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতার আশ্বাস সেনাপ্রধানের (ভিডিওসহ)

প্রকাশিতঃ 5:12 am | April 25, 2019

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আস্থা ও নির্ভরতার অনন্য প্রতীক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বজুড়ে তাঁরা পতপত করে উড়াচ্ছে অনেক রক্তের দামে কেনা লাল-সবুজের পতাকা।

পেশাদার শান্তিরক্ষীরা বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল করছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।

আরো পড়ুন: কঙ্গোর পর দক্ষিণ সুদানেও ব্যস্ত সেনাবাহিনী প্রধান, ফোর্স কমান্ডারের সঙ্গে সাক্ষাত

ব্যতিক্রম নয় আফ্রিকান ভূ-খন্ড দক্ষিণ সুদানও। সেখানেও শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সামাজিক এবং মানবিক কাজেও ব্যাপক অবদান রেখে স্থানীয় সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও নজিরবিহীন ভালোবাসা কুড়িয়েছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

সেখানে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর এসব বিপুল কর্মযজ্ঞের পেছনে রয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও সতের কোটি বাংলাদেশীর সমর্থন।

ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের সেনা সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের দৌলতে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ঝরে দক্ষিণ সুদানের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল গ্যাব্রিয়েল জক রিয়াক’র কন্ঠেও।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে সেখানকার সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে সাক্ষাতকালে তিনি নিজের মুগ্ধতার কথা জানান। সাক্ষাতকালে দুই দেশের সেনাবাহিনী প্রধান পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় করেন।

আরো পড়ুন: দক্ষিণ সুদানে বাংলাদেশের ঐতিহ্য তুলে ধরলেন সেনাপ্রধান

একই সঙ্গে এই বৈঠকে সামরিক সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও পেশাগত সহযোগিতা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। দক্ষিণ সুদানের সেনাপ্রধান সামরিক এবং প্রশিক্ষণেও বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাকে অতীতের ধারাবাহিকতায় সামনের দিনগুলোতেও সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

পরে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান দক্ষিণ সুদানের জেনারেল গ্যাব্রিয়েল জক রিয়াককে একটি ক্রেস্ট উপহার দেন। এর আগে দক্ষিণ সুদানের সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল জেনারেল আজিজ আহমেদকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

পেশাদারিত্ব, ধৈর্য্য, সততা, দক্ষতা, মানবতাবোধ এবং যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার প্রস্তুতিতে গোটা বিশ্বেই সফলতার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বীরত্বগাঁথা ছড়িয়ে পড়েছে আয়তনে বাংলাদেশের চারগুণ পূর্ব মধ্য আফ্রিকার ভূখন্ড দক্ষিণ সুদানেও।

সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সামাজিক কাজেও অবদান রাখছে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। তাঁরা মৌলিক অধিকার বঞ্চিত দুর্গম অঞ্চলের মানুষকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে আশার আলো।

আরো পড়ুন: কঙ্গোতে সেনাপ্রধান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের প্রশংসায় ফিলহো-গ্রেসলি

নেতৃত্ব দিচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়নেও। ফলে দক্ষিণ সুদানেও স্বনামে খ্যাত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। একই রকম চিত্র মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতেও।

গত কয়েকদিন শান্তিরক্ষা মিশন এলাকা কঙ্গো ও দক্ষিণ সুদান পরিদর্শনকালে নিজ বাহিনীর সদস্যদের কর্মদক্ষতায় যেন এক টুকরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবিতে রীতিমতো অভিভূতই হলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

এর আগে গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে কঙ্গো ও দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এই সরকারি সফর শেষে আগামী ২৭ এপ্রিল তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

কঙ্গো সফরকালে বুধবার (১৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো’র ফোর্স কমান্ডার লে: জেনারেল ইলিয়া রর্ডিগেজ মার্টিনস ফিলহো ও ডেপুটি এসআরএসজি ডেভিড গ্রেসলি’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

পরে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সেনাবাহিনী প্রধান কঙ্গোর ইতুরি প্রদেশের গভর্নর মি: প্যাসিফিক কেটা উপার’র সাথেও এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।

দক্ষিণ সুদানেও কর্মব্যস্ততার মধ্যে দিয়েই দিন অতিবাহিত করেন সেনাপ্রধান। দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন আনমিসের এসআরএসজি ডেভিড শিয়েরার এবং ফোর্স কমান্ডার লে. জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক মুশিও কামানজির সঙ্গে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

দু’টি দেশেই সেনাবাহিনী প্রধান সেখানে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কন্টিজেন্টসমূহ পরিদর্শন করেন এবং দরবারে সেনাসদস্যেদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি পৃথকভাবে কন্টিজেন্টসমুহের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যেও বক্তব্য প্রদান করেন।

কালের আলো/এইকেএ/এএএমকে