ঘূর্ণিঝড় ফণী’র আঘাতে নিহত ৪ : ত্রাণ সচিব
প্রকাশিতঃ 2:49 pm | May 04, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত হানার পর বাংলাদেশে চারজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল।
শনিবার(৪ মে) দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সচিব এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম,
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, তথ্য সচিব মো. আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে শনিবার (৪ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়ার খাল এলাকায় ঘরের নিচে চাপা পড়ে দাদি ও নাতির মৃত্যু হয়েছে। মৃত নুরজাহান বেগম (৬০) কালিয়ার খাল এলাকায় আব্দুল বারেকের স্ত্রী ও তার নাতি জাহিদুল ইসলাম (৮)।
এছাড়া ঝড়ে ঘরের মধ্যে চাপা পড়ে নোয়াখালীর চর আমানউল্লাপুর ইউনিয়নে একজন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা। এতে বিভিন্ন ইউনিয়নে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় ফণীর কবলে পড়ে আনোয়ারা খাতুন (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ফণীর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশ মেঘলা, দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এক সময় মধ্যরাতে বাংলাদেশে আঘাত হানার কথা বলা হলেও ভারতের পুরী থেকে কিছুটা দিক পরিবর্তন করে স্থলপথে খড়গপুর দিয়ে ঢোকায় এগোতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আবাহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ফণী। ফণী ভারতের উড়িষ্যা থেকে বাংলাদেশের দিকে ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে বলেও জানান। একই সঙ্গে স্থলভাগের ওপর দিয়ে আসায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা কম বলেও মন্তব্য করেন এই আবহাওয়াবিদ।
এদিকে ভোর হওয়ার আগেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে দেশটিতে গত দুই দশকের মধ্যে আসা সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফণী।
কালের আলো/জেএস/এমএইচএ