‘নিবিড় সম্পর্ক’ মন্ত্রী তাজুল ও স্বপনের,কাজ ভাগে গতি বাড়বে মন্ত্রণালয়ে
প্রকাশিতঃ 8:26 am | May 22, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে এককভাবে এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সব ফাইল অনুমোদনের জন্য যাবে মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলামের কাছে।
একইভাবে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ফাইল স্বাক্ষর করবেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।
ফলে একই কাজ দু’জন মন্ত্রীকে করতে হবে না। এতে সময় বাঁচার পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের কাজেও গতি বাড়বে। প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী।
জানা যায়, অতীতেও সকল সরকারের মেয়াদে প্রতিমন্ত্রী পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ দেখতেন পূর্ণমন্ত্রী। গত মেয়াদেও ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দেখেছেন।
মশিউর রহমান রাঙ্গা পালন করেছেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের দায়িত্ব।
বিএনপি’র শাসনামলেও ব্যারিষ্টার আব্দুস সালাম তালুকদার ও আব্দুল মান্নান ভূইয়ার প্রতিমন্ত্রীরা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় দেখতেন।
মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সব ফাইল প্রতিমন্ত্রী দেখার পর অনুমোদনের জন্য মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলামের কাছে যেতো। এতে সময়ক্ষেপণ হতো বেশি।
এখন এসব ফাইল সরাসরি মন্ত্রী’র কাছে যাবে। একইভাবে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ফাইল প্রতিমন্ত্রীর স্বাক্ষরে নিষ্পত্তি হবে।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের তুলনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্ম পরিধি ও দায়িত্ব অনেক বিশাল। বাৎসরিক বাজেট প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।
এ বিভাগের প্রতিদিনের ফাইলের সংখ্যাও অসংখ্য। এসব কারণে পূর্ণমন্ত্রীকে এ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খবর বিশ্বস্ত সূত্রের।
জানতে চাইলে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য কালের আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ায় একই কাজ দুইবার করতে হবে না।
পল্লীর ফাইল আমার কাছেই নিষ্পত্তি হয়ে যবে। আর স্থানীয় সরকারের ফাইল মন্ত্রী সরাসরি দেখবেন। এতে করে কাজের গতি বাড়বে।’
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দ্বন্দ্বের বিষয়ে প্রকাশিত একটি খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলামের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় অত্যন্ত পড়াশোনা জানা, বিচক্ষণ এবং দক্ষ একজন প্রশাসক হিসেবে গত ৫ মাসে আমাকে এবং মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তাদের মুগ্ধ করেছেন।
যে কারণে তিনি বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকায় আমি এবং সচিবসহ অন্যান্য সবাই তাঁর অনুপস্থিতি তীব্রভাবে অনুভব করেছি এবং প্রার্থনা করেছি দ্রুত তাঁর আরোগ্য লাভের জন্য। আমি অসুস্থ মন্ত্রী মহোদয়কে দেখতে থাইল্যান্ডে যেতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, আমি নাই। আপনি আসলে কাজে বিঘ্ন ঘটবে। তিনি বলেছেন, আমার অবর্তমানে আপনি মন্ত্রণালয় দেখুন। এবং আমিও তাই করছি।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা দু’জন এরই মধ্যে কুষ্টিয়া, যশোর, সুনামগঞ্জ, শেরপুরে বিভিন্ন জেলা সফরে একই গাড়িতে ভ্রমণ করেছি। এবং পথিমধ্যে মন্ত্রণালয়ের গতি বৃদ্ধি এবং ভাল কাজ করার জন্য বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রী মহোদয় আমার নির্বাচনী এলাকা সফর করেছেন। আমার এলাকার জনগণ এখনও তাকে স্মরণ করে।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও মন্ত্রী মহোদয়ের এলাকায় গিয়ে মুগ্ধ হয়েছি। একজন নেতাকে সাধারণ নেতা-কর্মী ও স্থানীয় জনসাধারণ এতো প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে।
তাই এরকম একজন ব্যক্তির কাছে আমি যতদিন কাজ করার সুযোগ পাবো ততই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবো। এক্ষেত্রে মন্ত্রী মহোদয়ের ক্ষমতা হ্রাস নয় বরং এককভাবে অনেক কাজ করার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
আমাদের মাঝে সম্পর্কগত কারণে এবং প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য সফল করতে দায়িত্ব আলাদাভাবে বন্টন হলেও মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে মন্ত্রণালয় পরিচালনায় সদা সর্বদাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব।
বিদেশে চিকিৎসাধীন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলামের সঙ্গে এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের আলোকে বলেন, ‘আমি চিকিৎসাধীন রয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যেই দেশে ফিরবো।
প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে সঙ্গে আমার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে দেশ ও জাতির স্বার্থেই।’
কালের আলো/এইকেআ/এএএমকে