স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কর্মীসভা রূপ নিলো জনসভায়
প্রকাশিতঃ 3:31 am | March 05, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :
রাজধানীর মনিপুরীপাড়াস্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের বাসভবন সরগরম। ঠাসা দলীয় নেতা-কর্মীদের ভিড়ে। বাসার চৌহুদ্দী থেকে শুরু করে বিশাল ফটক, সামনের সড়ক কোথাও ঠাঁই নেই তিল ধারণের। দলের প্রাণশক্তি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের স্বত:স্ফূর্ত উপস্থিতিতে কর্মীসভা রূপ নিয়েছে জনসভায়।
ঘটনাটি রোববার (০৪ মার্চ) রাতের। দলের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা থেকে শুরু করে কর্মীসভার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সবার কন্ঠেই এমন জনসমাগমের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা।
আগামী ৭ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিশাল জনসভা সফল করতেই এদিন রাতে তেজগাঁও, রমনা, শিল্পাঞ্চল ও শেরে বাংলা নগর নিয়ে গঠিত ঢাকা-১২ আসনের অন্তর্ভূক্ত দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়েই কর্মীসভা করেছেন মন্ত্রী।
বিশাল এ জনসভায় স্মরণকালের বৃহৎ জনসমাগম ঘটাতে জোর প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছেন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির এ রাজনীতিক। দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন জনসভায় বৃহত্তর গণজমায়েতের প্রস্তুতি নিতে।
দলীয় নেতা-কর্মীরাও জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজধানীতে নিজেদের জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করার মোক্ষম এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না তাঁরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল নিজেও বলেছেন, ‘আগামী ৭ মার্চ দলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে এ জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে। নিজের নির্বাচনী এলাকার কর্মী সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, কর্মীসভা আর একটু হলে জনসভা হয়ে যেতো।’
দেশের ‘স্পর্শকাতর’ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীত্বে সফল এ মানুষটি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কারণেই আমাদের নেতা-কর্মীরা উপলব্ধি করেছেন নৌকা ও শেখ হাসিনার বিকল্প কিছু নেই। নৌকার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। শেখ হাসিনা অবশ্যই আগামীতেও প্রধানমন্ত্রী হবেন।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট ভাষায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ জনসভায় মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিবেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের উন্নয়ন-উন্নতির জন্য আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই, এমন বার্তাও সমাবেশ থেকে আসবে বলে মনে করছেন দলটির তৃণমূলের কর্মীরা।
নিজ বাসভবনে কর্মী সমাবেশে দলটির শেকড় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে মুগ্ধ একাত্তুরের রণাঙ্গণের এ বীর সেনানী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণের প্রতিটি বাক্য, শব্দ ছিল আমাদের জন্য নির্দেশনা। কীভাবে দেশের স্বাধীনতা আসবে তা ভাষণে উল্লেখ ছিল।’
এ কর্মী সভায় বিশাল শোডাউন করার অঙ্গীকার করেছেন মন্ত্রী’র নির্বাচনী এলাকার অন্তর্ভূক্ত দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান কর্মী সভায় জানিয়েছেন, তাদের টার্গেট জনসভায় এখান থেকে এক লাখ নেতা-কর্মী যোগ দিবে। ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশগুলো লোকে লোকারণ্য হয়েছে।
আমাদের জন্য আগামী ৭ মার্চের জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করা একটি চ্যালেঞ্জ। এ জনসভায় সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে বার্তা দিবে তারা বিএনপি’র সঙ্গে নেই। শেখ হাসিনা এবং নৌকার সঙ্গেই তাঁরা আছেন।
কর্মীসভার ফাঁকেই মিডিয়া কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র সব সময়ই চলছে। আমরা জঙ্গিদের মুলোৎপাট করতে পারিনি। দেশের জনগণ সজাগ থাকায় নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা ঘটনা ঘটাতে পারছে না। আমাদের প্রিয় জাফর ইকবাল সাহেবকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।’
মন্ত্রী বলেন, যে সন্ত্রাসী এটি ঘটিয়েছে তাকে নিরাপত্তা বাহিনী ধরে ফেলেছে। তাঁর দেয়া তথ্যে ঘটনার মোটিভ কারা এর পেছনে জড়িত তা বের করা হবে। তাঁর আত্নীয় স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কার আদেশ বা নির্দেশে এ নৈরাজ্য সৃষ্টির চক্রান্ত তা শিগগির জানানো হবে। মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা আর অন্ধকারে ডুবে যেতে চাই না।
বৃহৎ এ কর্মী সভায় বক্তব্য রাখেন তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রিন্সিপাল আব্দুর রশিদ, আলহাজ্ব শফি উল্লাহ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান, আজিজুল হক রানা, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান প্রমুখ।
কালের আলো/এসএস/আরটি