আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে ‘স্যালুট’ শেখ হাসিনার
প্রকাশিতঃ 9:29 pm | March 07, 2018
কালের আলো রিপোর্ট:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে, জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানোয় নিজ দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রশংসা করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ বাজাবার কোনো অধিকার ছিল না। যেখানেই ভাষণ বাজত, সেখানেই তারা বাধা দিত।’
‘আমি স্যালুট করি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের, আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আমাদের নেতা-কর্মীদেরকে। সকল বাধা উপেক্ষা করে গ্রামে গঞ্জে এই ভাষণ বাজানো হতো।’
বুধবার বিকেলে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণে সোহরাওয়ারার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এই প্রশংসা করেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে ক্ষমতায় বসানোর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টার কথা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চ বাজাত, ১৭ মার্চ, ২৬ মার্চ এমনকি ১৫ আগস্ট বাজাত। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের কত নেতা-কর্মী আহত হয়েছে, মৃত্যুবরণ করেছে, গ্রেপ্তার হয়েছে, নির্াতনের শিকার হয়েছে, তারপরও তারা থেমে থাকেনি। এই ভাষণ তারা বাজিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি টেলিভিশনে যদি কোনো প্রসঙ্গে আসত ওই নামটা মুছে যেত, যদি অনেক ছবির মধ্যে ছবি আসত, ওই ছবিটা ঝিরঝির করে দেখানো হতো। এমনভাবে বিকৃত ইতিহাস এবং চরিত্র হনন করা হয়েছিল।’
‘কিন্তু ইতিহাস কেউ কোনোদিন মুছে ফেলতে পারে না, ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়। ইতিহাসকে কেউ নিশ্চিহ্ন করতে পারে না। আজকে তা প্রমাণ হয়েছে।’
‘যে জাতির পিতার নামটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং সংগ্রামের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছিল। আজকে বিশ্ব ঐহিত্যের আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিলে এই ভাষণ স্বীকৃতি পেয়েছে।’
‘রান্নাও বন্ধ করে দিয়েছিল বাঙালি পাচকরা’
বঙ্গবন্ধুর ভাষণে অসহযোগের যে ডাক কীভাবে পালিত হয়েছে, তার একটি উদাহরণও দেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘একদিকে ইয়াহিয়ার একের পর এক সামরিক ফরমান জারি হতো, অন্যদিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে আওয়ামী লীগের নির্দেশ যেত। বাংলাদেশের মানুষ ইয়াহিতায় সামরিক ফরমান মানত না, সেটা ছুড়ে ফেলে দিত।’
‘ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করতে। সেখানে বাঙালি বাবুর্চি ছিল, তারা রান্না করেনি, একদিন সে গরম খাবার পায়নি। তখন রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ৩২ নম্বরে ফোন গেল, আপনি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, কেউ তো এখন কাজ করে না। বাঙালি সব হাত তুলে বসে আছে, নির্দেশ না পেলে কাজ করবে না। একমাত্র ৩২ নম্বর থেকে যদি বলা হয়, তাহলেই তারা চুলা জ্বালাবে, রান্না করবে না।’
‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে যখন বলা হয়, তখন তারা রান্না করল। সেদিনই ইয়াহিয়া বুঝে গিয়েছিল, এই দেশে তাদের কোনো স্থান নেই।’
বঙ্গবন্ধুর কথা উল্লেখ করে তার কন্যা বলেন, ‘তিনি শুধু বাংলার জনগণকে ভালোবাসতেন, বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করতেন আর বাংলার মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করে গেছেন।’
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের আমলের উন্নয়ন তুলে ধরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এবং জিয়াউর রহমানের আমলের ‘অপশাসন’ ও ‘নির্যাতনের’ কথা তুলে ধরেন। বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে।
বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীরা যেন আর কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে না পারে।
কালের আলো/ওএইচ