বাজেট নিয়ে কী বলছেন বাকৃবি ও জাককানবি’র শিক্ষকরা?
প্রকাশিতঃ 9:44 am | June 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
২০১৯-২০ অর্থ বছরের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশের একদিন পরেও চলছে নানামুখী বিশ্লেষণ। এ বাজেট ঘোষণার পর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম না বাড়ায় খুশি হয়েছেন অনেকেই। তাদের ভাষ্যে এ বাজেট জনকল্যাণমুখী ও উন্নয়নের। আবার এ বাজেটে তুষ্ট হতে পারেননি কেউ কেউ।
এমন অবস্থায় বাজেটকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকরা? তাঁরা বলছেন, উচ্চভিলাষী এ বাজেট বাস্তবায়নে সক্ষমতা ও দক্ষতা উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ।
এ বাজেটে আয় ও ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আবার কৃষি ও কৃষকের জন্যও বাজেটে খুব একটা সুখবর নেই বলেও মনে করেন তাঁরা। শুক্রবার (১৪ জুন) বিকেলে কালের আলোর সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন এ শিক্ষকরা।
বাজেট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অর্থনীতি অনুষদের সাবেক ডীন ও কৃষি পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র মোদক বলেন, ‘মধ্যবিত্তের জন্য বাজেটে চমক তৈরি করতে পারেননি অর্থমন্ত্রী। তিনি ধনী লোকদের তুষ্ট করেছেন।
তাঁরা সম্পদের ওপর সারচার্জে ছাড় পেয়েছেন। প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে করদাতা বাড়ানো সম্ভব হলে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। তবে উচ্চভিলাষী এ বাজেটে করহার না বাড়ানোর বিষয়টি ইতিবাচক।’
বাজেটে জনগণের প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি জানিয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ব্যবসা ও বিপনণ বিভাগের অধ্যাপক ড.শেখ আব্দুস সবুর বলেন, ‘এ বাজেটে আয় ও ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এখানে যে পরিমাণ আয় দেখানো হয়েছে সেই পরিমাণ আয় অর্জন কঠিন।
বাজেটে শিল্প ও সেবা খাতে ১০ শতাংশ কর দিয়ে টাকা বৈধ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর কথা বললেও এটি অনেক কঠিন।’
অবশ্য বাজেটে কৃষি ও কৃষকের জন্য খুব একটা সুখবর নেই বলে জানান এ দু’অধ্যাপক। তাঁরা বলছেন, এবারো আগের মতোই কৃষিতে বরাদ্দ ও ভর্তুকি বাড়ানো হয়েছে।
নিয়ম রক্ষার কারণেই গতবারের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটে ৩ হাজার ৩’শ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়লেও এতে কৃষক উপকার হবে না, তাদের স্বার্থ রক্ষা করা হবে না বলেও মত দিয়েছেন কৃষি পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র মোদক ও কৃষি ব্যবসা ও বিপনণ বিভাগের অধ্যাপক ড.শেখ আব্দুস সবুর।
বাজেটের ভাল-মন্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে এ বাজেট গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এ বাজেট বাস্তবায়ন হলে প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের ওপরে হবে।
বাজেটে রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ যুগান্তকারী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ বাজেটে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎস কর ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে এ বাজেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি কম থাকায় খাদ্যপণ্যের দাম বাড়বে না। বিশেষ করে চালের দাম আগামী এক বছরে বাড়ার সম্ভাবনা নেই। বিশাল অংকের এ বাজেট উন্নয়নে সহায়ক।’
কালের আলো/এমসিআর/এমএইচ