টাইগারদের গর্জনে সচিবালয়ে অন্য রকম একদিন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর

প্রকাশিতঃ 1:29 am | June 18, 2019

খেলা প্রতিবেদক, কালের আলো :

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয় ছুটি হয়েছে বিকেল ৫ টায়। কিন্তু যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি ঠাঁই বসে থাকলেন রাত সাড়ে ১০ টা অবধি। টিভি পর্দার সামনে থেকে চোখের পলক যেন পড়ছেই না! মন্ত্রীর গভীর মনোযোগ টাইগারদের সঙ্গে ক্যারিবিয়ানদের ম্যাচের দিকেই।

কখন কী ঘটে? সেমিফাইনাল দৌড়ে সাকিব-লিটনদের কীর্তিগাঁথার বিরল মুহুর্ত যদি মিস হয়! তবে ইংলিশদের সমারসেটের ছোট্ট শহর টনটনের মাঠ থেকে কোটি কোটি মাইল দূরে বসেই বিশাল রানের পাহাড় টপকে অবিস্মরণীয় এক গৌরবময় মুহুর্তের স্বাক্ষী হতেই কীনা সচিবালয়ের নিজের কক্ষকে মিনি স্টেডিয়ামই বানিয়ে নিলেন এ প্রতিমন্ত্রী!

সঙ্গে দর্শক-সমর্থক বলতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.জাফর উদ্দিন, যুগ্ম সচিব (স্পোর্টস) ওমর ফারুক, উপসচিব মজিবুর রহমানসহ নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাকিব-লিটন প্রলয় যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের তীব্র আকাঙ্খিত জয়ের বন্দরে ঠিক তখনই হাফ ছেড়ে নিজের গাড়িতে করে সোজা বাসায়।

সাকিবের ১২৪ রানের রোমাঞ্চকর ইনিংস, লিটন দাসের ৯৪ রানের সেঞ্চুরি ছুঁইছুঁই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ঠিকই চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে টাইগারদের বিজয় উদযাপন করলেন নিজের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে, বাসাতেই।

সোমবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কালের আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে অন্য রকম এক উত্তেজনায় যেন কাঁপছিলেন প্রতিমন্ত্রী রাসেল। বলছিলেন, ‘এ বিজয়ের আনন্দ অনুভূতি কোন শব্দ বা বাক্যে প্রকাশ করা কঠিন। এ বিজয় বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের।’

ঘুরেফিরেই সাকিবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ জাহিদ আহসান রাসেল- ‘এ বিশ্বকাপে টানা ৪ ইনিংসে দুই ফিফটি, দু’টি সেঞ্চুরি, বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড সবই আমাদের লাল-সবুজের পতাকাধারী বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার সাকিবের কব্জায়। বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ’র পর সাকিবের ‘ব্যাক টু ব্যাক’ সেঞ্চুরি।’

আর বিধ্বংসী লিটন দাস? নামটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গেই যেন লুফে নিলেন প্রতিমন্ত্রী। ‘ছেলেটি তুলনাহীন। ৮ চার ও ৪ ছয়ে ৬৯ বলে ৯৪ রানের হার না মানা ইনিংস সত্যিই মুগ্ধ করেছে আমাদের। টনটন থেকেই শুরু হলো আমাদের বিশ্বকাপের সেমির স্বপ্নযাত্রা’ বলেই থামলেন এক সময়কার এ কৃতি ফুটবলার।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘টাইগারদের অবিস্মরণীয় এ বিজয়ে দেশবাসীর সাথে আমিও আনন্দিত ও গর্বিত। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের জয়ের এমন ধারা অব্যাহত থাকবে। ক্রিকেটারদের আজকের অসাধারণ এ নৈপুণ্য বিশ্বকাপের অন্যান্য ম্যাচেও প্রতিফলিত হবে বিশ্বাস আমার।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন মোটেও অমূলক নয় বলেই মনে করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। সেই উচ্চাকাঙ্খা জানিয়ে কালের আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ফলে বিশ্বকাপে আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখাটাও অমূলক কোন বিষয় নয়।

আমরা সাউথ আফ্রিকার মতো টিমকে, উইন্ডিজের মতো টিমকে হারানোর সামর্থ্য রাখি। এর আগে প্রতিটি টিমকেই আমরা হারিয়েছি। আমাদের ছেলেরা সেমিফাইনাল খেলবে। বিশ্বকাপে একটি ভালো ফলাফল নিয়েই বীরের মতো নিজ দেশের মাটিতে ফিরবে’ যোগ করেন জাহিদ আহসান রাসেল।

কালের আলো/এমএইচ/এমএএএমকে