অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশ এখন অনন্য উচ্চতায় : স্পিকার

প্রকাশিতঃ 10:28 am | June 26, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশ এখন অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এক্ষেত্রে সাংসদদের অবদান অনস্বীকার্য বলেও উল্লেখ্য করেন তিনি।

স্পিকার বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্যরা সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। সঙ্গত কারণে জনগণের কাছে তারা জবাবদিহি করে থাকেন। জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কারণে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সংসদ সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

মঙ্গলবার(২৫ জুন) নিজ কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান দাইসাকু কিহারার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদলের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা ও আইএমএফ এর কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন।

সরকারের মূল লক্ষ্য বৈষম্য দূর করে দারিদ্রমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রবৃদ্ধি বর্তমানে ৮.১ শতাংশ। রেমিটেন্স ও রিজার্ভও সমান গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন সেবা পৌঁছে দিচ্ছে বর্তমান সরকার।

তিনি বলেন, জনবহুল বাংলাদেশের একটা বড় অংশই হচ্ছে তরুণ। তাই বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। তরুণ জনসমষ্টিই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার মূল কারিগর। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে বিগত দশ বছর কাজ করছে সরকার।

শিরীন শারমিন বলেন, ইতোমধ্যে ১শ’টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হয়েছে। ফলে কর্মসংস্থান ও বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ সর্বপরি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার মানবসম্পদ উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

স্পিকার আরো বলেন, শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অতীতের বিদ্যুত ঘাটতি মিটিয়ে বর্তমানে ২০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এরফলে তৃণমূল পর্যায়ে শিল্প ও কলকারখানা গড়ে উঠছে।

যে কোন প্রশিক্ষণ দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণরা প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই তৈরী করতে পারবে।

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ শক্ত অর্থনৈতিক ভিতের ওপর দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থানকে ধরে রাখতে দক্ষ মানব সম্পদের প্রয়োজন। আর দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এ সময়ে তিনি আইএমএফ প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে অধিক সংখ্যক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার আহবান জানান।

আইএমএফ প্রতিনিধি প্রধান অর্থনৈতিক উন্নয়নে সংসদ সদস্যগণকে অধিক সম্পৃক্তকরণের উপায় সম্পর্কে স্পিকারকে অবহিত করেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় দাইসাকু কিহারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে দেশের দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রশংসা করেন।

তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ অনুকরণীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষিসহ অন্যান্য শিল্পে বাংলাদেশ বেশ অগ্রসরমান। তরুণ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নে অনেক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে।

এসময় একাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. রুস্তম আলী ফরাজী, বাংলাদেশে নিয্ক্তু আইএমএফ এর আবাসিক প্রতিনিধি র‌্যাগনার গুডমুন্ডসনসহ সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এআর/এমএম