রিফাতের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রকাশিতঃ 1:50 pm | June 27, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে যুবক হত্যার ঘটনায় জড়িতদের যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, বরগুনার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। যেকোনো মূল্যে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম ও সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে এটা (হামলা) একটা নৃশংশ ঘটনা। একটা মর্মান্তিক ঘটনা। আমি যতোটা পুলিশ সোর্সে জানতে পেরেছি এবং আমাদের মিডিয়াতেও খবর এসেছে, বিষয়টি অনেকটা ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং প্রেমঘটিত একটা বিষয়। সেখান থেকে ব্যক্তিগত বিদ্বেষের প্রকাশ ঘটেছে। অলরেডি একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতার করার প্রক্রিয়া চলছে।

‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পুলিশ অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হবে, তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।’

প্রধানমন্ত্রী কী নির্দেশ দিয়েছেন- জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার করার জন্য এবং বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত।’

এরকম ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কিনা- প্রশ্নে কাদের বলেন, সামগ্রিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে- এটা কি বলা যায়? এগুলো দু’একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বরগুনার ঘটনা তো আর রাজনৈতিক না। রূপগঞ্জের ঘটনাও রাজনৈতিক না।

‘এখন ঘটনাচক্রে সে একজন রাজনৈতিক দলের সদস্য, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত, ঘটনাটা তো রাজনীতির কারণে হয়নি এবং রাজনৈতিক কারণে আইন-শৃঙ্খলার কোনো অবনতি দেশের কোথাও ঘটেনি।’

তিনি বলেন, ‘দেশে বিরোধী দল আছে কিন্তু তারা এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি যেখানে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হবে। বরং তারা নিজেরা নিজেদের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত। তাদের দলীয় অফিসে তালা দিচ্ছে তাদেরই লোকেরা। এটাকে যদি অবনতি বলেন-তাহলে অবনতি হতে পারে। বাইরে কোনো রাজনৈতিক দৃশ্যপটে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, আপাতত ঘটনা ঘটার লক্ষ্মণও নেই।’

সার্বিকভাবে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে কিনা- প্রশ্নে কাদের বলেন, এ রকম ঘটনা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও ঘটে। এরকম ঘটনা ঘটে না এমন কোনো দেশ কী আছে? এরকম ঘটনা সারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ঘটছে। বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ না। সামাজিক অস্থিরতা অনেক দেশেই আছে। উন্নত দেশে আমরা প্রায়শই মিডিয়ায় রিপোর্ট দেখি এরকম ঘটনা ঘটছে।

হামলায় জড়িতরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তারা ভিতরে থাকেলে এরকম ঘটনা ঘটতো না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টা খতিয়ে দেখছে। মাদকের বিষয় হলে মাদকবিরোধী যে আইন আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যার তো বিচার হয়েছে, একটা রায় হয়েছে। বিচার কার্যক্রম চলছে। অনেকে ছাড়া পেয়েছে, অনেকের ফাঁসির আদেশ হয়েছে, যাবজ্জীবন হয়েছে, বিশ্বজিৎ হত্যায় সরকার কাউকে ছাড় দেয়নি।

‘এখানে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় বিচার হয়েছে। বিচারে ছাত্রলীগের কর্মীরও যাবজ্জীবন হয়েছে, বিচার হয়েছে। কাজেই এখানে সরকারের নমনীয় অবস্থানের কোনো প্রমাণ নেই।’

তিনি বলেন, বিচারটা (বিশ্বজিৎ) নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে যাবে। তারপরে আপিল বিভাগে যাবে। সব মিলিয়ে একটা বিচার প্রক্রিয়ার ব্যাপার। এখানে সরকার কোনো ছাড় দেয়নি।

কালের আলো/এনএল/এমএম