প্রীতিলতার শহরে আলো ছড়ালেন আইজিপির পত্নী হাবিবা জাবেদ, প্রশংসায় দুই মন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 9:49 am | June 30, 2019

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশ প্রধান, সিটি মেয়র থেকে শুরু করে সবাই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যই উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু নারী পুলিশের এগিয়ে যাওয়ার গল্পে বিধিবদ্ধ আলোচনার বাইরে একজনের তীক্ষ্ণ বক্তব্য স্পর্শ করেছে সবাইকে। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম শহীদ হওয়া বাঙালি নারী, বিপ্লব-বিদ্রোহ স্পন্দিত লাল অগ্নিশিখা প্রীতিলতার শহরে তিনিই সবার মন জয় করেছেন।

আরও পড়ুন : অনি:শেষ ‘আলোকবর্তিকা’ হাবিবা জাবেদের সেই অনন্য ‘অভিভাষণ’ (ভিডিও)

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তাঁর কথায় যুক্তিবাদী দার্শনিক প্রজ্ঞার প্রশংসা করেছেন।

তিনি হাবিবা জাবেদ, বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী’র জীবন সঙ্গী এবং পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভাপতি।

আদর্শবান ও সাহসী এ নারীর ভাষা, প্রয়োগ, উপমার ব্যবহার এবং যুক্তিনির্ভর বাক্যের উচ্চারণ যেন সবার থেকেই আলাদা। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কাজীর দেউরি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চতুর্থবারের মতো আয়োজিত বাংলাদেশ পুলিশ নারী অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তাঁর বহুমাত্রিক তথ্য নির্ভর বক্তব্যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে সেই অনুষ্ঠান লাইভ হওয়ায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে ঘরে বসে অনেকেই আলোকিত এ নারীর বক্তব্যে নিরন্তর প্রেরণা পেয়েছেন। কেউ কেউ তাকে বলছেন, অন্ধকার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করার মানসিকতার অধিকারী একালের বুদ্ধিবৃত্তির উজ্জ্বল এক তারকা।

সবার চিত্তে ইতিবাচক আশা জাগানিয়া পরশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত সংগ্রামী এ নারীর বক্তব্যে নারীর স্বীকৃতি, শিক্ষা, আত্মোন্নয়ন, সহমর্মিতা, ভালোবাসার নির্যাস থাকায় মাতৃরূপী স্বিগ্ধ অভিব্যক্তিতে তিনি অম্লান হয়ে থাকবেন। নিজের বিশ্বাস ও অকাট্য যুক্তিকে তুলে ধরার অপরিসীম সাহসের কারণেও একালের মেধাবী ও অগ্রসর একজন শাণিত মানুষ হিসেবেও আলোচনা চলছে তাকে ঘিরে।

মনস্বিতার দ্যুতিতে প্রোজ্জ্বল হাবিবা জাবেদ একজন পরিশ্রমী নারীর চিন্তা, চেতনা, স্বপ্নের প্রকৃত জাগরণ ঘটাতে চান। এই ইতিবাচক জাগরণের প্রণোদনা সৃজনে অগ্রণী হয়ে উঠতে পারেন পরিবারের সদস্যরাই সেই কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন নিজের বক্তব্যে। সমাজ-সংসার-চিন্তা-চেতনার অঙ্গণে আশাবাদী নারী ছুটে চলবে সামনের দিকে অযুত সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন।

নিজে নারী আবার তিনি দেশের পুলিশের এক সর্বোচ্চ কর্মকর্তার স্ত্রী। ফলে পুলিশের চাকরির মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীর পথচলা, লড়াকু মনোবৃত্তির বিষয়টিও তাঁর অজানা নয়। তিনি নিজেও নীতি-নৈতিকতা, অধ্যবসায়, নিয়ম ও নিষ্ঠার মধ্যে বড় হয়েছেন। পরিবার থেকেই পেয়েছেন মানবিক উদারতার শিক্ষা।

স্বামীর কর্মসূত্রেই দেশের নানা স্থানে বসবাসের অভিজ্ঞতায় অর্জন করেছেন মানুষের প্রতি অসীম ভালোবাসা। নিজে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়েছেন উচ্চশিক্ষা। দিনে দিনে নিজেকে তৈরি করেছেন একজন আদর্শ নারী হিসেবেই।

সেদিন কী বলেছিলেন পুনাক সভাপতি হাবিবা জাবেদ?
পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভাপতি হাবিবা জাবেদ সেই অনুষ্ঠানে শুরুতেই বলেন, ‘২০০৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশ উইম্যান নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন) যাত্রা শুরু করেছে। তাঁরা অসম্ভব সুন্দর সুন্দর সব কাজ করে যাচ্ছে। এইচআইভি এইডস নিয়ে কাজ করছে, মাঠ পর্যায়ের নারী পুলিশদের সমস্যা সমাধানের জন্য হটলাইন চালু করেছে।

তাঁরা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, বাচ্চাদের দেখা-শোনার জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার, এবং এই যে তাদের সুন্দর সুন্দর কাজ এরই একটি ধারাবাহিকতা চট্টগ্রামে এই এওয়ার্ড অনুষ্ঠানের উদযাপন বলে আমি মনে করছি। যদিও গতানুগতিকভাবে প্রোগ্রামটা ঢাকায় হয়, কিন্তু চট্টগ্রামে করার কারণে কষ্ট হয়েছে বাট এটার প্রয়োজনও আছে। এতে জনসম্পৃক্ততা বাড়ে, সচেতনতা বাড়ে এবং মানুষ উৎসাহিত হয়।’

তিনি বলেন, ভালো কাজের পুরষ্কার আর মন্দকাজের জন্য শাস্তি- এই ব্যবস্থাটা যদি চালু থাকে তাহলে ভালো কাজের মাত্রা বাড়ে, মন্দ কাজের মাত্রা কমে। সমাজে সোস্যাল জাস্টিস প্রতিষ্ঠিত হয়, যে সোস্যাল জাস্টিস বঞ্চনার অবসান ঘটায়। উন্নয়নের ভিত তৈরি করে এবং সেটাকে অব্যাহত রাখে।

আজকের এইযে পুরস্কৃত করা, ভালো কাজ যারা করেছেন, এটাকে আমি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি, বাংলাদেশ পুলিশের উন্নয়ন ও আমাদের জাতীয় উন্নয়নের জন্য’ যোগ করেন পুনাক সভাপতি।

আইজিপি পত্নী বলেন, ‘আমরা জাতীয় উন্নয়নের জন্য এমডিজি বহু আগেই, সময়ের আগেই অর্জন করতে পেরেছি। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সাসটেনেবল ডেভেলাপমেন্টে পৌঁছাতে চাচ্ছি এবং ২০৪১’র মধ্যে একটা উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই স্বপ্নটাকে আমি আর এখন স্বপ্ন মনে করি না। আমি মনে করি একটা নির্দিষ্ট টাইম পিরিয়ডের দুরত্ব কেবল, এটা আমরা ইনশাআল্লাহ অর্জন করতে পারবই।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করে হাবিবা জাবেদ বলেন, ‘আমরা যেভাবে আমাদের মাননীয় যোগ্যতম প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে চলতে পারছি। যেভাবে মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্র আমরা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এটা শুধু স্বপ্ন নয়, আমাদের উন্নত বাংলাদেশ দেখাও স্বপ্ন নয়।

তবে এখানে পৌঁছানোর জন্যে নারীর উন্নয়ন জরুরি। নারীর উন্নয়ন বলতে আমরা কেবল আয়বর্ধক কাজে যুক্ত হওয়াকেই গতানুগতিকভাবে মনে করি। কিন্তু মূল জায়গাটা হচ্ছে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা, তাদের স্বাধীনতা। এই জিনিসগুলোকেও বোঝায় যেটাকে আমরা এক কথায় উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট বলি।’

পুনাক সভাপতি বলেন, আর্থিক উপার্জন তার ক্ষুদ্র একটা অংশ বলে মনে করি। আমরা যেন পাশ্চাত্য ধ্যান ধারায় প্রভাবিত না হয়ে আমাদের যে মূল স্বকীয়তা সে যায়গাটায় একটু নজর দেওয়ার জন্য পুলিশ নেতৃবৃন্দ এবং আজকে এখানে হলে উপবিষ্ট মহিলা নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।

আমরা এই সমস্ত জায়গাগুলোতেও অসম্ভব অর্জন সাধন করেছি। প্রজনন স্বাস্থ্য, জেনডার ইকুইটি, আমার ইনকাম আমি কোথায় খরচ করব। এই প্যারামিটারেও আমরা অনেক এগিয়ে আছি সাউথইস্ট এশিয়ান কান্ট্রিগুলোর মধ্যে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একটা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত হওয়ার হারও বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে অনেক।

যেটা ২০১৭ সালে ছিল ১৬.২ মিলিয়ন, ২০১৯ এ সেটা ১৮.৬ মিলিয়ন। অর্থাৎ তিন বছরে প্রায় বেশি ৩০ লাখ নারী সরাসরি আর্থিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হয়েছেন।

যুক্তি দিয়ে পুনাক সভাপতি হাবিবা জাবেদ বলেন, ‘কর্মজীবি মহিলাদের হার আমাদের এখানে ৫৭% বলে এই রিপোর্ট বলছে। তবে আমি মনে করি কর্মজীবি মহিলাদের হার হান্ড্রেডে হান্ড্রেড পার্সেন্ট। কারণ মহিলাদের মধ্যে কোন বেকার নাই। মহিলারা ঘরে থাকেন অথচ কাজ করেন না। এটা কি আমরা কখনো জানি বা দেখেছি ? তাহলে কেন আমরা বলি আমার মা কিছু করেন না? আমি কিছু করিনা, এই কথাটা আমাদের একদমই বলা উচিত না।’

তিনি বলতে থাকেন, ‘আমাদের এ গৃহকর্মের আর্থিক কোন মূল্যায়ন হচ্ছেনা বলে আমরা এ কথাটা বলছি। তবে সকল মূল্যায়ন আবার আর্থিকভাবে হওয়া উচিতও নয়। গৃহকর্মের জন্য যে শ্রম নারী দেন, যে মমতা সেটা মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। এটা প্রাইজলেস, অমূল্য।

মা তার বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াবেন, সেটা কত টাকায় আপনি মূল্য নির্ধারণ করবেন। তিনি রাত জেগে ছেলের পাশে পড়াশোনার জন্য বসে থাকবেন, আপনি কত টাকা দিয়ে তাঁর মূল্য দিবেন? একজন নারী তার হাজব্যান্ডের চাকরিকে সুগম করার জন্য নিজে চাকরি ছেড়ে দেয়, আপনি কত টাকা দিয়ে এটা ভ্যালুয়েশন করবেন?’

হাবিবা জাবেদ বলেন, ‘আমরা যেন এ দু:সাহস না দেখাই, এবং আমরা নারীরা যেন এই ধরনের প্রচলিত ধ্যান ধারনার বশবর্তী না হই। এটা খুব জরুরি আমাদেরকে বুঝা। আমাদের উন্নয়ন করতে হবে আমাদের মত করে। হ্যাঁ পাশ্চাত্য থেকে আমরা ধ্যান ধারণা নিব তবে তাদের সবকিছু নিব না। আমাদের যা কিছু ভালো, তাকে সাথে নিয়েই আমরা আগাবো।

আমাদের এখানে নারীকে হিন্দু ধর্মে দেবীর মর্যাদা দেয়া হয়, মুসলমানদের মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত বলা হয়। আমি কেন তাদের মত নারী উন্নয়নের কথা বলব? আমাকে অনেক ওপরে মর্যাদা দিয়ে রেখেছে কিন্তু সেটা অর্জিত হচ্ছে না। দ্যাট ইজ ডিফরেন্ট থিং, এখন এই অর্জনটার জন্যে পুরুষদের শত্রু ভাবলে চলবে না।

কারন আমি চাই কার কাছ থেকে? আমি সম্মানটা চাই-ই পুরুষের কাছ থেকে। সুতরাং পুরুষকে শত্রু মনে করে, অথবা তাদেরকে দূরে রেখে এই সম্মান যদি আমি অর্জন করার চেষ্টা করি তাহলে আমরা বোকার স্বর্গে বাস করছি।’

তিনি বলেন, আমি আমার স্বামীর বিরুদ্ধে, আমার সন্তানের বিরুদ্ধে যেমন যেতে পারিনা, ঠিক তেমনি পুরুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নারী কিছুই অর্জন করতে পারবে না। শুভঙ্করের এই ফাঁকির মধ্যে যেন আমরা না পড়ি, সেটা নারী নেতৃত্বকে আজকে খুব অন্তর দিয়ে অনুধাবন করতে হবে।

মহিলারা অনেক কিছু অর্জন করছে- অনেক কিছু পাচ্ছেও না। সকল কিছু পৃথিবীতে আসলে সাদা বা কালো নয়; কালার টা গ্রে-ধূসর। এখানে কিছু সাদাও আছে, কিছু কালোও আছে। সে কালো দিকটা কি? কালো দিকটা হচ্ছে উন্নয়নের হাত ধরে কিছু সমস্যাও ঢুকছে, সেই সমস্যার একটা হচ্ছে পারিবারিক ভাঙন। ঢাকায় পারিবারিক ভাঙন অথবা বিবাহ বিচ্ছেদ সবচেয়ে বেশি।

এর অন্যতম কারণ আর্থিকভাবে স্বনির্ভর নারীরা এখানে বেশি বসবাস করেন। আমাদের দেশ যত উন্নতির দিকে যাচ্ছে, এটা একটা বৈশ্বিক ট্রেন্ড। যত মানুষ উন্নত হয়, লেখাপড়া শিখে, মেয়েরা কর্মজীবনে ঢুকে এই সমস্যাগুলো বাড়তে থাকে, বাড়বে। কিন্তু আমরা কি করে এটাকে প্রটেক্ট করব, সেটা আগে থেকেই চিন্তা করে রাস্তা বের করে রাখতে হবে।

আমরা নারীরা কাজ করছি এই যে, পুলিশ পেশার মত একটা চ্যালেঞ্জিং পেশায়, এবং এত টাইম ডিমেন্ডিং পেশায় নারীরা কাজ করছেন। অসম্ভব রকমের স্ট্রেস এ তারা থাকেন। সর্বোচ্চ পদেও অধিষ্ঠ হয়ে একজন নারী চিন্তা করতে থাকেন তাঁর ঘরে কি হচ্ছে, বাচ্চাটা পড়ছে কি না, খেলো কি না, বাসায় গেলে শাশুড়ি মা রাগ করবে কি না?

এই চিন্তাগুলো কিন্তু তাঁর মাথায় থাকে, আমরা কিন্তু বেশি কিছু চাইনা নারীরা। শুধু চাই এই যে আমি পরিশ্রমটা করছি অথাৎ, ঘরেও সময় দিচ্ছি, বাইরেও সময় দিচ্ছি এটা যেন আমার চারপাশের মানুষ বোঝে। একদিন যে দেরি করে ফিরি শাশুড়ি আম্মা যেন বলে-বউমা তুমি আজ সারা রাত নাইট ডিউটি করেছো, আজকে সকালটা ঘুমাও।

স্বামী যেন বলেন– তুমি অনেক পরিশ্রম করছো, আমি বুঝতে পারছি। তোমার চোখটা এমন লাল কেন, তোমার মনটা কি খারাপ? এটুকুই তো যথেষ্ট। এটুকু পেলেই আমরা আমাদের সব পাওয়া হলো বলে মনে করব। এবং আমরা মহিলারা আরো বেশি উদ্যম নিয়ে বাইরে কাজ করার জন্য উৎসাহ পাবো।’

মিসেস হাবিবা জাবেদ বলেন, ‘আজকে যারা এখানে পুরস্কৃত হযেছেন আমি তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাদের প্রত্যেকের সম্পর্কে, কে কী কারণে পুরস্কৃত হলেন আমি জানতে পেরেছি। আমি ডিটেইলসে যাবো না। একজন পুরুষ সদস্যও আছেন আমি এটা দেখে চমৎকৃত হয়েছি। অর্থাৎ, মহিলারা যে অন্ধ নন, পুরুষ বিদ্বেষী নন এটাই তাঁর প্রমাণ। তো আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি সকলকে, এই পুরষ্কার অর্জন করার জন্য।

পুরষ্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন এবং আমাদের মাঝে আজ রৌশন আপা নেই। ওনার বিদেহী আত্মার প্রতি মাগফেরাত কামনা করছি এবং চট্রগ্রামের এই পূণ্যভূমিতে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো এবং কিছু বলার জন্য আমাকে আপনারা যে সম্মান দেখিয়েছেন তাঁর জন্য আপনাদের কাছে আমি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি । পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের সাফল্য এবং আপনাদের সকলের সুন্দর জীবন কামনা করে শেষ করছি, ধন্যবাদ।’

প্রশংসা করলেন দুই মন্ত্রী
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নিজের বক্তব্যের শুরুতেই পুনাক সভাপতি হাবিবা জাবেদের বক্তব্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমি পুনাক সভাপতির কথা শুনছিলাম, মন্ত্রমুগ্ধের মতোই। তিনি সমাজবিজ্ঞানীর মতোই বলছিলেন তাঁর পার্সপেক্টিভ থেকে।

অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিষয় তুলে ধরেছেন। একজন সমাজ বিজ্ঞানীর দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি বলছিলেন। আমি শুনছিলাম গভীর মনোযোগ দিয়েই।

দেশের ইতিহাসে সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপিও পুনাক সভাপতির প্রশংসা করে বলেন, তিনি মনোবিজ্ঞানের ছাত্রী। কীভাবে মেয়েদের এগিয়ে যেতে হবে তাঁর সম্পর্কে সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। আরো বেশিক্ষণ তিনি বক্তব্য রাখলে আমারও জ্ঞানের দ্বার আরো খুলতো।’

কালের আলো/কেএএই/এমএএএমকে