‘মানুষগুলো পুড়ছিল, চিৎকার করছিল’

প্রকাশিতঃ 3:18 pm | March 13, 2018

কালের আলো রিপোর্ট:

নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত বিমানের বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি যাত্রী শাহরিন আহমেদ (২৯)। কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধ এ যাত্রী। তার শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে।

উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের মুহূর্তের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে নেপাল ভ্রমণে বের হয়েছিলাম। উড়োজাহাজটি নামার আগেই সেটি বামদিকে মোড় নেয়। এ সময় লোকজন চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। আমরা পেছনে তাকিয়ে দেখি, বিমানে আগুন জ্বলছে।’

“হঠাৎ করে পেছনে আগুন দেখতে পাই আমরা। আমার বন্ধু আমাকে বলে, ‘চলো দৌড়ে সামনে যাই।’ কিন্তু আমরা যখন দৌড়ে সামনে যাচ্ছিলাম, আমার বন্ধুর গায়ে আগুন ধরে যায়। সে পড়ে যায়।”

হিমালয়ান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন শাহরীন। বলেন, ‘মানুষগুলো পুড়ে যাচ্ছিল। তারা চিৎকার করছিল। কয়েকজন পড়ে যায়। জ্বলন্ত বিমান থেকে তিনজনকে লাফ দিতে দেখি। এটা ভয়ানক ছিল। সৌভাগ্যবশত কেউ আমাকে টেনে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়।’

পেশায় শিক্ষক শাহরীন যাচ্ছিলেন কাঠমান্ডু ও পোখারায় ঘুরতে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে, শাহরীনের ডান পায়ে আঘাত লেগেছে এবং তার শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে।

আরেক বাংলাদেশি যাত্রী মেহেদি হাসান কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন তার স্ত্রী, এক বোন ও বোনের মেয়ের সঙ্গে। জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ যে এতটা ভয়বহ অভিজ্ঞতার মুখে ফেলবে, তা কখনো ভাবেননি মেহেদি।

মেহেদি বলেন, ‘আমার সিট পেছনের দিকে ছিল। যখন আগুন দেখতে পাই, সিটে বসে থাকা আমার পরিবার সদস্যদের দিকে তাকাই আমি। আমরা জানালার কাচ ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পারছিলাম না। আশা করছিলাম, কেউ এসে আমাদের উদ্ধার করবে। দুর্ঘটনায় আমি আর আমার স্ত্রী বেঁচে গেছি। তবে আমার কাজিন ও তার মেয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।’

মেহেদি হাসানও এখন কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সূত্র: হিমালয়ান টাইমস।

 

কালের আলো/ওএইচ