সিদ্ধান্ত গ্রহণে অতুলনীয় সেনাপ্রধানের প্রেরণা বঙ্গবন্ধু, চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ
প্রকাশিতঃ 10:57 am | July 19, 2019
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
সিদ্ধান্তের অভাবে কোন কাজই আটকে রাখেন না বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। বরং দ্রুত সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অনন্য এক উদাহরণ। নিজ বাহিনীর অধ:স্তন কর্মকর্তারাও তাঁর সঙ্গে প্রয়োজনে নিজেদের সমস্যা বা যে কোন বিষয়ে কথা বলতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে।
তাদের মুঠোফোন বা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমেও তিনি সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। আবার শৃঙ্খলার রক্ষায় তাঁর অবস্থান অনেকটাই কঠোর।
বলা হচ্ছে, যেকোনো সমস্যা সমাধানে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুণের অধিকারী একমাত্র চারতারকা জেনারেল নিজের দূরদর্শীতা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে যে কোন সমস্যা সমাধানেও সিদ্ধহস্ত। এসব কর্মগুণেই যেন গোটা বাহিনীর সদস্যদের আবেগ-ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর ঐক্যের ঠিকানা হয়ে উঠেছেন জেনারেল আজিজ আহমেদ।
চৌকস এ সেনা কর্মকর্তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে কালের আলোকে এমন তথ্যই জানান তাঁর নেতৃত্বে কাজ করা বাহিনীটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্যে- মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, স্পিরিট, সাহস, চেতনা এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ধন্য পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম ও আদর্শ ধারণ করে পথ চলেন আত্মমর্যাদায় বিশ্বাসী এ মানুষটি।
পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর প্রণীত ১৯৭৪ সালের প্রতিরক্ষা নীতির প্রেক্ষাপটে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’-এর আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আধুনিক পথচলায় আকাঙ্খা পূরণ ও উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সংকটে, সমস্যায় তাঁর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইতোপূর্বে আশা-জাগানিয়া স্পন্দনে জাতিকে দিয়েছে পথের দিশা।
একই সূত্র বলছে, নিজের আদর্শ এবং বাহিনীর মর্যাদাকে সমুন্নত রেখে সাহস, সততা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও দৃঢ়চেতা মানসিকতায় মূলত ২৪ ঘন্টা কাজের মানসিকতা রয়েছে দেশপ্রেমের অনির্বাণ শিখায় গোটা সেনাবাহিনীতে আলোকিত-বিকশিত করার এ শুদ্ধ কারিগর। কাজের ক্ষেত্রে স্থবিরতাকে প্রশ্রয় দেওয়া ধাঁচে নেই তাঁর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রগাঢ় আস্থা ও বিশ্বাসের শাশ্বত চেতনা প্রবাহ নিয়ে সেনাবাহিনীকে আরও কার্যক্ষম ও যুগোপযোগী করার লক্ষে সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়নেও মুন্সীয়ানার পরিচয় দিচ্ছেন জেনারেল আজিজ আহমেদ।
বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রায় সময়েই বলেন, ‘জাতির পিতা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের যে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন তার ধারাবাহিকতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে অব্যাহত ছিল এবং আছে।’
সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে নিয়মিতই কাজ করছেন এমন কয়েকজন সম্প্রতি কালের আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন দ্বিধা বোধ করেন না সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি প্রায় সময়েই একটিই কথা বলেন, ‘বেড ডিসিশন ইজ বেটার দেন নো ডিসিশন।’
একই সূত্র কালের আলোকে আরো বলছে, ‘কোন বিষয় ঝুলিয়ে না রেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত দেওয়ার মানসিকতা রয়েছে সেনাপ্রধানের। সিদ্ধান্ত ভুল হলে তা সংশোধনের মাধ্যমে ঠিকই সঠিকভাবে কাজটি বাস্তবায়নেই জোর দেন। আত্মবিশ্বাস নিয়েই কাজ করতে উদ্ধুদ্ধ করেন নিজের অধ:স্তন কর্মকর্তাদের।
কোনো একটা কাজ করতে গেলে কীভাবে করব, কীভাবে হবে, এত দুশ্চিন্তা না করে কাজ বাস্তবায়নের গভীর সংকল্পই তাকে প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল করেছে।’
‘টিম ওয়ার্ক’ বা দলগত কাজে বিশ্বাস করেন স্বপ্নবান জেনারেল আজিজ আহমেদ। নতুন নতুন ধারণা নিয়ে নিরন্তর ছুটে চলেন। তিনিই দেশের ইতিহাসে একমাত্র সেনাপ্রধান যিনি বিজিবি ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ইউনিটে নেতৃত্ব দেওয়া কমান্ড অভিজ্ঞতায় অনন্য মানুষ। তাঁর দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আবারো সুশৃঙ্খল সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
ঘনিষ্ঠরা বলছেন, সেনাপ্রধানের জ্ঞানচর্চা বিরামহীন, বিচার বিশ্লেষণবোধও প্রখর। মেধা, জ্ঞান ও যুক্তির মাধ্যমে সবকিছু বিবেচনা করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেও নিজের নেতৃত্বগুণ বিকশিত করার মাধ্যমে একজন চেঞ্জ মেকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এ বহুমুখী প্রতিভার প্রতীক।
বঙ্গবন্ধু, মহান মুক্তিযুদ্ধ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নে তিনি দৃঢ়চিত্তের আপসহীন। ইস্পাতসম কঠিন বিশ্বাসের জায়গায় দাঁড়িয়ে তিনিই বলতে পারেন, ‘দেশের যে কোন সঙ্কটময় মুহুর্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শতভাগ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে।
অমিত দৃঢ়তায় তিনিই বলেন, ‘সরকারকে জাতীয় উন্নয়নের সব পর্যায়ে ধারাবাহিক সহযোগিতার জন্য এখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত এবং বিশ্বাসযোগ্য ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের গুণমুগ্ধ স্বয়ং বঙ্গবন্ধু’র জ্যেষ্ঠ কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হ্যাট্ট্রিক প্রধানমন্ত্রী প্রায় সময়েই বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে সেনাবাহিনীকে অত্যাধুনিক ও সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। জাতির পিতা প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে সেনাবাহিনী আজ দেশে-বিদেশে সুনাম ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত।’
জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে চাকরি করেছেন এমন ক’জন কালের আলোকে বলেন, ‘কাজের গুণে প্রদীপের মতো উজ্জ্বল স্থিরচিত্তের মানুষ আজিজ আহমেদ যেকোনো সংকটে অবিচল। সংকটকালীন সাহসী ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে পারদর্শী এ সেনা কর্মকর্তা তাঁর অধ:স্তন কর্মকর্তারা ভুল করলে তেড়েফুঁড়ে না গিয়ে পরিশীলিত ভাষায় বুঝিয়ে দেন।
তবে তিনি কারো ক্ষতি করেছেন এমন নজির নেই। উল্টো নিজ বাহিনীর সদস্যদের বুকের উত্তাপেই আগলে রাখেন, এমনটিই বলছেন তাঁর অধ:স্তন কর্মকর্তারা।
একবাক্যেই তাঁরা আরো বলেন, ‘নিজ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি জেনারেল আজিজ আহমেদের ভালোবাসা অপরিসীম। সৌম্য-শান্ত-ভদ্র-বিনয়ী-মৃদুভাষী, লোভ-লালসা-অহমিকাহীন অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় এ সজ্জন ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের গতিময় পথচলায় নতুন মানসিক শক্তিতে উজ্জীবিত করেছেন। জাতির বৃহত্তর স্বার্থই কেবল তাঁর কাছে জাগরণের চিরন্তন-ধ্বনিপুঞ্জ।’
কালের আলো/এএ/এমএএএমকে