যুবদলের সেই টুকুর ‘শিষ্য’ এখন ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক!

প্রকাশিতঃ 1:41 am | August 23, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

শোভন-রাব্বানীর নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী নিয়ে আবারো নতুন করে বিতর্ক উঠেছে। এবার সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের ফেসবুক স্ট্যাটাস বলছে- যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু’র ‘শিষ্য’ মমিন শাহরিয়ার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক পদে ঠাঁই করে নিয়েছেন।

শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের ছোট ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ার সুবাধেই তিনি এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার আলোচিত-সমালোচিত মমিন শাহরিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি। এমনকি মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা দিলেও অভিযোগ সম্পর্কে তিনি নিজের মন্তব্য প্রকাশ করেননি।

তাঁর রহস্যময় এমন নীরবতা আরো নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা মমিন শাহরিয়ারের মতো অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেগড়া সংগঠন ছাত্রলীগকে কলঙ্কমুক্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন।

ছাত্রলীগের সাইফুর রহমান সোহাগ ও এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বাধীন কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আনন্দ সাহা পার্থ, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, দপ্তর বিষয়ক উপ-সম্পাদক শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক এ বি সুজন আহমাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইলের আব্দুস সালাম পিন্টুর ছোট ভাই সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকুর সঙ্গে মমিন শাহরিয়ারের ছবি চিহ্নিত করে এমন অভিযোগ এনেছেন।  

এ অভিযোগ নতুন করে তুলকালাম শুরু হয়েছে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি শোভনের সঙ্গে মোমিন শাহরিয়ারের হাস্যেজ্জ্বল ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র মতে, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা নেতিবাচক কর্মকান্ডে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ ছিলেন সাংগঠনিক নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

এমনকি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে তাদের কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও খবর চাওর হয়ে উঠেছিল। অবশেষে জোড়াতালি দিয়ে শোভন-রাব্বানী পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে সক্ষম হলেও নতুন করে বিতর্কের পারদে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।

ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা বলছেন, যে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে শোভন-রাব্বানীকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আনা হয়েছিল তাঁরা সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারেননি।

তাঁরা মানবিক ছাত্রলীগের বুলি আওড়ালেও প্রকারান্তরে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে চির ঐতিহ্যের ধারক-বাহক সংগঠনটিকে প্রশ্নবোধক একটি অবস্থানে দাঁড় করাচ্ছেন।

দলটির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, শোভন-রাব্বানী কী নিজের বুদ্ধিতেই বারবার সমালোচনার মুখে পড়ছেন না কী পেছন থেকে অন্য কেউ কলকাঠি নাড়াচ্ছেন? যদি এমনটি হয় তবে কে সেই ‘কুশীলব’, তাকেও সনাক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি উঠেছে।

এসব বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সঙ্গে একাধিবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কালের আলো/এমএইচ/এএ