‘কমিউনিটি ব্যাংক’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 11:29 am | September 11, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের মালিকানাধীন ‘কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (সিবিবিএল)’ এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) গণভবন থেকে বেলা ১১টা ৬ মিনিটে ভিডিও কনফারেন্সে ব্যাংকটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন
এ সময় বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও কমিউনিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম(বার), ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মশিউহুল হক চৌধুরীসহ পুলিশ ও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিউনিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় হবে রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে হাতিরঝিলের পাশে পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে। এ ছাড়া প্রিন্সিপাল শাখাসহ মোট ছয়টি শাখা দিয়ে প্রথমে এ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে শাখা বাড়ানো হবে।
২০১৮ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় পুলিশ বাহিনীকে ‘কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ দেয়া হয়। ওই বছর নভেম্বরে ব্যাংকটিকে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে সরকারি-বেসরকারি মিলে দেশে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৯টিতে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে ১৩টি নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশি ও প্রবাসী উদ্যোক্তারা ১১টি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) একটি ব্যাংক (সীমান্ত ব্যাংক) পেয়েছে। সর্বশেষ পেল পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের মালিকানায় কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ।
গত বছরের মার্চে ব্যাংকটির অনুমোদন চেয়ে পুলিশ সদর দফতরের কল্যাণ ট্রাস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করে। পরে ২৮ আগস্ট ‘কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ’ নামে পুলিশকে ব্যাংকের অনুমোদন দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ২৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় কমিউনিটি ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
এর আগে বাংলাদেশ পুলিশ বাণিজ্যিকভাবে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে ২০১৭ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে মূলধনের ৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহ শুরু করে। পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূলধন সংগ্রহ শেষ হয়। গুলশানে পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে করা হয়েছে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়। মিডল্যান্ড ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি মশিউহুল হক চৌধুরীকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে সারাদেশে পুলিশ সদস্যদের বেতন দেয়া হবে। আপাতত পুলিশ সদস্যরাই হবেন এ ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডার। এর লভ্যাংশ যাবে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে। ট্রাস্টের মাধ্যমে ওই টাকা ব্যয় হবে পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে। ব্যাংক লাভজনক হলে তিন বছর পর মূলধন জোগানের ওপর প্রত্যেকে নির্ধারিত হারে লভ্যাংশ পাবেন। এ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের জমি ক্রয়, বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসা উদ্যোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির।
ব্যাংকের মাধ্যমে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের আয় বাড়লে সদস্য ও তাদের পরিবারের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা বর্তমানের চেয়ে বাড়ানো হবে। সদস্যরা অবসর সুবিধা, সন্তানের শিক্ষাবৃত্তি, কারিগরি শিক্ষাবৃত্তি, ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন এ ব্যাংকের মাধ্যমে। অন্য অনেক সংস্থার মতো পুলিশের নিজস্ব ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর সঠিক ও স্বচ্ছ লেনদেনের কারণে জনগণের মধ্যে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ সদস্যদের জন্য একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাবনা দেন পুলিশের তৎকালীন আইজি একেএম শহীদুল হক। প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, মূলধনের টাকা জোগাড় করতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপরই ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য মূলধন সরবরাহের কাজ শুরু করে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রায় এক লাখ ৬৬ হাজার পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে এ টাকা সংগ্রহ করা হয়।
কালের আলো/এনএল/এমএম