পেশাদারিত্বকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন আইজিপি
প্রকাশিতঃ 5:10 am | April 04, 2018
অ্যাক্টিং এডিটর, কালের আলো :
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক থেকে পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব নিয়েই ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছিলেন, ‘জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের করণীয় আমরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করে যাব।’ ওই সময় পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) এমন বক্তব্যে আশান্বিত হন সবাই।
ভোটের বছরের শুরুতে পুলিশের শীর্ষ পদে অভিষিক্ত হবার সাত দিনের মাথায় দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে চরম অস্থির পরিস্থিতির অবতারণা হয়। এ সময়টাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইঙ্গিতবহ এক বার্তা দেন আইজিপি।
প্রজ্ঞা, অসম সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে পরিচালিত করতে তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপকে দেশের আপামর মানুষ অধিকমাত্রায় সমর্থন দিয়েছেন। খালেদার রায়ের আগের দিন আইজিপি জানিয়ে দেন, ‘রায়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে পুলিশ সদস্যরা নিজেদের পেশাদারিত্ব এবং আইনি পন্থায় পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে।’
ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী তিন দশকের বেশি সময় পুলিশ বিভাগে সততা, নিষ্ঠা ও সুনামের সঙ্গে চাকরি করছেন। নাম্বার ওয়ান এ পুলিশ কর্মকর্তা নিজেও শতভাগ পেশাদারিত্ব লালন করেন। পুলিশ বাহিনীতে তাকে বিবেচনা করা হয় পেশাদারিত্বের ‘রোল মডেল’ হিসেবে।
একটি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পূর্বশর্ত হলো শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে পুলিশের ওপর সমাজ পুরোমাত্রায় নির্ভর করে। পুলিশের ওপর সাধারণ নাগরিকরা ভরসা করেন। আবার এ বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বহীনতা নিয়েও বিভিন্ন সময় নানা প্রশ্ন তোলা হয়।
পুলিশের সম্মানজনক অবস্থান গড়ে তুলতে পেশাদারিত্বই হতে পারে মোক্ষম এক হাতিয়ার। ফলে নি:সন্দেহে এ বিষয়টিও বেশ ভালোভাবেই অনুধাবন করেন আইজিপি। তিনি বিশ্বাস করেন, নানা সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করার কঠিন কাজটি পুলিশ সদস্যরা পেশাদারিত্বের সঙ্গেই করে আসছে।
পুলিশের এ সেবাকে আরো জনবান্ধব ও গতিশীল করার পাশাপাশি বাহিনীর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে বরাবরই পেশাদারিত্বের ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি।
জঙ্গিবাদ দমনে নিজেদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে গোটা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনী। বাহিনীর প্রধান হিসেবে এ অর্জনে স্বভাবতই সন্তুষ্ট হবার কথা ড.জাবেদ পাটোয়ারীর।
বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ দমনের অন্যতম এ রূপকারের কাঁধে এ বাহিনীর দায়িত্ব তুলে দেয়ার পর এবার প্রথমবার তাঁর নেতৃত্বে পহেলা বৈশাখ নির্বিঘ্নে উদযাপনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে রয়েছে পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরে বর্ষবরণ উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সভায় দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে।
আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ সভায় বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে ইতোমধ্যেই কড়া এক বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সবাই যাতে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করতে পারে সেজন্য সবাইকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পুলিশের সেবাকে আরও জনবান্ধব করতে পরামর্শ দিয়েছেন। জনসেবা করার মানসিকতা লালনেরও তাগিদ দিয়েছেন। অভিন্ন এমন মানসিকতাই পোষণ করে আসছেন বর্তমান আইজিপি।
সৎভাবে কাজ করার উদ্যম, কর্মদক্ষতা, দায়িত্ব নেয়ার ক্ষমতা ও সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার প্রবণতার এক মহা মন্ত্রই তাই পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের মাঝে যেন গেঁথে দিতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আর এজন্যই বার বার পেশাদারিত্বকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন বর্তমান এ পুলিশ প্রধান।
পেশাদারিত্বের পাশাপাশি নারীবান্ধব, জনবান্ধব, শিশুবান্ধব এবং প্রগতীবান্ধব’, এক পুলিশ বাহিনী চান আইজিপি ড.জাবেদ পাটোয়ারী। এসবের মতো পুলিশের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোর চেষ্টারও অঙ্গীকার করেছেন।
এর আগে তিনি সতর্ক বার্তা দিয়েছেন নিজ বাহিনীর সদস্যদেরও। ‘পুলিশের কোনো সদস্যের অপরাধের দায় পুলিশ নেবে না। কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তাকে অপরাধী হিসাবে দেখে প্রচলিত নিয়ম নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ উচ্চারণ পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির গুণী এ শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো মাদক নির্মুলেও আইজিপি’র জিরো টলারেন্স নীতি’র প্রশংসা করেছেন দেশের সচেতন নাগরিক মহল। তাদের ভাষ্যে, দেশে মাদক মহামারী আকার নিয়েছে। আর এ কঠিন পরিস্থিতিতে জঙ্গিবাদ দমনের মতো মাদক নির্মুলেও তিনি চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। সুস্পষ্ট ভাষায় আইজিপি বলেছেন, ‘সবাইকে পাশে পেলে জঙ্গিবাদকে যেভাবে নির্মূল করেছি, মাদকও নির্মূল করব। মাদক নির্মূলে পুলিশের নীতি হবে ‘জিরো টলারেন্স’।’
কালের আলো/টিআই/এএ
আরও পড়ুন : পহেলা বৈশাখে দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা