প্রিমিয়ারেই বাজিমাত পরীর স্বপ্নজালের (ভিডিও)

প্রকাশিতঃ 3:10 pm | April 06, 2018

বিনোদন ডেস্ক, কালের আলো:

মনপুরা’ খ্যাত পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিমের নতুন চলচ্চিত্র ‘স্বপ্নজাল’ আজ শুক্রবার সারাদেশে মুক্তি পাচ্ছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয় পরীমণি অভিনীত এ ছবিটির। ছবিটি টিজার ও গান দিয়ে আগেই মুগ্ধতা ছড়িয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় প্রিমিয়ারেও বাজিমাত করলো ছবিটি। এতে ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগর, শিল্পী সরকার অপু, ফারহানা মিঠু, ইরেশ যাকেরের মতো পরীক্ষিত ও শক্তিমান অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও রয়েছেন। তাদের সবার অভিনয় ছিল বরাবরেই মতোই মনে দাগ কাটার মতো।

কিন্তু নতুনভাবে আরও একজন অভিনয় শিল্পীর জন্ম হয়েছে এই ছবির মাধ্যমে। আর তিনি হলেন পরীমণি। প্রিমিয়ার শো দেখার পর এ কথাটাই অনেকে বলছেন। তাদের মতে, ফজলুর রহমান বাবু ও ইরেশ যাকেরের অভিনয় নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তারা ‘জাত অভিনেতা’। কিন্তু সব সময় যাকে গ্লামার কন্যা হিসেবে দেখা যায়, সেই পরীকেই দেখা গেছে মেকআপহীন এক শুভ্রতার মাঝে। অন্যদিকে, নবাগত রোহানের সাথে পরীর রসায়ন ছিল চমৎকার। সহ-অভিনেতা হিসেবে তিনিও ছিলেন দুর্দান্ত। চলচ্চিত্র নির্মাতা-অভিনয়শিল্পীরাও ছবিটির প্রশংসা করেছেন। তাই তো ফেসবুক ভাসছে স্বপ্নজালের প্রশংসায়।

ছবিটি দেখার পর কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, স্বপ্নজাল দেখে এলাম। মনপুরাখ্যাত গিয়াসউদ্দীন সেলিমের দ্বিতীয় ছবি। আমার খুব ভালো লেগেছে। আমি শেষ হওয়ার পর অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। এই ছবি মনপুরার চেয়ে অনেক ভালো ছবি। আমার মনে হয়েছে, একটা সম্পূর্ণ সুন্দর নিটোল ছবি দেখলাম। অভিনয়েও সবাই দারুণ। সবচেয়ে ভালো ফজলুর রহমান বাবু। আশ্চর্য ভালো পরীমণি, ইয়াশ, মিশা সওদাগর, শহীদুল আলম সাচ্চু। এই ছবি লোকে বারবার দেখবে।

প্রিমিয়ারে ছবি দেখার পর অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন বলেছেন, ‘খুব ভালো। নির্দিষ্ট করে কারও নাম বলা উচিত নয়।’

অভিনেত্রী সুইটি বলেছেন, ভীষণ ভালো। পরীমণি ভালো করেছে, ‘অপু দি’র ছেলে (ইয়াশ রোহান) ভালো করেছে। ইরেশ যাকের ভালো করেছে।’

নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পরী তুমি অনেকদূর যাবে, কাজ সফল হবার পর যে শিল্পী পাবলিকলি পরিচালক ও টিমকে সফলতার কৃতিত্ব দিতে ভোলে না, কৃতজ্ঞ ও বিনয়ী থাকে, সে একদিন বড় কিছু হবে, পরীমনি আমি তোমার জন্য মন থেকে প্রার্থনা করি।’

স্বপ্নজালকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, গিয়াস উদ্দিন সেলিম….আমার প্রিয় একজন মানুষ, প্রিয় একজন নির্মাতা…অনেক কাজের অভিজ্ঞতা তাঁর সংগে…মনপুরা থেকে স্বপ্নজাল …..বেশী বললে কম বলা হয়ে যাবে…কিছু না বলি….আজ স্বপ্নজাল এর শুভমুক্তি….মনপুরা’র মত স্বপ্নজাল ও সবার হৃদয় ছুয়ে যাক…বাংলা সিনেমার জয় হোক….

নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন লিখেছেন, আজকে স্বপ্নজাল ছবির প্রিমিয়ার শেষ হবার পর ইয়াস রোহানকে জড়িয়ে ধরে পরীমনি অনেকক্ষণ কাঁদছিলেন। স্বপ্নজালে অপুকে জড়িয়ে শুভ্রার কান্নার এই রকম একটি মূহুর্তের জন্য দর্শক হিসেবে আপনি হয়ত হাহাকার করবেন! সিনেমায় সেটা হয়েছে কি হয়নি কিংবা… হলে কি হতো, সেটা জানতে আজ থেকে দলে বলে সবাই হলে যান! শো শেষ হবার পর সিনেমার চরিত্ররা বাস্তব জীবনে এক অদ্ভুত মূহুর্তে এসে দাঁড়িয়েছিল। এই রকম অসংখ্য টুকরো টুকরো স্বপ্নের সুন্দর বুননে সুনির্মিত হয়েছে স্বপ্নজাল। ফজলুর রহমান বাবু আর Iresh ভাই এর অভিনয় জাস্ট চোখে লেগে আছে। মনপুরার পর দর্শকের কাছ থেকে অপু-শুভ্রার এক নিটোল ভালোবাসার গল্প নিয়ে হাজির হবার জন্য অসংখ্য ভালোবাসা ফিরে পাবেন বিশ্বাস করি সেলিম ভাই। পাত্রে জায়গা খালি করুন। বাড়তি ভালোবাসাটুকু বাংলাদেশের সিনেমার জন্য খুব দরকার!

সাংবাদিক দাউদ হাসান রনি লিখেছেন, স্বপ্নজাল ইজ বেটার দ্যান মনপুরা ৷ ফজলুর রহমান বাবু ভাই ফাটিয়ে দিয়েছেন ৷ Iresh ভাইও অসাধারণ ৷ Pori Moniকে বলব, তোমার চ্যালেঞ্জ কিন্তু বেড়ে গেল! পরের ছবিগুলোতে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে ৷

সবার চেয়ে ভালো করেছেন সিনেমাটোগ্রাফার কামরুল হাসান খসরু ৷ সেলিম ভাইয়ের গল্পটার পাশাপাশি পর্দায় ভিন্ন এক গল্প বলেছেন খসরু ৷
অভিনন্দন সবাইকে ৷

সাংবাদিক মাহমুদ মানজুর লিখেছেন, ‘স্বপ্নজাল’ দেখলাম। বুকটা ভেঙে গেল। অথচ চোখটা ভরে গেল। ছবিটা দেখার পর আমার মনে হলো এটার নাম হওয়ার কথা ছিল ‘জলছবি’। ছবিজুড়ে পানি আর পানি। নদীতে-চোখে-হৃদয়ে- সর্বত্র থৈ থৈ করছে পানি। আহা কী ক্যামেরা ওয়ার্ক। হিন্দু-মুসলমানের চিরায়ত পটভূমি। কখনও কখনও পরিচালক মনে করিয়ে দিলো নয় বছর আগের ‘মনপুরা’ কাব্যকে।

এটা মূলত পরীমনির ছবি- তিনিই গল্পের নায়ক। ঢাকাই ছবিতে সামনের দিনগুলো তার জন্য কঠিন হয়ে গেল! সেলিম-খসরুর (নির্মাতা-সিনেমাটোগ্রাফার) ক্যানভাসে একেবারে সাদামাটা (ম্যাকআপ-গেটআপ) পরীকে লেগেছে বুনো টিয়াপাখির মতোই-অদ্ভুত। বাণিজ্যিক ছবির নায়িকাসুলভ অভিজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে এমন আটপৌরে শুভ্রা- সত্যিই চমকে দিয়েছেন, তার অভিনয় এবং কণ্ঠ দিয়ে।

ছবির অন্য অন্যতম চরিত্রের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন ইরেশ যাকের। ছোট্ট চরিত্র- অথচ সবচেয়ে দুর্দান্ত ডেলেভারি। এরপর ফজলুর রহমান বাবু। তার চরিত্রটি বেশ বড়। যে চরিত্রটি কষ্টময় এই গল্পটার ফাঁকে ফাঁকে দর্শকদের বেশ আনন্দ দিয়েছে। উকিল চরিত্রে শাহেদ আলী তার চরিত্রের যথেষ্ট সুবিচার করেছেন। টিনএজার প্রেমিক হিসেবে ইয়াশ রোহানও বেশ- তবে তাকে উৎসাহ দেওয়া খুব দরকার এখন। আসলে পরীর অভিনয়ের কাছে তাকে ফাঁকে ফাঁকে খানিক ম্লান লেগেছে। আর মিশা সওদাগরকে খুব মিস করেছি- এই শক্তিমান অভিনেতাকে পর্দায় আরেকটু বেশি সময় আশা করেছিলাম।

গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘মনপুরা’য় প্রধান শক্তিটা ছিল গান। ‘স্বপ্নজাল’-এ সেই গানের শক্তিটাকে মাঝে মাঝে মিস করেছি। তবে গানের ছন্দটাকে অনেকটাই ভুলিয়ে রেখেছে ক্যামেরার জলজ ছন্দ।

শুভেচ্ছা- টিম ‘স্বপ্নজাল’।

সাংবাদিক কামরুজ্জামান মিলু লিখেছেন, #স্বপ্নজাল# মুভিতে নতুন এক পরীমণিকে দেখলাম…ফুল মুভিতে তার অ্যাকটিং দর্শকদের মুগ্ধ করবে…শুভ্রা কনগ্রেচুলেশনস…

আফটার দ্যাট নতুন হিসেবে ইয়াশ রোহান দারুণ করেছে…আর ফজলুর রহমান বাবু ভাই এর কথা তো আগেই বলেছি ফাস্ট ক্লাস অ্যাকটিং…ইরেশ যাকের ভাই ও মুনিয়া ইসলামসহ অন্যরা বেশ ভালো অ্যাকটিং করেছে…ফুল মুভিতে সিনেমেটোগ্রাফির কাজ দারুণ…থ্যাঙ্কস অ্যান্ড কনগ্রেটস গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাই ফর দিস মুভি…

সাংবাদিক রাহাত সাইফুল লিখেছেন, স্বপ্নজাল দুর্দান্ত, অসাধারণ লোকেশন ও সিনেমেটোগ্রাফি। পরীমনি, রোহান, ফজলুর রহমান বাবু ভাই, ইরেশ যাকের, গোপালসহ প্রত্যেকে দারুণ অভিনয় করেছেন। মেকআপ বিহীন ন্যাচারাল পরীর অভিনয়ও ছিল ন্যাচারাল। ডানাকাটা পরী থেকে বেড়িয়ে নতুন পরীর দেখা পেলাম। শুভ কামনা “স্বপ্নজাল”র জন্য। তবে থিয়েটার ছেড়ে দেয়াটা ছিল বাস্তব পরীর মতই।

রাব্বী খান লিখেছেন, স্বপ্নজাল দেখে বের হলাম।পরী মনি অসাধারণ।সে যদি আর কোন সিনেমা নাও করে তাও এই সিনেমা দিয়েই তাকে সারাজীবন দর্শক মনে রাখবে।

এরকম আরও অনেক প্রশংসা বাক্যে প্রশংসিত হচ্ছে স্বপ্নজাল।

https://www.youtube.com/watch?v=XuT7Eg83dL0

কালের আলো/ওএইচ