৯ বছর আগের স্মৃতিতে সচিব, বললেন ফায়ার সার্ভিসের বদলে যাওয়ার গল্প (ভিডিও)
প্রকাশিতঃ 4:35 pm | November 06, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
প্রায় ৯ বছর আগে তিনি ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন)। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে প্রকৃত বন্ধু হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের স্লোগান ‘দুর্ঘটনা দুর্যোগে, সবার আগে, সবার পাশে’ নির্ধারণ করেছিলেন। এখন দায়িত্ব পালন করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব হিসেবে।
আরও পড়ুন: সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আজ থেকে দেশব্যাপী ফায়ার সার্ভিস সপ্তাহ শুরু
নিজের বক্তব্যের শুরুতেই সেই স্লোগান উচ্চারিত হলো তাঁর কন্ঠে। বলে গেলেন, ফায়ার সার্ভিসের বদলে যাওয়ার গল্প। নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়ে ফায়ার সার্ভিস যে জনমনে আস্থা কুড়িয়েছে, সেবা ত্যাগের মূলমন্ত্র নিয়ে নিজেদের জীবনবাজি রেখে অন্যের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় দিন-রাত একাকার করে নির্ভীক অগ্নিসেনারা অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে অহর্নিশ সেই কথাও উচ্চারণ করলেন।
বক্তব্যের শেষ প্রান্তে এসে সুসংবাদ দিলেন। জানালেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জনবলকে আরও দক্ষ করে তুলতে ফায়ার সার্ভিসের একটি বিশ্বমানের একাডেমি তৈরি হবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন এবং আমাদের কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছে : বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী (ভিডিও)
বুধবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এভাবেই নিজেকে সমর্পণ করলেন তারুণ্য ও প্রাজ্ঞতায় রজতশুভ্র উজ্জ্বল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো.শহিদুজ্জামান।
নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর
‘দুর্ঘটনা দুর্যোগে সবার আগে সবার পাশে এবং সেবা ত্যাগের মূলমন্ত্র নিয়ে যারা জীবনকে বাজি রেখে অন্যের জীবন রক্ষায় ও অন্যের সম্পদ রক্ষায় দিবা-নিশি সদা সচেষ্ট থাকে সেই বাহিনীর এ অনুষ্ঠানে আমি দু’টি কথা বলতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি’ বলছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো.শহিদুজ্জামান।
আরও পড়ুন: ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়নে সদস্যদের উৎসাহ ও মনোবল বেড়েছে : ডিজি (ভিডিও)
তিনি বলেন, ‘আমার অত্যন্ত ভালো লাগছে যে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী যে উৎসাহ উদ্দীপনায় বাংলাদেশকে শুধু একটি উন্নত বাংলাদেশ নয়, নিরাপদ বাংলাদেশ গড়া জন্য যে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আমরা ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নের মাধ্যমে দেখতে পাই।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ক্যাবিনেটে এবং সকল অনুষ্ঠানে প্রায় ফায়ার সার্ভিসের বিষয়টি বলে থাকেন। এবং ইতিমধ্যেই ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনমনে স্থান করে নিয়েছেন। এজন্য আমি ফায়ার সার্ভিসের সকল পর্যায়ের সকল সদস্যকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
৯ বছর আগের স্মৃতিচারণ
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো.শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি এক সময় ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশাসন) ছিলাম। প্রায় দুই বছর কাজ করেছিলাম ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত। সেই সময় সারাদেশে ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা ছিল ১৯২টির মতো। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর আমাদের ফায়ার স্টেশন সংখ্যা ৪১১টি। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই এই আমুল পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসকে উন্নত এবং আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সদা সর্বদা তাঁর হাতকে প্রসারিত করেছেন। এজন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই আমাদের মাননীয় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদেরকে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে ৭০৯ টি ফায়ার স্টেশন তৈরির টার্গেট সরকারের
উদার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
সচিব মো: শহিদুজ্জামান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘মানবতার জননী’ তা শুধু বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেই নয়; ওনি ফায়ার সার্ভিসের একজন নিন্মপর্যায়ের কর্মচারীকে তার জীবন রক্ষার্থে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে সিঙ্গাপুর পাঠিয়ে যে উদার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সে জন্য আমরা স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
আমি দৃঢ়চিত্তে স্মরণ করি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। যার জন্ম না হলে আমাদের এই দেশ সৃষ্টি হতো না। আর আমরা এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পেতাম না। আমি আরও স্মরণ করি ১৫ আগষ্টের কালো রাতে শাহাদাত বরণকারি জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের। স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে সকল শহীদদের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনায় জনমনে স্থান করে নিয়েছে ফায়ার সার্ভিস
‘আমাদের মাননীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী মহোদয় ওনার নির্দেশনা মতো আমরা কাজ করি। এবং ওনার নির্দেশনার আলোকে ফায়ার সার্ভিস ইতিমধ্যেই জনমনে স্থান করে নিয়েছে। আগামীতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মগুণে আরও প্রসারিত হবে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলছে এই উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা যেকোন দুর্যোগ দুর্ঘটনা এবং মানব সৃষ্ট এবং প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা থেকে দেশবাসীকে সুরক্ষিত করবো এবং নিরাপদে রাখবো।’
অমিত দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো.শহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে মন্ত্রী মহোদয়কে বলতে চাই, আপনি দিকনির্দেশনা দিয়ে এই বাহিনীকে সফলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য আমরা চির কৃতজ্ঞ।
ফায়ার সার্ভিসের যে নির্মানাধীন বিষয়গুলো রয়েছে এছাড়া আমরা হাসপাতাল করতে চাই। বার্ণ ইউনিটের কথা উঠেছে। ফায়ার সার্ভিসের একটি বিশ্বমানের একাডেমি তৈরি হবে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন এবং আমাদের কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে, জানান সচিব।
পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সচিব মো.শহিদুজ্জামানকে শুভেচ্ছা ক্রেস্ট প্রদান করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.সাজ্জাদ হোসাইন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.সাজ্জাদ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক।
এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান খান পিপিএম, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক (ডিজি) রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জসীম উদ্দিন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জ জোনের উপপরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল আরেফিন, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এসএকে/এমএএএমকে