‘পরকীয়ার’ জেরে যুবক হত্যায় ফুঁসে উঠছে মাদারীপুর
প্রকাশিতঃ 9:50 pm | April 12, 2018
কালের আলো রিপোর্ট:
রংপুরের রথীশ চন্দ্র ভৌমিক হত্যা রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মাদারীপুরের রাজৈরে এক সন্তানের জনককে পরকীয়ার বলি হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীর বাবার বাড়িতে ডেকে পরিকল্পিতভাবে রানা মৃধা নামে ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে নিহতের পরিবার দাবি।
ঘটনার পর স্ত্রী ও শাশুড়িকে স্থানীয়রা ধরে পুলিশে সোর্পদ করে। তবে ঘটনার এক সপ্তাহ হতে চললেও মূল হোতা এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে। এতে ফুঁসে উঠেছে নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা। অতি দ্রুত মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহৎ আন্দোলনের হুমকি স্থানীয়দের। আর প্রশাসন আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের আক্কাস মৃধার ছেলে রানা মৃধার সাথে পাশের সাতারিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর খোন্দকারের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মাফুজা খন্দকার পিপাসার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। এ নিয়ে শ্বশুড়বাড়ি বেড়াতে গেলেই প্রায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।
গত ৬ এপ্রিল রাতে রানা শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে আবারো তাদের মধ্যে কলহ হয়। পরে শনিবার সকাল ১০টার দিকে রানার স্ত্রী তার শ্বশুড়কে ফোন দিয়ে রানা ফাঁস দিয়ে মারা গেছে বলে জানান। পরে স্থানীয় জনতা স্ত্রী ও তার মাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।
নিহত রানার পিতা আক্কাস মৃধা জানান, ‘আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে রানার স্ত্রী মাহফুজা খন্দকার পিপাসা, তার বাবা জাহাঙ্গীর খোন্দকার ও তার শ্বাশুড়ি জড়িত। ওরা পরিকল্পিতভাবে আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
জানা গেছে, রানার এক বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান আছে। তবে রানার স্ত্রী সাথে এরই মধ্যে অন্য একটি ছেলের পরকীয়া রয়েছে বলে প্রায়ই রানার সাথে ঝড়গা-বিবাদ লেগেই থাকত। এরই জের ধরে রানা মৃধাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ করেছে রানার স্বজনরা। এলাকাবাসী হত্যার বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে। তারা রানা হত্যার বিচার দাবি করেন।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শশাঙ্গ চন্দ্র ঘোষ জানান, প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে রানার শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মাদারীপুর মর্গে ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে, অল্প দিনের মধ্যেই মূল প্রতিবেদন দেয়া হবে
রাজৈর থানার পরিদর্শক (অপরেশন) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, এই ঘটনায় রানার মা রাজৈর থানায় তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছে। এরই মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি রানার শ্বশুর জাহাঙ্গীর খোন্দকারকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কালের আলো/জেএইচ