যে কোন কল্যাণমূলক কাজে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক: সেনাপ্রধান

প্রকাশিতঃ 7:12 pm | November 19, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোন কল্যাণমূলক কাজে আন্তরিক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যখনই কোন বিষয় আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাই তিনি দ্রুততার সাথে তা বাস্তবায়নের জন্য সবসময় সহায়তা করেন।’

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মহাখালীস্থ ডিওএইচএস এ সেনা কল্যাণ সংস্থার নবনির্মিত চারটি স্থাপনা উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। এদিন সেনাপ্রধান রাজধানীতে অবস্থিত এস কে এস টাওয়ার ও এস কে বিজনেস মার্ট এবং চট্টগ্রামে অবস্থিত সেনা কল্যাণ ট্রেড সেন্টার ও সেনা কল্যাণ কনভেনশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান এবং সেনা কল্যাণ বোর্ড অব ট্রাস্টি ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যসহ সেনা কল্যাণ সংস্থার বিভিন্ন স্তরের সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সেনাবাহিনী প্রধান ও সেনা কল্যাণ সংস্থার ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জেনারেল আজিজ আহমেদ নিজের বক্তব্যের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘এই সংস্থা সম্পর্কে বলার শুরুতেই আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি আমাদের দিয়ে গেছেন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।’

সেনা কল্যাণ সংস্থা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের কল্যাণে দীর্ঘ ৪৭ বৎসর যাবৎ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সংস্থার বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও উৎপাদনমূলক প্রতিষ্ঠান জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

এ বিষয়টির কথা জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘সেনা কল্যাণ সংস্থা মূলত যে উদ্দেশ্য নিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে, এই সংস্থা থেকে যে আয় হবে সেটা সেনাবাহিনী, নৌ বা বিমান বাহিনীকে আয় সরাসরি শেয়ার করা হয় না বা দেওয়া হয় না।

তবে এই তিন বাহিনীর যারা অবসরপ্রাপ্ত আছে তাদের গৃহীত কল্যাণমূলক কাজে যে আয় আছে সেটা ব্যবহার হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আমি বলবো ইনডিরেক্টলিভাবে তিনটি বাহিনীকে সেনা কল্যাণ সংস্থা প্রতিনিয়ত যথেষ্ট সহায়তা প্রদান করে থাকে।

সেনা কল্যাণ সংস্থা অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের এবং অসামরিক ব্যক্তিবর্গের জন্য চাকরির ক্ষেত্রও তৈরি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য আমরা সেনা কল্যাণ সংস্থার কাছে প্রেরণ করি। সেনা কল্যাণ সংস্থা থেকে তাদেরকে যথাসম্ভব সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।’

নবনির্মিত স্থাপনাসমূহের মানের প্রশংসা করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আজকে যে স্ট্রাকচারটি উদ্বোধন করা হলো এখানে যে ফ্যাসিলিটিজগুলো ডেভেলপ করা হয়েছে পুরোটা ঘুরে দেখলাম। অত্যন্ত আধুনিক মানের করা হয়েছে। এবং আমি নিশ্চিত যে উদ্দেশ্য নিয়ে এ এসকেএস টাওয়ার করা হয়েছে এ উদ্দেশ্য শতভাগ সফল হবে।’

সেনাকল্যাণ সংস্থার কাছে নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন,‘সেনাকল্যাণ সংস্থা যত আয় করবে ততো আমাদের তিন বাহিনী বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও বেশি সহায়তা প্রদান করতে পারবো। সেনাকল্যাণ সংস্থার প্রোডাক্টগুলো তুলে ধরে আমরা সেগুলোকে কিনবো। কিন্তু দেখা যায় আপনার মার্কেটের সাথে প্রতিযোগিতা করে পারছেন না।

আপনাদের কাছে একটা যুক্তি থাকে আমাদের কোয়ালিটি খুব ভালো সেজন্য কিন্তু আমরা দাম বেশি চাই। কিন্তু মার্কেটে যে পণ্যটি কম দামে পাই তাদের কোয়ালিটি যে খারাপ তা বলা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বিজনেস সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক একটা ক্ষেত্র। এক্ষেত্রে আপনাকে টিকে থাকতে হলে মাইন্ড সেট যেমন থাকতে হবে তেমনি সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা থাকতে হবে। প্রচেষ্টা না থাকলে আপনি পিছিয়ে পড়বেন। আপনি বিজনেস নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন না।’

সেনাকল্যাণ সংস্থার অনেক উদ্যোগের বিষয়ে সেনা কল্যাণ সংস্থার ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়ে আমি যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাই তিনি জিজ্ঞেস করেন। এক্ষেত্রে উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তোমাদের এডিবল অয়েলের কি প্রগ্রেস? এখন কোন প্রগ্রেস আছে, মার্কেটের বিস্তারিত পরিস্থিতিটা বা মার্কেটের ইত্যাদি ইত্যাদি।’

সেনাকল্যাণ সংস্থার পণ্যের ব্র্যান্ড নেইমের তাৎপর্য তুলে ধরে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আপনাদের যে সুযোগটা আছে বাইরের কোন বিজনেস অর্গানাইজেশনের এই সুযোগ নেই। তাঁরা এই সুযোগ পাবে না। আমাদের প্রোডাক্টের একটি ব্র্যান্ড নেইম রয়েছে, সেনা কল্যাণ সংস্থা। একটা সশস্ত্র বাহিনীর একটি সংস্থা।

এই যে মানুষের আস্থার যে একটা ব্র্যান্ড নেইম এটাই কিন্তু কোন বিজনেস এনটিটি সেটা ভোগ করেন এটা মাথায় রাখতে হবে। সেটা কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে আপনি টাকা দিয়ে মূল্যায়ন করতে পারবেন না।’

কালের আলো/এসআর/এএমএ