কেন শাহীনকে নন বাবুকেই চান বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা?

প্রকাশিতঃ 10:00 am | April 16, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:

ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন স্থানীয় উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সফটওয়্যার প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দখলে থাকা আসনটি বাবু’র কাঁধে ভর করেই পুনরুদ্ধার করতে চায় দলটির নেতা-কর্মীরা।

তবে এ আসনটিতে বিএনপি’র অন্তর্কোন্দল মারাত্নক আকার নিয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু দীর্ঘ সময় ধরে ভোটারদের মধ্যে কাজ করে গেলেও বাঁধ সেধেছেন দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নুরুল কবির শাহীন।

ক্ষমতাসীন দলের কারো কারো সঙ্গে তার ‘দহরম’ অবস্থা, এমন গুঞ্জণ সর্বত্রই। বিষয়টি বিএনপি’র রাজনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনার শামিল বলে মনে করেন দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

শাহীনের এমন স্ট্যান্ডের বিপরীতে এ আসনে নিজ দল বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে কোমর বেঁধে মাঠে রয়েছেন উচ্চ শিক্ষিত ও আধুনিক মননের রাজনীতিক লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। স্বার্থত্যাগী হয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় জনসাধারণের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছেন। দিনের পর দিন তার এমন নি:স্বার্থ সেবার মনোভাব ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনের ভোটারদের মনে তার জায়গা নিশ্চিত করেছে।

তবে দলের একটি অংশের নেতা-কর্মীদের দাবি, এ আসনে অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নুরুল কবির শাহীনেরও জনপ্রিয়তা রয়েছে। এমপি থাকাকালীন তিনি অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন।

অবশ্য এমনটি মানতে নারাজ দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত উপজেলা নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শাহ নুরুল কবির শাহীনের বিরোধিতার কারণে দলীয় প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন।

তাঁর প্রকাশ্য বিরোধিতার পরেও বিগত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি থেকে সাবেক ছাত্রনেতা আমীরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মনি বর্তমানে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু’র বলয়ে রাজনীতি করছেন। দলীয় সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদসহ দলটির ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীরা মাজেদ বাবু’র সঙ্গেই গাঁটছড়া বেঁধে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিএনপি’র তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, উপজেলায় শাহীনের অবস্থান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ক্ষমতায় থেকে জনকল্যাণের রাজনীতির বদলে ব্যক্তিস্বার্থকেই গুরুত্ব দিয়ে রকেট গতিতে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে নেয়া, দলীয় নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করে মর্জি মাফিক দল ও এলাকা চালানোসহ নানা কারণে এবার তার অবস্থান একেবারেই নড়েবড়ে হয়ে উঠেছে।

এরপরেও পুনরায় কেন্দ্র তাকে মনোনয়ন দিলে আসন হাতছাড়া হবার সম্ভাবনা প্রবল। তাঁর বিপরীতে দৃঢ় আত্নপ্রত্যয়ী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবুকে ঘিরে স্থানীয় জনসাধারণ তো বটেই দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। তাকে মনোনয়ন দেয়া হলে আসনটিতে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না বলে মনে করেন অনেকেই।

বিএনপি থেকে এ আসনে অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদল সভাপতি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুজ্জামান লিটন, উপজেলা বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আওরঙ্গবেজ বেলাল।