‘রিমার্কেবল’ একাদশ সংসদ নির্বাচনের সুখস্মৃতিতে ‘নষ্টালজিক’ সচিব হেলালুদ্দীন

প্রকাশিতঃ 2:47 pm | December 10, 2019

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

সুখস্মৃতি না কী ভুলা যায় না। উজ্জ্বল সুখস্মৃতি রোমন্থনের আনন্দও অতুলনীয় বটে! একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গটি সামনে আনতেই উপলব্ধির গভীরতায় নিজেকে সমর্পণ করেন। কর্তব্যপরায়ণ, উদার ও সহনশীলতার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যে মেলে ধরেন।

আরও পড়ুন: অভূতপূর্ব উন্নয়নের গর্বিত অংশীদার হতে চায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়

আর ধরবেনই বা না কেন? প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি সময় তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিবের। একটি রাজনৈতিক দলের অধীনে থেকেও সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার চ্যালেঞ্জ উতরে গণতন্ত্রকে যেমন ‘অপরাজেয়’ রাখতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।

তেমনি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি অবিচল থেকে মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করার পথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন অনেক দূর। ফলে বাস্তবিক অর্থেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘রিমার্কেবল’ মনে করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচন ভেরি মাচ রিমার্কবেল’। একটি পলিটিক্যাল গভর্নমেন্টের অধীনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এটি দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।’

সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কক্ষে কালের আলো.কম’র সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সেই সময়কার এ সচিব। মূলত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

নিজের সময়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, গাজীপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে নিজের বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কিশোরগঞ্জে সহকারী কমিশনার হিসেবে শুরু হয়েছিল যে কর্মজীবন এখন সেটি গিয়ে ঠেকেছে ৩১ বছরে। মহাকালের হিসেবে খুব বেশি সময় না হলেও মানুষ হিসেবে স্বল্পদৈর্ঘ্য জীবনে সময়টা নেহায়েত কম নয়।

টাইম মেশিনে চড়ে বর্ণাঢ্য চাকরি জীবনের এ প্রান্তে এসে হয়তো আনমনেই ফিরে যেতে চান উষালগ্নের সোনালী সেই মুহুর্তে। আমলা জীবনের পরিক্কতায় উজ্জ্বল ও ধারাবাহিক সাফল্যে নিজের সহকর্মীদের কাছে হয়ে উঠেছেন হেলালুদ্দীন আহমদ হয়ে উঠেছেন ‘মি.ডিপেন্ডবল’।

‘স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রতিটি নির্বাচনই কোন না কোন রাজনৈতিক দল বর্জন করেছে। এসব নির্বাচন হয়েছে মিলিটারি গভর্নমেন্ট বা কেয়ারটেকার সরকারের সময়ে।

একমাত্র দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই বড়-ছোট মিলিয়ে ৩৯ টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছে। কেউ নির্বাচন বর্জন বা বয়কট করেনি। এ কারণেই এ সংসদ নির্বাচন গণতন্ত্রের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।’ কালের আলো’র প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বিস্তারিতভাবেই বলছিলেন পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সন্তান হিসেবে প্রথম সচিব হওয়ার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করা হেলালুদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকেই মনে করেছিল রাজনৈতিক দলের অধীনে নির্বাচন করা যাবে না। ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন আওয়ামী লীগসহ বেশিরভাগ বিরোধী রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিল। ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৭৮টি আসনেই একটি রাজনৈতিক দল জয়লাভ করেছিল।

ফলে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের বর্জনের ফলে মাত্র চার কার্যদিবসে সংসদ বসার পর তা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সেই সংসদেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস হয়। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচন সংবিধান সংরক্ষিত করার পাশাপাশি গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।’

কালের আলো/এডিবি/এমএএএমকে