আইসিজে’র সঙ্গে সেনাপ্রধানের মিয়ানমার সফরের কোন সম্পর্ক নেই কেন?

প্রকাশিতঃ 8:02 am | December 12, 2019

বিশেষ সংবাদদতা, কালের আলো :

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে দীর্ঘায়িত সমস্যা প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতেই নিষ্পত্তির কথা বারবার বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন: চার দিনের সরকারি সফরে মিয়ানমার যাচ্ছেন সেনাপ্রধান, আলোচনা হবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও

জাতিসংঘে চারদফা প্রস্তাব যেমন দিয়েছেন তেমনি মঙ্গলবারও (১০ ডিসেম্বর) মানবাধিকার দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘কোন সংঘাত নয়, আলোচনার ভিত্তিতেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায় বাংলাদেশ।’

রাজনৈতিকভাবে চলমান রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমেও সম্পর্ক দৃঢ় করার বিশেষ কৌশল নিয়েছে সরকার।

মিয়ানমার সরকারে সেনাবাহিনীর প্রভাব অপরিসীম হওয়ায় তাদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার এ পথটিকে কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা থেকেই নির্ধারিত সময়ে মিয়ানমার সফরে গেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

আরও পড়ুন: আন্তরিক’ চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, মিয়ানমারের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নতি করতে চান সেনাপ্রধান (ভিডিও)

সপ্তাহ দুয়েক আগে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমদের নির্ধারিত মিয়ানমার সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ঢাকা ও নেপিডোর মধ্যে সমঝোতার অন্য কোনো পন্থা খুলে যাবে।’

আবার রাখাইনে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অভিযানকে ‘গণহত্যা’ উল্লেখ করে চলতি বছরের নভেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশন্যাল কোর্ট অব জাস্টিস’এ (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তিন দিনব্যাপী গণশুনানি শুরু হয়েছে।

আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিষয়টিকে বাংলাদেশের পক্ষে বড় কুটনৈতিক সাফল্য হিসেবেও দেখছেন বিশ্লেষকরা। বিচারিক কার্যক্রমে বাংলাদেশ নেপথ্যে সহযোগিতা করছে বলে ইতোমধ্যেই জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মিয়ানমান সফরে মন্তব্য লিখছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ

সরকারের কুটনৈতিক তৎপরতায় ‘মিলিটারি টু মিলিটারি’ রিলেশনকে বাঁকা চোখে দেখছেন দেশের বিশিষ্ট ২২ নাগরিক। তাঁরা বলেছেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে তোষামোদ করার এ নীতি জাতির জন্য লজ্জার, অমানবিক ও মর্যাদাহানিকর।’

যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রের কূটনৈতিক স্বার্থেই সামরিক মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে সরকারের কৌশলী এ উদ্যোগ সংকট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। অতীতের সব রকমের চেষ্টা থেকেই ঢাকা দেখেছে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি সেই দেশের সেনাবাহিনীর আওতার মধ্যে পড়ে।

ফলে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা না হলে সংকট উত্তরণের উদ্যোগ কার্যত ভেস্তে যেতে পারে। ফলে দুই দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক দু’টি দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে আস্থা ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলে সরকারের কৌশলী এ সিদ্ধান্তকে দেশের জন্য বড় কলঙ্কজনক ও অবমাননাকর ভাবার কোন কারণ নেই।

কেন মিয়ানমার সফর গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়েও একাধিকবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এমনকি সফরের মাত্র ক’দিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষেও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

বরাবরই সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘আমাদের সরকার সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। মিয়ানমারের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ককে কীভাবে আরও উন্নতি করা যায় সেই লক্ষেই মিয়ানমার সফর।’

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল জেনারেল আজিজ আহমেদকে গার্ড অব অনার প্রদান করছে

পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন, দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গেই ‘মোড়ল’ চীনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানায় বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর এ রাষ্ট্রটি।

চীনের আন্তরিক এ মনোভাবকে টেকসই রূপ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সম্প্রতি চীন সফর করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ দায়িত্বশীলরা তার সঙ্গে একমত হয়েছেন। ফলে চীন সফরের এক মাসের মাথায় চারদিনের সরকারি সফরে মিয়ানমার গেছেন সেনাপ্রধান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেনাপ্রধানের প্রতিটি সরকারি সফর নির্ধারণের পরিকল্পনা করা হয় করা হয় ৬ থেকে ৮ মাস আগে। বিশ্বের প্রতিটি সেনাবাহিনীই বিশেষভাবে প্রতিবেশী সেনাবাহিনীর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে এবং বজায় রাখে।

আন্তর্জাতিকভাবেই এ অনুশীলন রয়েছে। কাজেই ‘ইন্টারন্যাশন্যাল কোর্ট অব জাস্টিস’এ (আইসিজে) দায়ের করা মামলার সঙ্গে এই সফরের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই মনে করছে দায়িত্বশীল সূত্রটি।

বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদানের মুহুর্ত

কী কথা হলো দুই সেনাবাহিনী প্রধানের?
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্যতম বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠেছিল রোহিঙ্গা ইস্যু। বাংলাদেশ বরাবরই প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো রাখতে চেয়েছে।

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের চারদিনের মিয়ানমার সফর দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কে উষ্ণতা এনেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই আরব নিউজসহ বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ উপমায় ভূষিত করেছে।

সূত্র মতে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান ও সেনাবাহিনী প্রধান ভাইস সিনিয়র জেনারেল সো উইনর সাথে বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

গত সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিডোয় অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকে সেনাপ্রধান রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতার বিষয়টিও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উপস্থাপন করেছেন।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উন্নতি করতে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রসঙ্গটি নিয়ে বিস্তর আলোচনার পাশাপাশি দু’টি দেশের সীমান্ত এলাকায় যে কোনো উদ্ভুত পরিস্থিতি এড়াতে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সব রকমের ভুল বোঝাবুঝি অবসানের বিষয়েও ঐক্যমতে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

মিয়ানমারের প্রথম সারির গণমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের মিয়ানমার সফরের সংবাদ

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এ বৈঠকে মিয়ানমার বিমান বাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধানসহ তিন বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে জেনারেল আজিজ আহমেদ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা মিয়ানমারের লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য কেমন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এ বিষয়টি যুক্তি দিয়েই উপস্থাপন করেন।

রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেই নিরাপত্তার এ হুমকি মোকাবেলা সম্ভব বলেও তিনি তাদের জানিয়েছেন।  

একই সঙ্গে দুই দফা চেষ্টা করেও রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে না পারা এবং সংকট এড়াতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আন্তরিক ভূমিকার বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান।

একই সূত্র জানিয়েছে, দুই দেশের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ে এমন বৈঠক দুই দেশের সেনাবাহিনীর পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ নিজেও দুই দেশের সেনাবাহিনী মধ্যে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ও সৌজন্যমূলক পরিদর্শন বাড়াতেও মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এ বিষয়েও দুই দেশের সেনাবাহিনী মতৈক্যে পৌঁছেছেন।

মিয়ানমারের লিডিং গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন

চার মাস আগে থাইল্যান্ডে ইন্দোপ্রশান্ত সেনাপ্রধান সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের কোন সীমান্ত বিরোধ নেই।

ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার স্থল ও সমুদ্রসীমা রয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে রয়েছে ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত।

সূত্র মতে, মিয়ানমার সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকেও দু’টি দেশের সীমান্ত নিয়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সীমান্ত সড়ক নির্মাণে বাংলাদেশের পরিকল্পনার কথা জানান।

এ সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিজিপি এ কাজে বাংলাদেশকে সব রকমের সহযোগিতার নিশ্চয়তা দিয়েছে।

একই সঙ্গে মিয়ানমারের ভেতরে মাদক কারখানা থেকে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশের বিষয়টি তুলে ধরলে মাদক পাচার বন্ধেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

একই সূত্রের ভাষ্যমতে, মিয়ানমার সামরিক হেলিকপ্টার ও ড্রোনের মাধ্যমে বাংলাদেশের আকাশ সীমা লঙ্ঘনের বিষয়টিও আলোচিত হয় বৈঠকে। বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থলমাইন এবং আইইডির (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইজ) বিষয়টি সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তুলে ধরেন।

আরব নিউজসহ বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সেনাপ্রধানের এ সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলেছে

উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেন সেন্টমার্টিন দ্বীপে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ড্রোন পাঠানোর বিষয়টি। এসব ব্যাপারেও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তরফ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস মিলেছে। বৈঠকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অনুরোধে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পরিচালিত অপারেশনেরও ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

যে সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন দুই সেনাপ্রধান
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আন্তরিক ভূমিকা প্রত্যাশা করেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তাঁর আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান মিন আং হ্লাইয়াংয় সংকট নিরসনে একটি প্রস্তাবও দিয়েছে।

শিগগির বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, এশিয়ান হিউম্যানিটারিয়ান ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম এবং রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিকে রাখাইনের সেটেলমেন্ট এলাকা (নিষ্পত্তি অঞ্চল) পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানের অশেষ গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় যে কোন পরিস্থিতি এড়াতে নিজেদের মধ্যকার নিবিড় যোগাযোগের বিষয়টি উচ্চারিত হয়।

শক্ত যোগাযোগের মাধ্যমেই দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মাঝে ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটবে বলেও ঐক্যমতে পৌঁছেন দু’টি দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা।

সেনাপ্রধানের মিয়ানমার সফর দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কে উষ্ণতা এনেছে। পাশাপাশি উড়েছে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের পতাকা। বিরল সম্মানের অনন্য দৃষ্টান্ত

কালের আলোকে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, সীমান্তে উদ্ভুত পরিস্থিতির বিষয়টি সামনে আসতেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী কেন সীমান্ত এলাকায় সৈন্য সমাবেশ ঘটায় এ বিষয়টি খোলাসা করা হয়।

এ সময় মিয়ানমার সেনা কর্মকর্তারা বলেন, তাঁরা কেবলমাত্র কাউন্টার ইনসার্জেন্সি অপারেশনের জন্যই সীমান্ত এলাকায় তাদের সৈন্য সমাবেশ ঘটায়। তারা কখনও দুই দেশের সীমানা না পেরুনোর বিষয়ে শক্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশকে।

একই সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এ অপারেশন পরিচালনার সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতাও চেয়েছে। কারণ এ অভিযান পরিচালনার সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিজেদের ভূখন্ডে থেকে সীমান্ত এলাকায় তাদেরকে সহায়তা করলে কোন সন্ত্রাসী গ্রুপ বাংলাদেশের মাটিতে আশ্রয় নিতে পারবে না।

সূত্র মতে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ মহলের এমন প্রস্তাবনার বিষয়টি হাসিমুখেই গ্রহণ করে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বাংলাদেশের মাটি প্রতিবেশী কোন দেশের সন্ত্রাসী গ্রুপের ব্যবহার করতে না দেওয়ার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিষয়টি জানিয়ে দেন।

তুলে ধরেন সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অব্যাহত এবং নৈমিত্তিক অপারেশনের বিষয়টি।

কালের আলো/আরআই/এমএএএমকে