আরও ৬ টি হেলিকপ্টার কিনছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ট্রেনিং স্কুল লালমনিরহাটে
প্রকাশিতঃ 6:12 pm | December 12, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিমান বহরে নতুনভাবে ৪ টি ডায়মন্ড ডিএ৪০এনজি প্রশিক্ষণ বিমান সংযোজিত হয়েছে। এর ফলে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের সক্ষমতা ক্রমশ বাড়ছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি কাসা বিমান কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে।
আরও পড়ুন: আইসিজে’র সঙ্গে সেনাপ্রধানের মিয়ানমার সফরের কোন সম্পর্ক নেই কেন?
ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে আরও ৬ টি হেলিকপ্টারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও সরকারকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিমান বহরে আরও ৪ টি ডায়মন্ড ডিএ৪০এনজি প্রশিক্ষণ বিমান সংযোজিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১২ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি এভিয়েশন আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব সুসংবাদ দেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অগ্রগতি : সার্বিক আলোচনা তুলে ধরলেন সেনাপ্রধান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘ভিশন ২০৩০’ প্রণয়নের বিষয়টি উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, আমাদের সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন হচ্ছে। বিশেষ ৪ টি ডায়মন্ড ডিএ৪০এনজি প্রশিক্ষণ বিমান ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়ন করতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের সক্ষমতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকারও ঘোষণা দেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের এভিয়েশন গ্রুপে আধুনিক হেলিকপ্টার ও অন্যান্য যে প্রশিক্ষণ বিমান সংযোজিত হয়েছে ভবিষ্যতে আরও হবে। ভবিষ্যতে আমাদের অ্যাটাক হেলিকপ্টার কেনারও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’
ঢাকার আকাশে ব্যস্ততার বিষয়টি তুলে ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের ট্রেনিং সেন্টার স্কুল লালমনিরহাটে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান সেনাবাহিনী প্রধান। তিনি বলেন, ‘ঢাকার আকাশ কমার্শিয়াল এয়ারলাইন্সগুলো ব্যবহার করে।
এ আকাশ সিভিল এভিয়েশনের ট্রেনিংয়ে এয়ারক্রাফটগুলো ব্যবহার করে। এয়ারফোর্স এবং পাশাপাশি আমাদের আর্মি এভিয়েশন গ্রুপও ব্যবহার করে।’

লালমনিরহাটে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের ট্রেনিং সেন্টার স্কুল স্থাপনের বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের প্রশিক্ষণের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
এবং প্রশিক্ষণের জন্য ডেডিকেটেড স্থান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যেখানে ফ্রি এয়ার স্পেস পাওয়া যায়। এ চিন্তা থেকেই লালমনিরহাটে আমাদের আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের স্কুল প্রতিষ্ঠা করার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল শামসুল হক, চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিকুর রহমানসহ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীসহ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য বিভিন্ন বেসামরিক প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ ১৯৭৮ সাল থেকে তেজগাঁও পুরাতন বিমান বন্দর এলাকা হতে কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। বর্তমানে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের বিমান বহরে রয়েছে সেসনা-১৫২ এ্যারোব্যাট, সেসনা গ্রান্ড ক্যারাভান সিই-২০৮বি বিমান, বেল-২০৬ এল ৪ হেলিকপ্টার, ইউরোকপ্টার ডফিন এএস ৩৬৫ এন৩+, এমআই ১৭১ এস এইচ হেলিকপ্টার এবং কাসা সি-২৯৫ ডব্লিউ বিমান।
তারা আরও জানায়, শান্তিকালীন সময়ে আর্মি এভিয়েশন সেনা বৈমানিকদের প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন অনুশীলন ও মহড়ায় অংশগ্রহণ, জরুরী চিকিৎসার জন্য রোগী স্থানান্তর, সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস দমন ও প্রশাসনিক কর্মকান্ডে জরুরি প্রয়োজনে সহযোগিতা প্রদান করে থাকে।
এসব কর্মকান্ডের পাশাপাশি যুদ্ধকালীন সময়ের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ ও ফায়ার সহায়তা প্রদান, বিশেষ বিশেষ জায়গায় ভূমির স্বরূপ পর্যবেক্ষণ, আকাশ পর্যবেক্ষক হিসেবে গোলা নিয়ন্ত্রণ, জরুরী রিইনফোর্সমেন্ট সহায়তা, কমান্ডো অপারেশনে সহায়তা, জরুরী রশদ সরবরাহ ও যুদ্ধক্ষেত্রে রোগী স্থানান্তরসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধকালীন দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা প্রতিনিয়ত অনুশীলনের মাধ্যমে রপ্ত করে থাকে।

কালের আলো/আরআই/এমএএএমকে