বিজিবি ডিজির উপহার : বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ প্রতিকৃতিতে হাস্যোজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 8:30 am | December 20, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

শিল্পীত রং-রেখার ছবি নয় মোটেও। ইতিহাসের মহানায়কের ইস্পাত কঠিন অভিব্যক্তিই আলো ছড়াচ্ছে প্রতিকৃতিটিতে। বাংলার স্বাধীনতার মহান স্থপতি যেন তাকিয়ে আছেন অবারিত দূর সমুদ্র পানে। চোখজোড়ায় যেন আধুনিক সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন। বাঙালির প্রাণপ্রিয় মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অসাধারণ এমন এক প্রতিকৃতিতে।

বিখ্যাত একজন ভাস্কর্য শিল্পীর সৃজনে এভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে বাঙালি জাতির এ অবিসংবাদিত নেতাকে। শুধু কী তাই? স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে বাঙালি জাতিকে উন্নত করার স্বপ্ন টুঁটি চেপে ধরা হয়েছিল।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন পূরণের পথে আগুয়ান সতের কোটির বাংলাদেশ। উদ্দীপ্ত বীরত্ব ও ঐতিহ্যের গৌরবমন্ডিত এক সুশৃঙ্খল আধা-সামরিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

ফলে বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করে শ্রদ্ধা-ভালবাসার এমনই এক ভাস্কর্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো: সাফিনুল ইসলাম।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরে বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক অভিব্যক্তির এমন ভাস্কর্য উপহার দিয়েছেন তিনি। ভাস্কর্যটিকে পাশে রেখে আলোকচিত্রীর ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন হাস্যোজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় সেখানে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো.সাফিনুল ইসলাম।

৫২ বছর বয়সী মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলামকে গত বছরের ২০ মার্চ বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেয় সরকার। সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা এর আগে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

জয়পুরহাটের এ কৃতি সন্তান বিশ্বাস করেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রয়ে গেছেন অফুরান প্রেরণার উৎস হয়ে। বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখানো ও তা বাস্তবে রূপদানের দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা অমর হয়ে রয়েছেন।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বর্তমান বিজিবির অবিস্মরণীয় বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা স্মরণীয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিরা ঢাকার পিলখানাস্থ তৎকালীন ইপিআর সদর দপ্তর আক্রমণ করলে এই বাহিনী সদর দপ্তর থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার বার্তা ওয়ারলেস যোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া হয়। ফলে পাকিদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এদেশের সৈনিক-জনতা।

১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর পিলখানার এই মাঠেই বাংলাদেশ রাইফেলসের তৃতীয় ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক নিদের্শনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরে বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেডের সময় ঐতিহাসিক সেই ভাষণটি প্রধানমন্ত্রী ও অতিথিদের ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী ভিভিআইপি রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরসহ বীর উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তন হলে বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশ্যেও দিক নিদের্শনামূলক বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বিজিবি তথা তৎকালীন বিডিআর সদস্যদের আত্মত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬-এ মার্চের প্রথম প্রহরে তৎকালীন ইপিআর-এর বেতারকর্মীরা এই পিলখানা থেকেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা সমগ্র দেশে ওয়্যারলেসযোগে প্রচার করায় ইপিআরের (তৎকালীন) সুবেদার মেজর শওকত আলীকে পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে।’

কালের আলো/এমএইচ/আরআইএ