বিদায় সাহাদাত, কে হচ্ছেন গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী?

প্রকাশিতঃ 11:00 am | December 23, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর গ্রেড-১-এ পদে থাকা বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মো. সাহাদাত হোসেনের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি মাসের ৩১ ডিসেম্বর। সে হিসেবে খালি হতে যাওয়া পদটি পেতে ইতোমধ্যেই তৎপরতা শুরু করেছেন তিন প্রকৌশলী।

ওই তিন প্রকৌশলী হলেন- গণপূর্ত ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম, ড. মইনুল ইসলাম ও মোসলেহ উদ্দিন আহম্মেদ। বর্তমান গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাহাদাত হোসেন দায়িত্ব থাকাকালীন নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ধরা পড়ায় এই অধিদফতরে ক্লিন ইমেজের প্রকৌশলী খুঁজছে সরকার।

বর্তমান সরকারের সময় সব চেয়ে বেশি সমালোচিত গণপূর্ত অধিদফতর। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বালিশকাণ্ড থেকে শুরু করে টেন্ডার বাণিজ্যের মূল হোতা ঠিকাদার জে কে শামীমের উত্থান গণপূর্তে। এসব সমালোচনার মাঝেও আগামী বছরে কে হচ্ছেন গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী তা নিয়ে খোদ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চলছে জল্পনা-কল্পনা। তাদের মতে, চলতি বছরে অধিদফতরটি সব সমালোচনার চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ক্লিন ইমেজে ফিরেছে।

কয়েকজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এবার গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী দায়িত্ব পাওয়ার দৌড়ে যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ রয়েছে। সরকার খোঁজখবর নিয়ে পদোন্নতি দিলে অধিদফতরের সুনাম ফিরবে নিঃসন্দেহে। আর নিয়ম অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে সিনিয়রদের পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের জন্য ২০২০ সাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ বছরে সরকার বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। সরকারের নির্মাণ সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা সবচেয়ে একটি বড় প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত। এজন্য আগামী বছরে কে হচ্ছেন গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী সে ব্যাপারে মন্ত্রণালয় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। সেখান থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, বিধান অনুযায়ী প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার কথা রয়েছে ১৫তম ব্যাচের প্রথম স্থানে থাকা মো.আশরাফুল আলমের। বগুড়ার বাসিন্দা আশরাফুল আলম সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর চাকরিতে যোগদান করেন। বর্তমানে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে রংপুর জোনের দায়িত্বে রয়েছেন। চাকরিতে থাকাকালে নিজ দফতরে বা সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোতে কোনো ধরনের জটিলতা না থাকলে আশরাফুল আলমই পরবর্তী প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দ্বিতীয় স্থানে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (মেট্রোপলিটন জোন) ড. মইনুল ইসলাম। বরিশালের বাসিন্দা মইনুল ইসলামের প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার বিষয়টি ও বেশ জোরেশোরে আলোচনায় এসেছে। ১৫তম ব্যাচের প্রায় সবাই সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর যোগদান করলেও তিনি ১৯৯৬ সালের ১২ আগস্ট যোগদান করেন। চাকরি জীবনে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি তার নিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন এ বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে।

বিসিএস (গণপূর্ত) ক্যাডারের ১৫ ব্যাচের তৃতীয় স্থানে রয়েছেন মোসলেহ উদ্দিন আহম্মেদ। নোয়াখালীর বাসিন্দা মোসলেহ উদ্দিন সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব শুরু করেন। বর্তমানে মোসলেহ উদ্দিন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা-জোন) হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, এখন এ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা, দক্ষতা ও সততার ওপর জোর দেওয়া জরুরি। বেশ কয়েক জনকে নিয়েই কাজ করছে মন্ত্রণালয়। আমরা সম্ভাব্য কয়েক জনের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাব। সেখান থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

কালের আলো/বিআর/এমএম