নাগরিকের পছন্দের স্টাইলে মেয়র আতিক, নিজেই করছেন উচ্ছেদ অভিযান তদারকি! (ভিডিও)

প্রকাশিতঃ 4:05 pm | December 24, 2019

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো :

দূয়ারে নাড়া দিয়েছে ভোট। আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাচনের ভোট। ফলে স্বভাবতই ধরে নেওয়া হয়েছিল গত তিন মাস যাবত বিরতিহীন চলা উচ্ছেদ অভিযানের এবার হয়তো টুঁটি চেপে ধরা হবে।

আরও পড়ুন: বিজয়ের বৈজয়ন্তীর মাসে ‘বিডি ক্লিন’ মডেল, মেয়র আতিক-টিটুর কৃতজ্ঞতা

কিন্তু রাজধানীর নাগরিকদের পছন্দের এ কর্মকান্ড থেকে ডিএনসসিকে বিরত না রেখে উল্টো নিজেও পূর্ণোদ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। উচ্ছেদ অভিযানে আরও গতি এনেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ‘টিমওয়ার্ক’ করে লক্ষ্য অর্জনের সূচনা ঘটিয়েছেন। পথচারীদের হাঁটার জন্য ফুটপাত দখলমুক্ত করছেন।

সড়কের সৌন্দর্য ফিরিয়ে নিরাপদ করতে অবৈধ বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড উচ্ছেদ করছেন। কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সড়ক দখল করে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখার প্রবণতারও রাশ টেনে ধরছেন। সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন। বায়ু দূষণে সচেতন হতে পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ছুটছেন।

আরও পড়ুন: ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযান থেকে সরবে না ডিএনসিসি, ঘোষণা মেয়র আতিকের

দিন-রাত নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করছেন। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে দ্বিধা করছেন না। ভুল শব্দ যেমন প্রয়োগ করেন না তেমনি গণমাধ্যমে কথা বললেও নির্মোহ সত্য উচ্চারণ করেন। প্রধানমন্ত্রী কীভাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে (ডিএনসিসি) সাজাতে তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন, সামনের দিনগুলোতে কী কী কাজ করতে হবে, পাবলিক সচেতনতা কীভাবে বাড়তে পারে, বাদ যাচ্ছে না কিছুই।

আরও পড়ুন: ‘তারুণ্যের পছন্দ’ মেয়র আতিক, মঞ্চে বসালেন সেই অদম্য মাহাফুজুরকে!

এক বছর ছুঁই ছুঁই সময়ের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র নির্বাচিত হয়ে এভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন আতিকুল ইসলাম। তিনি বিশ্বাস করেন যে পথে তিনি হাঁটছেন সেই পথে জনগণকে সন্তুষ্ট রেখে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে রাজধানীর মানুষের কল্যাণেই কাজ করতে পারবেন।

সরেজমিন গুলশান-১ ও ২
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেলের ঘটনাপ্রবাহে চোখ মেলালে দেখা যাবে, ডিএনসিসির মেয়র হিসেবে নিজের কর্মজগতের বিশাল ক্যানভাসকে বর্ণাঢ্য করতে দম ফেলারও ফুরসত পাচ্ছেন না আতিকুল ইসলাম। গুলশান-১ থেকে ২ প্রধান সড়কের মিডিয়ানে অনুমোদনহীন বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দিতে সড়কে সড়কে ছুটেছেন তিনি।

নিজ দায়িত্বে বিলবোর্ড-সাইনবোর্ড সরিয়ে নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আইন মানতে হবে। হতে হবে সচেতন। বিদ্যুত বা বিলবোর্ডের পারমিশন না নিয়েই সড়কের মিডিয়ানে এসব বসানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ৩০ লাখ শহীদের স্মরণে বিডি ক্লিনের চমক, প্রশংসায় মেয়র আতিক

কোন আইনকে তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। সরকার বা দেশের ওপর কোন ক্ষমতাশালী নেই। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বলেছেন। আমি কথা দিচ্ছি, এ সিটিতে কোন অবৈধ বিলবোর্ড থাকতে পারবে না।’

এর আগে সকালে রাজধানীর নিকেতনে সড়ক দখল করে ফেলে রাখা নির্মান সামগ্রীর বিরুদ্ধে ডিএনসিসির মোবাইল কোর্ট পরিদর্শন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় বেশ কয়েকটি ভবনের রাস্তায় রাখা বালু ও ইট জব্ধ করা হয়। এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদেরকেও সতর্ক করা হয়। যেসব বাড়িওয়ালা বা প্রতিষ্ঠান ফুটপাতে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছেন তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কঠোর নির্দেশ প্রদান করেন।

‘ঢাকা শহরের কোনও সড়ক বা ফুটপাতে নির্মাণ সামগ্রী রাখা যাবে না। যদি কেউ রাখে তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে’ জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘শহরে যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে, বাসাবাড়ি হচ্ছে, মেট্রোরেল হচ্ছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকবেই।

কিন্তু যারা কাজগুলো করছেন তাদের অবশ্যই জনগণের দুর্ভোগের কথা মাথায় রাখতে হবে। জনগণের দুর্ভোগ যাতে না হয় সে বিষয়টি অবশ্যই আমাদের সবাইকে মেনটেইন করতে হবে। আমরা আমাদের উন্নয়ন কাজ করবো, কিন্তু জনগণকে তোয়াক্কা করবো না, তা হতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি সিটি করপোরেশনের সব আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের বলেছি, শহরের কোথায় কোথায় নির্মাণ কাজ হচ্ছে তা খুঁজতে। আমরা একটা তালিকা করবো। তারপর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা দেখবো, কারা ঢেকে রেখে কাজ করে কিনা? আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলবো পরিবেশসম্মত উপায়ে কাজ করতে।’

পুরো শহরে একই সময়ে সিটি করপোরেশনের পানি ছিটানো সম্ভব না জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমাদের সিটি করপোরেশনের পক্ষে পুরো শহরে পানি ছিটানো সম্ভব না। আমাদের ১২টি পানি ছিটানোর গাড়ি আছে।

তারা সকাল-বিকাল পানি ছিটাচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত না। আমরা জনগণ ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে বলবো। সবাই যাতে তার বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের সামনে পানি ছিটানো।’ এরপর বায়ুদূষণ মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন করতে কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে কড়া নাড়েন মেয়র। কথা বলেন তাদের সঙ্গে।

সনাতন পদ্ধতিতে ঝাড়ু দেওয়ার পরিবর্তে সুইপ মেশিন দিয়ে জুনের মধ্যে সড়ক ঝাড়ু দেওয়ার কাজ শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জুনের মধ্যে সুইপ মেশিনে সড়ক ঝাড়ু দেওয়া শুরু করবো। আগামী তিন বছরের মধ্যে সব ধরনের সড়কে সুইপ মেশিনে ঝাড়ু দেওয়া শুরু হবে।’

কালের আলো/এসআর/টিএম