‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে মিয়ানমারকেই’
প্রকাশিতঃ 9:01 pm | April 29, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে এসেছে। এ সমস্যা মিয়ানমারেরই সৃষ্ট। তাই মিয়ানমারকেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। রোববার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শোনার পর সাংবাদিকদের এমনটিই বলেছেন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা।
রোববার সকাল সোয়া ৯টার দিকে ৩০ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রুর কোনারপাড়া জিরো পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে তারা দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান করেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন।
রোবাবার বিকেলেই ঢাকার উদ্দেশে বিমানযোগে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। আগামী সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রতিনিধিদলের সদস্যদের গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় মিয়ানমারের উদ্দেশে বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চপর্যায়ের এ প্রতিনিধিদল।
পরে চারটি দলে ভাগ হয়ে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের মুখ থেকে নির্যাতনের বক্তব্য শোনেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
শূন্যরেখা থেকে ফিরে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। শেষে কুতুপালং ডি ব্লকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে এবং তাদের নিরাপদ জীবন দিতে হবে। তবে এ প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্ব হতে হবে।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ও কক্সবাজারে বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দেন চলতি (এপ্রিল) মাসের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর গুস্তাভো মেজা-চুয়াদ্রা।
ব্রিফিংয়ে গুস্তাভো মেজা-চুয়াদ্রা বলেন, “আমরা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখার জন্য এখানে এসেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত, ধর্ষিত, মানসিক আঘাতপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
আমরা এই শরণার্থী সংকট দেখে খুবই উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন জানিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য যাতে কিছু করতে পারি, সে জন্য সেখান থেকেই পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”
কুয়েতের প্রতিনিধি মানসুর আল ওতাইবি বলেন, “আমরা এখান থেকে মিয়ানমারে যাব। এবং সেখান থেকে নিউইয়র্কে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলোচনা করব।”
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি ডেভিড মিশেল কিন্না বলেন, “আমরা এখান থেকে মিয়ানমারে যাব, তাদের কথাও শুনব। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিয়ানমার কীভাবে যুক্ত হতে পারে, সেটি শুনব। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আমরা নিরাপত্তা পরিষদে সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা করব এবং রোহিঙ্গাদের উপকারে আসে, সে রকম সিদ্ধান্ত নেব।”
এর আগে, গত শনিবার বিকেলে কুয়েত থেকে বিমানে সরাসরি কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছায় ৩০ সদস্যের এই প্রতিনিধিদল।
কালের আলো/এমএসএ